প্রকাশিত: ১৫/০৬/২০১৬ ৭:৪৫ এএম
enuস্টাফ করেসপন্ডেন্ট:

টানা কয়েক বছরের মন্ত্রী। কোন কোন ক্ষেত্রে তার বক্তব্য আওয়ামী লীগের যে কোন মন্ত্রী এমপিকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সব পাল্টে গেল।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ৭৫ পরবর্তী জাসদের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করে যেন তার সুখের ঘরে দুখের আগুন ঢেলে দিলেন।

গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা আশরাফুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরিবেশ তৈরি না করলে দেশ অনেক আগেই উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হত। হাসানুল হক ইনুকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আর সেই দল থেকে একজনকে মন্ত্রী করার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে জাসদ সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছিল।

সভায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ‘হঠকারী দল’ জাসদ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাসদ গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে।

এদিকে কাট গায়ে লবন ছিটিয়ে দিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। সোমবার সকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, সমস্যা হলো আমরা এক সঙ্গে ছাত্রলীগ করেছি, যুদ্ধ করলাম। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু একই বিছানা থেকে উঠে উনি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেন। অস্ত্র ধরার বিনিময়ে কী হলো? আমাদের গুনে গুনে বিশ লাখ মানুষকে হত্যা করলো। আজকে যে দুর্দিন-দুর্দশা, সেদিন যদি জাসদ গণবাহিনী করে নির্বিচারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যা না করতো তাহলে দেশে দুর্দিন আসতো না। বঙ্গবন্ধুর মতো অত বড় জাতীয় নেতাকে আমরা হারাতাম না।

৭৫ পরবর্তী ইতিহাস সামনে আসায় হাসানুল হক ইনু যে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন, তা প্রকাশ পায় তার নিজের বক্তব্যেই। মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- এই মুহূর্তে ঐক্য রক্ষা করা দরকার। ’৭২ থেকে ’৭৫ এর ঘটনা ইতিহাসের পাতায় চলে গেছে। এটি ইতিহাস চর্চার সময় না। ’৭৫-পূর্বাপর ঘটনা বিশ্লেষণ করেই জাসদ, আওয়ামী লীগ ঐক্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিষয়টি মূল্যায়ন করতে গিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক অঞ্জন রায় একটি কলামে লিখেছেন, মনে রাখা দরকার, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশে যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতের সেই শক্তি ছিল না, যে শক্তিতে দেশকে অস্থিতিশীল করা যায়। সেই শক্তি ছিল উগ্র বাম ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের। স্বাধীন দেশে আলবদর বা রাজাকাররা না, অস্থিতিশীলতার মূল কারিগর ছিল জাসদ তথা উগ্র বামেরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হাসানুল হক ইনু মন্তব্য নিয়ে দলের মধ্যে গাত্রদাহ হতে পারে। কারণ তিনি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে এমন ভাষায় কথা বলছেন, যার উত্তর তারা দিতে না পেরে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন বলে হয়তো আশরাফ সাহেব মনে করছেন। এছাড়া আরেকটা কারণ থাকতে পারে- স্বাধীনতার পর জাসদ গঠনের পর তারা বঙ্গবন্ধুকে যে ভাষায় আক্রমণ করত, এখন খালেদা জিয়াকে সেই ভাষায় আক্রমণ করছেন হাসানুল হক ইনু। তার এমন মন্তব্যে আশরাফ সাহেব কোনো ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন মনে হচ্ছে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আপনার মন্ত্রীকে থামান। ঐক্য বিনষ্টকারীকে থামান। আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে, আপনি ঐক্য চান কি চান না।

পাঠকের মতামত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে ...

৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ...

জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে সেনাবাহিনী : সেনাপ্রধান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ...