

বাংলাদেশে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন ঠেকাতে সরকার কক্সবাজারে গঠন করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয় মাদক চক্র ভেঙে দিতে ইতোমধ্যেই এই টাস্কফোর্স কার্যক্রম শুরু করেছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই বড় সাফল্য পেয়েছে।
চলতি বছরের ১৪ জুলাই কক্সবাজার বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে ২০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজার এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য টাস্কফোর্স’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের উপপরিচালক সোমেন মণ্ডলকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, মিয়ানমার থেকে নিয়মিত ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ নানা মাদক কক্সবাজারে প্রবেশ করছে। পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চল, সড়ক, রেল ও সমুদ্রপথের কারণে এই জেলা দীর্ঘদিন ধরেই চোরাচালানকারীদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
টাস্কফোর্স তিনটি কৌশলে কাজ করছে—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত অভিযান জোরদার, সমাজে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাদক মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিতকরণ।
টাস্কফোর্স সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জুলাই থেকে চলতি সময়ে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে ২১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৩ পিস ইয়াবা, প্রায় দেড় হাজার লিটার দেশি মদ, ৩৮ কেজি গাঁজা, ৭৩৫ ক্যান বিয়ার ও আড়াই কেজির বেশি ক্রিস্টাল মেথ। একই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে ৩৪৭ জন মাদক ব্যবসায়ী।
টাস্কফোর্সের মতে, কেবল আইন প্রয়োগ নয়, সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় নেতা, জনপ্রতিনিধি ও তরুণদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকেও প্রচারণায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বিশ্বাস করছেন, কক্সবাজার হয়ে গড়ে ওঠা মাদক নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে পারলে সারা দেশেই মাদক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসবে।
পাঠকের মতামত