প্রকাশিত: ২৪/০২/২০১৯ ৮:০৬ এএম

বার্তা২৪::
সাগর থেকেই অবৈধভাবে ভারতে ইলিশ পাচারের গুঞ্জন উঠেছে বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের মধ্যে। জেলেদের দাবি, এক শ্রেণীর অসাধু জেলেরা সাগরেই ইলিশ বিক্রি করে দিচ্ছেন ভারতীয় পাইকারদের কাছে। অল্প সময়ে অধিক লাভ পাওয়ায় ভারতে ইলিশ পাচার করছে কিছু জেলেরা।

তবে এ নিয়ে জেলে পল্লীতে চড়ম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত তা সবারই জানা কিন্তু মুখ খুলতে রাজি নন জেলেরা। তবে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ না আসলে জেলেরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার- দাবি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের।

ইলিশে সয়লাব মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাইকারী বাজার। কখনো দাম পরে যাচ্ছে একেবারেই অস্বাভাবিক হারে। আবার কখনো খুচরা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে থাকছে ইলিশ।

পাথরঘাটার বিএফডিসি ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিএফডিসি ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের সহায়তায় পাথরঘাটার প্রায় ২০টি ট্রলার সাগরেই ইলিশ বিক্রি করতো। তবে এ প্রবণতা এখন ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পরেছে। এখন অনেক জেলেই সাগরে মাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

পাথরঘাটার এফ বি নাসিম-২ ট্রলারের কয়েকজন জেলের সাথে কথা বললে তারা প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে কৌশলে জানতে চাইলে কয়েকজন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় পাইকারদের ছড়াছড়ি। অনেক জেলেই মাছ বিক্রি করছেন তাদের কাছে।’

‘একটি ট্রলার ১৭ থেকে ১৮ জন জেলেসহ সাগরে মাছ ধরতে যায়, তবে ট্রলারের তেল খরচ ও খাবার সামগ্রী ও বরফ কিনতে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। আর তারা সাগরেই মাছ বিক্রি করে। তাতে তাদের সেই দুই লাখ টাকা আর বার বার খরচ করতে হয় না। সাগরেই মাছ বিক্রি করে ফের মাছ ধরা শুরু করে।’

কয়েকজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকায় সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্ট, চালনার বয়া, পশ্চিম সুন্দরবন, ফেয়ারওয়েবয়া সহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ট্রলার নিয়ে ভাসমান স্থানে বাংলাদেশি পতাকা উড়িয়ে অবস্থান করে ভারতীয় পাইকাররা।’

তারা জানান, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কালিন্দি, রায় মঙ্গল ও হাড়িয়াভাঙ্গা নদী দিয়ে ভারতীয় পাইকারদের হাতে জেলেরা ইলিশ বিক্রি করে দিচ্ছে। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ আনলে বিক্রির ১০০ টাকায় এক দশমিক ২৫ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। তাই অনেক জেলেরা এমনটি করছে।

এদিকে পাথরঘাটার মাছেরখালে বরফ নিতে আসা মহিপুরের ইকবাল সোবাহানের মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে শহিদুল ইসলাম, হাকিম মাঝি, বাচ্চু ঘরামী, রফিক শিকদার, সফিক শিকদার, কামাল হাওলাদার, রহিম হাওলাদার, হারুন মাঝি, সোলায়মান খানসহ বেশ কয়েকজন জেলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভোলার চরফ্যাশন, হাতিয়া মনপুরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকশ টন ইলিশ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর হয়ে চোরাচালান হচ্ছে ভারত ও মিয়ানমারে।’

তারা আরও জানান, বঙ্গোপসাগরে বিপুল পরিমাণ বড় ইলিশ ধরা পড়লেও জাটকা ও মাঝারি ইলিশ ছাড়া বড় ইলিশ আসছে না ডাঙায়।

এ ব্যাপারে বরগুনা ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী বার্তা২৪.কমকে জানান, জেলেদের মধ্যে এমন গুঞ্জনের বিষয়ে অবগত আছেন তিনি। তবে কেউ যদি এমন কাজ করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ট্রলার মালিক সমিতির সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা লেঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন, ‘ভারতের পাইকার বা জেলে বাংলাদেশের জলসীমায় কখনোই অনুপ্রবেশ করে না। বাংলাদেশের জেলেদের এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে বাংলাদেশের জেলেরা ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করে এবং ভারতীয় সিম কার্ড ব্যবহার করে সেখানে তারা ব্যবসা করে।’

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...