ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৬/০১/২০২৩ ৯:১৭ এএম

সাধারণত চৈত্রের শেষ কিংবা বৈশাখের শুরুতে হাটবাজারে কাঁচা আমের দেখা মেলে। তবে এবার মাঘের শুরুতেই কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে। অসময়ের এই ফল বাজারে আসায় বিক্রি হচ্ছে বেশ চড়া দামে। প্রতি কেজি আমের দাম ৩০০ টাকা।

টেকনাফ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিউল আলম কুতুবী প্রথম আলোকে বলেন, চৈত্রের শেষ কিংবা গ্রীষ্মের শুরুতে কাঁচা আম বাজারে আসে। তবে মাঘ মাসেই টেকনাফের হাটবাজারে কাঁচা আম এসেছে। অসময়ে ফলের বিষয়টি চাষিদের উৎসাহিত করছে। এ ছাড়া আবহাওয়ার কারণে আগাম আম বাজারে আসছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলার টেকনাফ সদরের লেঙ্গুঁববিল, হাতিয়ারঘোনা, মিঠাপানির ছড়া, নতুন পল্লানপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ উত্তরপাড়া, বাহারছড়ার নোয়াখালীয়াপাড়া, কচ্ছপিয়া, বাইন্যাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার কিছু আম গাছে কয়েক বছর ধরে আমের আগাম ফলন হচ্ছে। বিভিন্ন সময় এসব গাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

মঙ্গলবার রাতে টেকনাফের বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, সড়কের পাশে ফুটপাতে বসে কাঁচা আম বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসান ও মোহাম্মদ শাহ জাহান। তাঁরা দুজনই কাঁচা আমের পাশাপাশি মিষ্টি বরই, টক বরই, মিষ্টি আলু ও ভুট্টা রেখেছেন। দাম বেশি হওয়ায় কেউ কেউ দুটি-তিনটি করে কিনছেন। আবার অনেকে দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন।

বিক্রেতা মোহাম্মদ হাসান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগাম যেকোনো ধরনের ফল কিনে এনে বাজারে বিক্রি করেন তিনি। এবার কাঁচা আম প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। মৌসুমের প্রথম নতুন ফল হিসেবে এগুলোর বেশ চাহিদাও আছে।

হাসানের কাছ থেকে আম কিনছিলেন রুবি চাকমা নামে একজন। তিনি বলেন, ‘মাঘ মাসে সাধারণত আম বাজারে আসার কথা নয়। আমার বাড়ি পার্বত্য এলাকায় হলেও এখনো গাছে মুকুলের দেখা মেলেনি। এ অবস্থায় বাজারে কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। তাই দাম একটু বেশি হলেও ৯০০ টাকায় তিন কেজি আম কিনেছি। কিছু বাড়িতে পাঠাব মা-বাবা ও ভাই-বোনদের জন্য।’

মোহাম্মদ হাসান যাঁর কাছ থেকে আম কিনেছিলেন, সেই গাছের মালিক দিলদার মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক বছর আগে মিয়ানমারের মংডু শহরে বেড়াতে গিয়েছিলেন আমার বাবা। সেখান থেকে আসার সময় শতাধিক পাকা আম নিয়ে আসেন। পরে সেখানকার কয়েকজন চাষির সঙ্গে পরামর্শ করে টেকনাফে অর্ধশতাধিক গাছ রোপণ করেন। নিয়মিত পরিচর্যার কয়েক বছরের মধ্যে কিছু গাছ মরে গেলেও কিছু গাছে আম ধরতে শুরু করে। প্রতি বছর মৌসুমের আগে সেপ্টেম্বর মাসের শেষে ও অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে গাছে মুকুল আসে। তবে আমগুলো ছোট আকারের হলেও ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে দিকে খাওয়ার উপযোগী হয়। এর মধ্যে একটি গাছে প্রায় দেড় শ কেজির মতো আম ধরেছিল। সেখান থেকে গতকাল প্রতি কেজি ১৮০ টাকা দরে দুজন ব্যবসায়ীর কাছে ৫৮ কেজি কাঁচা আম বিক্রি করেছি। আরও ১০০ কেজির মতো আম গাছে আছে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম বলেন, চৈত্রের আম পাওয়া যাচ্ছে মাঘ মাসে, এটা সত্য। গবেষণার মাধ্যমে এসব গাছ বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা গেলে চাষিরা লাভবান হবেন। এখানে বারোমাসি আম আছে, বছরে তিনবার ফলন হয়। কিন্তু টেকনাফের গাছগুলোতে তিনবার ফলন হয় না। একবারই ফলন হচ্ছে, তা-ও আগাম।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বাথরুমে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের ঠাঁই হল নার্স মিনারার কোলে

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া ২ দিনের ফুটফুটে নবজাতককে দত্তক নিলেন ...

ঈদগাঁওতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ইউপি নির্বাচনে কারসাজি ও দুর্বৃত্তায়ন সহ্য করা হবেনা

আতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, দীর্ঘ আট বছর পর ...