প্রকাশিত: ২৮/০৪/২০২২ ১০:০৭ এএম

‘সবাই তো ইফতার দিয়ে বাড়ি পাঠায় দেয়। কিন্তু ডিসি আমাগের ডেকে ইফতার করালো তার অফিসে বসায়ে। আমরা খুব খুশি হইছি। এমন তো কেউ করে না’

ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল বিশ্বাস। দরিদ্র এই মানুষটি এর আগে কোনোদিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে ঢোকেননি। ভালো খাবার তার কাছে স্বপ্নের মতো। কামাল বিশ্বাসকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সেই স্বপ্নের দুনিয়ায় ঘুরিয়ে এনেছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মনিরা বেগম।

শুধু কামাল একাই নন- মইরম, নাসিমাদের মতো দেড় শতাধিক ছিন্নমূল মানুষকে রমজানের ২৫তম দিনে (২৭ এপ্রিল) ইফতার করিয়েছেন ডিসি মনিরা। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে তাদের সঙ্গে বসে ইফতার করেছেন তিনি নিজেও। ইফতারের পর তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেমাই, চিনি, তেল, সাবান পোলাও চালসহ ঈদ আয়োজনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী।

ইফতারে আমন্ত্রিত কামাল বিশ্বাস বলেন, “আমি তো জীবনে এমন করে ইফতার করিনি। এসি রুমে বসে এই প্রথম ইফতার করলাম। আমাদের ডিসি ম্যাডাম খুব ভালো।”

এখানে এসে সদর উপজেলার ভাদড়া গ্রামে ভিক্ষুক মইরম খাতুন বলেন, “সবাই তো ইফতার দিয়ে বাড়ি পাঠায় দেয়। কিন্তু ডিসি আমাগের ডেকে ইফতার করালো তার অফিসে বসায়ে। আমরা খুব খুশি হইছি। এমন তো কেউ করে না। খুব ভালো হয়েছে।”

আরাপপুর এলাকার নাসিমা খাতুন বলেন, “আল্লাহ আমাদের ডিসি ম্যাডামের বাঁচায়ে রাখুক। আমাদের ইফতার করালো। সেমাই-চিনি দিলো, টাকা দিলো। আমাদের দেখে তো মানুষ দূর দূর করে তাড়ায় দেয়। কেউ টাকা দিলেও পাশে বসায়ে ইফতার করানো লোক নেই। আমাদের নিয়ে ইফতার করালো আমাগের বলার কোনো ভাষা নেই। আমরা খুবই খুশি।”

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, “আমরা তো সব সময় পরিচিত মানুষদের সাথে ইফতার করি। কিন্তু তারা তো এমন পরিবেশে কখনো ইফতার করতে পারে না। তাই তাদের সঙ্গে ইফতার করেছি। আমারও খুব ভালো লেগেছে তাদের সঙ্গে ইফতার করতে পেরে। আমার তো ইচ্ছা করে পুরো রমজান তাদের সঙ্গে বসে ইফতার করতে। দোয়া করবেন আগামী দিনে যেন এই মানুষগুলোর পাশে আমরা থাকতে পারি। তাদের সেবা করতে পারি। তাদের সাথে ইফতার করতে পারি।”

এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজীবুল ইসলাম খান, এনডিসি খান মোহাম্মদ আব্দুল্লা আল মামুন প্রমুখ

পাঠকের মতামত