

উখিয়া বনরেঞ্জের আওতাধীন সদর বিটে বনবিভাগের ছত্রছায়ায় প্রতিদিন নিত্যনতুন পদ্ধতিতে বনভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মানে প্রতিযোগিতা চলছে।
কোথাও কোথাও বনভূমি কেটে সমতল করে পাকা দালান থেকে শুরু করে পোলট্রি ফার্ম ও নানা স্থাপনাসহ বনভূমির জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে । এতে বনবিভাগের ভিলেজার হেডম্যানরা বিশাল টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতায় উখিয়া সদর বিটের কক্সবাজার -টেকনাফ সড়কের পাশে জৈনক দুবাই প্রবাসী কালো পলিথিনের বেড়া দিয়ে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। স্থানীয় হেডম্যান ভিলেজার সিন্ডিকেট ম্যানেজ করেই তিনি ভবন নির্মাণ করছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি আরেকটি বড় স্থাপনা নির্মাণ করছেন আলমগীর নামে এক ব্যক্তি। তাছাড়া একই সড়কের পাশে উখিয়া কলেজ সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি স্থাপনা নির্মাণ করছেন নুরুল ইসলাম সওদাগরের ছেলে কালা পুঁতিয়া।
তিনি জানালেন,বন বিভাগকে ম্যানেজ করেই তিনি স্থাপনাটি নির্মাণ করছেন। এখানে টাকা ছাড়া কোন কাজ করা যায় না, হেডম্যান,ভিলেজার সিন্ডিকেট ম্যানেজ করলে ভবন কোন ব্যাপার না। তিনি হেডম্যান ভিলেজারদের সাথে সদর বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানের সখ্য থাকার কথাও বলেন।
এছাড়াও সড়কের কুতুপালং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকার শামসুল আলম এর ছেলে সেলিম নির্মাণ করছেন একটি বিশাল স্থাপনা। তিনিও জানালেন বন বিভাগকে ম্যানেজ করেই তিনি এসব করছেন।
নিউ ফরেষ্ট সংলগ্ন প্রধান সড়কের রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে বন বিভাগের জায়গায় বাইরে উঁচু ওয়াল দিয়ে ভেতরে স্থাপনা নির্মাণের করে ভাড়া দিচ্ছেন ভাঙ্গারী ইলিয়াসের ছোট ভাই খোকন।
এদিকে উখিয়া বনরেঞ্জের আওতাধীন দোছড়ি বনাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখল করে শত শত ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে। অনেকে গাছপালা কেটে বনভূমির জায়গার দখলস্বত্ব বিক্রি করছে। স্থানীয় হেডম্যান ভিলেজাররা মিয়ানমারের অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের শ্রমিক হিসেবে রেখে সংরক্ষিত পাহাড় ও গাছপালা নিধন করছে। এরপর ওই খালি জায়গার দখল একরপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দামে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করছে। স্থানীয় বন বিভাগ রহস্যজনক ভাবে এ ব্যাপারেও নীরব ।
জানা যায়, বনকর্তাদের গুটিকয়েক ভূমিদস্যুদের সাথে আতাত করায় বনজমি দখলের হিড়িক আগের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ। চিহ্নিত এই বনভূমি দখলবাজরা ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিলেও সংশ্লিষ্ট বনকর্তারা তাদের আইন প্রয়োগে রহস্যজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া রেঞ্জের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষক শাহিনুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,এখন আর অফিসিয়ালি কোন হেড়ম্যান , ভিলেজার নেই, যদি কেউ হেডম্যান ভিলেজার পরিচয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বনবিভাগ এর জায়গায় যে স্থাপনা গুলো রয়েছে সেগুলোর উদ্ধারে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পাঠকের মতামত