প্রকাশিত: ২১/০৮/২০২১ ৬:১৩ পিএম , আপডেট: ২১/০৮/২০২১ ৬:১৭ পিএম

ইমাম খাইর, কক্সবাজার
কক্সবাজার পৌরসভার সড়ক উপসড়কের বেহাল অবস্থা। প্রায় সব সড়কে বড় বড় গর্ত। ভরে গেছে খানাখন্দে। ঘর থেকে বের হলেই পুকুর-ডোবা কিংবা নর্দমার দৃশ্য। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, খালি পায়েও রাস্তা পারাপার দায়। উন্নয়ন কাজের গর্তে পড়ছে গাড়ি। আহত হচ্ছে পথচারী। ভোগান্তির শেষ নেই পৌরবাসীর। এই কাজ কবে শেষ হবে, তাও অজানা। পৌরবাসীর ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ব্যবসায়ী, হকার, সবজি বিক্রেতা ও আবাসিক হোটেল মালিকেরা সড়কের মহাযন্ত্রণায়।
ব্যবসায়ীরা বলছে, কক্সবাজার পৌরসভা ও কউকের সমন্বয়হীনতার খেসারত দিচ্ছে স্থানীয়রা। প্রয়োজনীয় কোনকাজে বের হতে চাইলেও সম্ভব হচ্ছে না। মালামালের গাড়ি ঢুকানো দায়। গাড়ি ভাড়া ও যাতায়াত খরচ বেড়েছে দ্বিগুনের চেয়ে বেশি।
বড়বাজার পৌরসভা মার্কেট আড়ৎ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, সাধারণ জনগণের জন্য সরকার। সড়কের উন্নয়ন করছে, আমরা খুশি। কিন্তু মানুষকে কষ্ট দিয়ে উন্নয়ন নয়। যে স্টাইলে কাজ চলছে তাতে সাধারণ পথচারি ও ক্রেতারা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার। দুর্ভোগ সৃষ্টি করে কাজ করছে, তা মেনে নেয়া যায় না।
যেখানে কাজ করবে সেখানকার বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের বিকল্প ব্যবস্থা আগে করা দরকার ছিল। ড্রেনেজের নামে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগে ফেলে দেয়া হয়েছে। যে চিত্র দেখছি তা মোটেও কাম্য নয়। ইচ্ছাকৃত করছে মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সাবেক সভাপতি ও মুহাম্মদি লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা না করে সড়কে খুঁড়াখুঁড়ির কারণে ক্রেতারা সহজে শহরে ঢুকতে পারছে না। কাজটি অপরিকল্পিত মনে হচ্ছে। শহরের সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন আর শহরমুখি হচ্ছে না। বেশি দাম দিয়ে হলেও অনেকে অনলাইনে কিনে ফেলছে। যার প্রভাব দোকানদারদের পকেটে।
তিনি বলেন, অনলাইন থেকে বই কিনে ক্রেতারা ঠকছে বলেও আমাদের অভিযোগ করেছেন। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে তারা দোকানে আসতে না পেরে এই ভোগান্তি ও প্রতারণার শিকার।
বড় বাজার মসজিদ কমিটির অর্থ সম্পাদক ও পৌর সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী মাওলানা আবদুল গফুর বলেন, প্রধান সড়ক ও উপসড়কের যে দশা তা অভাবনীয়। সড়কের গর্তে জমে থাকা ময়লা পানির কারণে মুসল্লীরা কষ্ট পাচ্ছে। কাজে এমন অবস্থা হবে তা বিস্ময়করও বটে।
তিনি বলেন, গত রোজার ঈদের আগে সড়কের কাজে হাত দিলে আমরা পৌর মেয়রের সাথে যোগাযোগ করি। এ সময় তিনি দ্রুত উন্নয়ন কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন বাস্তব চিত্র উল্টো। রাস্তার উভয় পাশে মাটির স্তুপ করে রাখার কারণে ব্যবসায়ী ও পথচারীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার।
তিনি আরো বলেন, পৌর শহরে এমন একটি সড়ক নেই যেখান দিয়ে নিরাপদে হাঁটাচলা যাবে। ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষুব্ধ।
মনে হচ্ছে, এখানে অভিভাবক নেই। দুর্ভোগ লাঘবে তড়িৎ ব্যবস্থা না করলে আগামী করুন দৃশ্য অপেক্ষা করছে মন্তব্য করেন মাওলানা আবদুল গফুর।
কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের আহবায়ক আলহাজ্ব ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও কাজ শুরু করায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তবে, কাজের ধরণটা মোটেও সন্তোষজনক নয়।
তিনি বলেন, সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। যেটুকুন খালি আছে তাতে অধিকাংশ ভ্রাম্যমাণ দোকান বসে গেছে। চলাচল করা যাচ্ছে না। মালামাল লোডআনলোড করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। বিকল্প সড়ক থাকলে এমন দশা হতো না।
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা এখন বড় দুর্ভোগে আছে। মনে হচ্ছে কক্সবাজারে হিরোশিমার সেই বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করবে। সুন্দর-সমন্বিত পরিকল্পনায় সামনে এগুবে।
এ বিষয়ে জানতে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনও রিসিভ করেন নি।
প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবির জানান, চলমান কাজের জন্য মালামালগুলো এখানে পাওয়া না যাওয়ায় এবং লকডাউন চলমান থাকায় কাজের ধীরগতি হয়ে গেছে। তারপরও দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে শ্রমিকদের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় পরিচয় যাচাইহীন রোহিঙ্গা ভাড়া, বাড়ছে শঙ্কা

মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সেনা জান্তার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ইউনাইটেড নেশন টিম

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইউনাইটেড নেশন ফোরাম বাংলাদেশ স্টাডি প্রোগ্রাম (BSP) এর ...

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্ম ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ...