প্রকাশিত: ০৪/০৬/২০১৮ ৯:৪০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:১০ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
হাবিবুর রহমান (৫০)। ২০০৫ সালে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হারিয়ে যান তিনি। অবশেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর আজ সোমবার বাড়ি ফিরছে হাবিব। তার বড়ি ফেরার খবরে গ্রামের বাড়ি টেকনাফের বাহারছড়া এলাকায় স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে চলছে উল্লাস।

জানা যায়, গত ২৪ মে কিছু লোক হাবিবকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেখে চলে যায়। এরপর হাসপাতাল পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা আপন হোসেন মানিক তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির কাছে দেয়। দীর্ঘ ১০ দিন যাবৎ ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির কর্মকর্তা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর প্রায় সুস্থ হাবিবুর রহমান। কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির কর্মকর্তারা তার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিতে থাকে। সেখানে হাবিবের ছবি দেখে তারই প্রতিবেশী এক যুবতী পরিবারকে খবর দেয়। এরপর তার স্ত্রী নাছিমা খাতুন কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির সাথে যোগাযোগ করে। হাবিবের স্ত্রী তাকে নিয়ে সোমবার সকালে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।

হাবিবের স্ত্রী নাছিমা খাতুন জানান, ১৩ বছর আগে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় বাড়িতে বন্দি করে রাখতাম। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যায়। এরপর পর আর খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পায়নি। কিন্তু এক প্রতিবেশী ফেসবুকে তার ছবি দেখে আমাকে খবর দেয়। পরে আমি তার খোঁজে কক্সবাজার আসি। এরপর কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির লোকজন আমাকে তার কাছে নিয়ে আসে। আমি আজ তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি। খুব ভাল লাগছে। আমরা সবাই খুশি।
তিনি আরও জানান, হাবিবের একটা ছেলে আছে। তার বয়স এখন ১২ বছর। হাবিব যখন হারিয়ে যায় সে তখন খুবই ছোট ছিল। আজ সে তার বাবাকে ফিরে পাবে।

হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ আপন হোসেন মানিক জানান, আমি তাকে অজ্ঞাত হিসেবে পায়। এরপর কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির মাধ্যমে তার চিকিৎসা পরিচালনা করি। সদর হাসপাতালের সার্বিক সহযোগীতায় হাবিবুর রহমান আজ প্রায় সুস্থ। তার স্ত্রী এসে তাকে নিয়ে যাচ্ছে। আমার খুবই ভাল লাগছে ১৩ বছর পর একটা মানুষ তার আপনজনের কাছে ফিরে যাচ্ছে। খবর সিভয়েসের

কক্সবাজার ব্লাড ডোনার’স সোসাইটির কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান নিশাদ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অসংখ্যা রোগী পায়। কিন্তু হাবিব একদম ভিন্ন। কারণ ১৩ বছর ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। আজ তিনি প্রায় সুস্থ। তার গ্রামের বাড়ি বাহারছড়ায় ফিরে যাচ্ছেন। হাবিবকে তার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ইনর্চাজ ডা: নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। বিশেষ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। আসলে একটা মানুষকে ১৩ বছর পর বাড়ি ফিরতে দেখে আমরা নিজেরাও আনন্দিত।

পাঠকের মতামত