প্রকাশিত: ০৪/০৮/২০১৬ ১:৩৫ পিএম

149027_1ঢাকা: সৌদিতে শতাধিক বাংলাদেশি তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছেন। ভারতের প্রায় ১০,০০০ শ্রমিক সৌদিতে অনাহারে মৃত্যুর পথে- এমন খবর প্রকাশের কয়েকদিনের মাথায় বাংলাদেশ নিয়ে একই সংবাদ এলো।

সৌদি আরবে আটকা পড়া শ্রমিকদের একজন হলেন ফরিদপুরের মিজানুর রহমান। আঠারো বছর ধরে তিনি সেখানে কাজ করছেন। কিন্তু হঠাৎ করে কাজ হারানোয় এবার তার দিন কাটছে কোনো রকমে একবেলা খেয়ে।

তিনি টেলিফোনে বলেন, ‘এখন একবেলা খানা খাই। তিন বেলার খাবারের জায়গায় দিনের মধ্যে একবেলা খাই। ভারতের কিছু বড় বড় কোম্পানি মূলত ভারতীয়দের সাহায্য করছে, সেখান থেকে আমরাও কিছু কিছু পাই।’

বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশই কাজ করে সৌদি আরবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ক্রমাগত পড়তে থাকায় সৌদিতে বহু কোম্পানিতে কাজ বন্ধ হতে শুরু করেছে গত বছর থেকেই।

সব চেয়ে বেশি শোচনীয় অবস্থা নির্মাণ সংস্থাগুলোর। অনেক প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের হঠাৎ করেই ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেকে মাসের পর মাসে বেতন পাচ্ছেন না, শ্রমিকদের জন্য নির্মিত শিবিরগুলোতে তাদের দিন কাটছে প্রায় অভূক্ত অবস্থায়।

মিজানুর রহমান জানান, যেখানে তিনি কাজ করতেন সেখানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ফিলিপিন্স এবং শ্রীলঙ্কার শ্রমিকরা কাজ করতো। একবছর আগে কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। এরপর থেকে বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়।

গত চারমাস ধরে খাওয়াও বন্ধ করে দেয়া হয় । ইসলামি দাওয়াত সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান রমজান মাসে খাবার দিয়েছিল।

এরপর আরেকটি কোম্পানি কিছু চাল-ডাল দিয়ে যায়। পাকিস্তান এবং ভারতীয় কোম্পানি সাহায্য করেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এখন করুণ অবস্থা কারো কাছে এক টাকাও নাই।’

মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিবেন কিভাবে? দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা এসে দেখেননি আমারা কি অবস্থায় আছি। খেয়ে আছি না না খেয়ে আছি এসে কেউ দেখে নাই। শুধু বলে আসবো আসবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘কারো আকামা নাই। আকামা ছাড়া গেটের বাইরে যাওয়া যায় না। গেটের বাইরে গেলেই পুলিশ আক্রমণ করে। একবার পুলিশ ধরলেই ২০,০০০ টাকা জরিমানা করে।’

তিনি জানান, ‘এখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো মন্ত্রী বা বড় কোনো মানুষ যদি আমাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো একটা কিছু হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে বদলি হয়ে কাজ করতে পারি, তা বদলি হতেও ৭০/৮০ হাজার টাকা লাগে। মানুষ খেতেই পায় না এত টাকা কোথা থেকে দিব?’

আরেকজন বাংলাদেশি শ্রমিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকার আব্দুল করিম জানান, ‘১৪০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিকের এখন এ অবস্থায় আছেন।’

কর্তৃপক্ষ বলছে, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শ্রমিক, যারা সে দেশে বেকার রয়েছেন, তারা যাতে অন্য চাকরিতে ঢুকতে পারেন বা দেশ ত্যাগ করতে পারেন সে লক্ষ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। ভারতীয় শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় আট হাজার বেকার হয়ে পড়েছেন।

তবে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে সেদেশের মন্ত্রী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিং এখন জেদ্দায় রয়েছেন। পাকিস্তানেরও কয়েকশো শ্রমিক এখন সেখানে কর্মহীন।

সূত্র: বিবিসি

পাঠকের মতামত

ট্রাম্পকে ৪শ’ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দিচ্ছে কাতার

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বিলাসবহুল জাম্বো জেট উপহার দিচ্ছে কাতারের রাজপরিবার। জেটটির আনুমানিক ...

ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ...

উত্তেজনা না বাড়ালে ভারতকে জবাব দেবে না পাকিস্তান : রানা সানাউল্লাহ

ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ ...

নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের গো লা ব র্ষ ণ, ১০ ভারতীয় নি হ ত

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাল্টা জবাবে রাতেই ...

পাকিস্তানে ভারতের হামলা, মাঝপথে ফিরে গেল বাংলাদেশগামী দুই প্লেন

পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার মধ্যরাতে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। আকস্মিক এ হামলার কারণে ...