
উখিয়ার দক্ষিণ থাইংখালী উত্তর জামতলি এলাকায় অবস্থিত হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা (রা.) বালিকা মাদ্রাসা, হিফজখানা ও এতিমখানায় ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ৮ জন খুদে হাফেজা পবিত্র কুরআন সবীনা খতম করেছেন। এ উপলক্ষে আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা ও বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মাওলানা সেলিম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও আইনজীবী এডভোকেট এম এ মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সমাজকর্মী, অভিভাবক ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে খতমে কুরআন দোয়া ও তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী আয়োজনের সূচনা হয়। পরে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন—
“এই খুদে হাফেজারা আমাদের সমাজ ও ধর্মের গর্ব। তারা কুরআনের আলো ছড়িয়ে মানবতার দিশা দেখাবে। মাদ্রাসাটির পরিচালনা পরিষদ ও শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে—এটি সত্যিই প্রশংসনীয়।”
সবীনা খতম সম্পন্নকারী খুদে হাফেজাদের নাম
১. হাফেজা উম্মে আয়মান (মাতা লায়লা বেগম)
২. হাফেজা মুবিনা আক্তার (পিতা মোহাম্মদ ইসহাক)
৩. হাফেজা রাহমা নূরী (পিতা উখিল আহমেদ)
৪. হাফেজা মরিয়ম আক্তার (পিতা মোহাম্মদ কলিম উল্লাহ)
৫. হাফেজা ফাতেমা নূর ছামী (পিতা মোহাম্মদ খলিল)
৬. হাফেজা ফারিহা জান্নাত মারুয়া (পিতা মোহাম্মদ উসমান)
৭. হাফেজা সাইমা আক্তার (পিতা মোহাম্মদ নুরুল আলম)
৮. হাফেজা জান্নাতুল নাঈমা (পিতা ছৈয়দ আলম)
প্রতিষ্ঠান পরিচালক মাওলানা সেলিম বলেন,
“২০২০ সালে নিজস্ব অর্থায়নে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এটি উখিয়ার অন্যতম মানসম্মত নারী হিফজ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ জন হাফেজা তৈরি হচ্ছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”
তিনি আরও জানান,“আমার সহধর্মিণী, যিনি নিজে উচ্চশিক্ষিত ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা, তিনি মেয়েদের হিফজে অসাধারণ অবদান রেখে চলেছেন।”
মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের পাশাপাশি কওমী বিভাগও চালু রয়েছে, যেখানে ছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও উর্দু ভাষার পাঠ দেওয়া হয়। ফলে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞানেও তারা সমৃদ্ধ হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে খুদে হাফেজাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয় এবং পরে এক মনোমুগ্ধকর গাড়িবহর নিয়ে পুরো এলাকায় আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, উচ্ছ্বসিত অভিভাবক, শিক্ষক ও ছাত্রীদের অংশগ্রহণে পুরো অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক অনন্য মিলনমেলা ও ধর্মীয় উৎসবের আবহে।

পাঠকের মতামত