প্রকাশিত: ১৬/০৬/২০১৭ ১০:১৯ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:২৫ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক:
রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে প্রায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ছোট-বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে থাকে। অনেক বছর ধরে সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়া মাটি, গাছপালা দ্রুত পরিষ্কার করে জনগণের যানবাহন যাতায়ত উপযোগী করে আসছেন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এবার দুর্যোগ না বলে মহাপ্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিসহ অন্যান্য স্থানে। এবারও সেনা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে ১৫ সেনা সদস্যের একটি টিম রাঙামাটি শহরের অদূরে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের মানিকছড়ি অংশে পাহাড় ধসে পড়া মাটি ও ঝঞ্জাল সরানোর কাজে। কিন্ত প্রকৃতির নিষ্ঠুর আচরণে উদ্ধার কর্মীদের ওপর পুনঃরায় পাহাড়ের বিপুল মাটি ধসে পড়লে মাটি চাপায় নিহত হন ৫ জন সৈনিক। তারা হচ্ছেন, মেজর মো. মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত, কর্পোরাল আজিজুল হক, সৈনিক মো. শাহীন আলম ও মো. আজিজুর রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দুর্যোগ মোকাবেলায় অকালে করুণ মৃত্যুর শিকার হন এই পাঁচ সেনা। তাদের এই অকাল মৃত্যুতে সেনাবাহিনীসহ সবমহল শোকাহত।
রাঙামাটিসহ দেশব্যাপী নেমেছে শোকের ছায়া। দুর্যোগে নিখোঁজের প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালের দিকে সর্বশেষ সৈনিক আজিজুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ঘটনাস্থ থেকে। অপর চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনার দিন।
রাঙামাটি রিজিয়ন সদর দপ্তরের জি এস ও – ২ মেজর সৈয়দ তানভীর সালেহ জানান, সৈনিক মো. আজিজুর রহমানের মরদেহ নিখোঁজ হওয়ার স্থল থেকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালের দিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ পাঠানো হয়েছে নিজ বাড়ির ঠিকানায়। ঘটনার দিন উদ্ধার করা চার জনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটি সদরের মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্পের সামনে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ধ্বসে পড়া মাটি, গাছ ও ডালপালা অপসারণ করে রাস্তাটি সচল করতে ১৫ জনের একদল সেনা সদস্য উদ্ধার কাজে যান। এতে নেতৃত্বে ছিলেন, মেজর মো. মাহফুজুল হক ও ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত। তারা সবাই রাঙামাটি সদর জোনের অধিনে কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, উদ্ধার কাজ শুরুর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে হঠাৎ পাশের পাহাড় ধ্বসে পড়ে। এতে মাটি চাপায় পড়েন উদ্ধার কাজে কর্মরত সেনা সদস্যরা। দুর্ঘটনার শিকার হন মেজর মো. মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালাম শান্ত, কর্পোরাল আজিজুল হক, সৈনিক মো. শাহীন আলম ও মো. আজিজুর রহমান। দুর্ঘটনার দিন ৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। সর্বশেষ গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে আজিজুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনার দিন ৫ সেনা সদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তির পর ঢাকার সিএমএইচ’এ পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন তারা। তারা হলেন, সৈনিক আজমল (২৮), মোজাম্মেল (৩০), মামুন (২৪), ফিরোজ (২৪) ও সেলিম (২৬)। অন্যরা অক্ষত অবস্থায় সরে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।
রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন হতে পাওয়া তথ্য মতে, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার ইরতা গ্রামের বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মেজর মাহফুজুল হকের জন্ম ১৯৮১ সালের ২১ মার্চ। ২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি ইউনিটে যোগদান করেন তিনি। পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার সিংহেরাকাঠির বাসিন্দা আবদুস সালামের ছেলে ক্যাপ্টেন তানভীর সালাম শান্তর জন্ম ১৯৯০ সালের ৩০ মার্চ। তিনি ইউনিটে যোগদান করেন ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি। কর্পোরাল মো. আজিজুল হকের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ইশ্বরগঞ্জ থানার মগলটুলা তরফপাচাই গ্রামে। তার পিতার নাম মো. আমির উদ্দিন। সৈনিক মো. শাহীন আলমের গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার আদমদিঘি থানার ধনতলা গ্রামে। তার পিতার নাম মো. সরোয়ার হোসেন। সৈনিক মো. আজিজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শ্রীনাথদি বাজিতপুর গ্রামে। তার পিতার নাম খলিল বেপারী।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...