প্রকাশিত: ০৬/০৩/২০১৮ ৭:৩৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:৪৭ এএম

নিউজ ডেস্ক::
মাহমুদুল হক। বয়স ৫১ বছর। কক্সবাজার মেরিন প্লাজা হোটেলের মালিক তিনি। এ পরিচয়ের বাইরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় তিনি পাইকারি ইয়াবা ব্যবসায়ী। কক্সবাজার থেকে বিমানে করে চালান এনে ঢাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন। এজন্য আইনজীবী, কথিত সাংবাদিক আর জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ধরা পড়ার পর তার হোটেল ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসার রূপ বেরিয়ে আসে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রোববার রাতে টানা ছয় ঘণ্টার ঝটিকা অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মাহমুদুল হকসহ সাতজনকে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় সাড়ে ২৮ হাজার পিস ইয়াবা।

গ্রেফতার অন্য ছয়জনের মধ্যে আশরাফুল আলম ওরফে প্রিন্স আইনজীবী। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনি গাজীপুরে আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত। তবে আড়ালে ইয়াবা ব্যবসার মতো বেআইনি কাজ করে আসছিলেন।

আসাদুজ্জামান বাবুল দৈনিক নওরোজ ও আমার কাগজ নামে দুটি পত্রিকার কথিত সাংবাদিক। আবু হানিফ ওরফে হানিফ মেম্বার ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার একটি ওয়ার্ডের মেম্বার। অন্য তিনজন এনামুল্লাহ, ইকবাল হোসেন ও মো. মুজিব ইয়াবার বাহক।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ডিএনসির খিলগাঁও সার্কেলের পরিদর্শক সুমনুর রহমান বলেন, রোববার রাতে পল্টন এলাকা থেকে প্রথমে টেকনাফের বাসিন্দা এনামুল্লাহকে আটক করা হয়। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে ১৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তিনি ও কক্সবাজারের মেরিন প্লাজা হোটেলের মাহমুদুল হক বিমানে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এসে সেগুনবাগিচায় নিউইয়র্ক হোটেলের ১১১ নম্বর কক্ষে উঠেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই কক্ষে অভিযান চালিয়ে মাহমুদুল হককে আটক করে হোটেল কক্ষে ৯ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।

পরিদর্শক সুমন জানান, হোটেল কক্ষেই পাওয়া যায় সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া আসাদুজ্জামান বাবুলকে। ওই সময় তিনি রাষ্ট্রের বড়কর্তাদের সঙ্গে নিজের পরিচয় থাকার কথা জানিয়ে প্রভাব দেখান। এর পরও তাকে আটক করে ডেমরার কোনাবাড়ীতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে স্টিলের আলমারিতে গোপন বাপ থেকে ২০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। পরে তিনি মাহমুদুল হকের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসার কথা স্বীকার করেন।

আসাদুজ্জামান বাবুলের বিষয়ে জানতে চাইলে ‘আমার কাগজ’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ সমকালকে বলেন, বাবুল চার বছর আগে আমার কাগজে কাজ করেছিল। এরপর সে কোথায় কাজ করে, তা তার জানা নেই। সে হয়তো ভুয়া পরিচয় দিয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ওই রাতেই উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হানিফ মেম্বার, ইকবাল ও অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম প্রিন্সকে আটক করা হয়। ইয়াবা বিক্রির কাজে ব্যবহূত একটি প্রাইভেটকারসহ তাদের কাছ থেকে এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে কমলাপুরের হোটেল সিটি প্যালেসের ৩৭ নম্বর কক্ষে অভিযান চালিয়ে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ টেকনাফের বাসিন্দা মুজিবকে আটক করা হয়। ওই তিনটি অভিযানে শাহবাগ, উত্তরা-পশ্চিম থানা ও মতিঝিল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খোরশিদ আলম সমকালকে বলেন, এ চক্রের মূল হোতা কক্সবাজারের হোটেল মালিক মাহমুদুল হক। টেকনাফ থেকে তিনি বিমানে করে ঢাকায় নিজস্ব বাহক দিয়ে ইয়াবার চালান পাঠান। ঢাকায় অবস্থানকারী গ্রুপটি তার নির্দেশমতো ঢাকার বিভিন্ন ইয়াবা ডিলার ও হোটেলে পৌঁছে দেয়। তাদের সঙ্গে আর কেউ রয়েছে কি-না তা জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সুত্র: সমকাল

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...