প্রকাশিত: ২০/০৯/২০১৬ ৭:৪৮ এএম

উৎপল দাস ,পূর্বপশ্চিমবিডি :

মেঘনা এভিয়েশনের হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের নেপথ্যে নিহত শাহ আলমের সেলফি তোলা নয়, বরং পাইলট উইং কমান্ডার শফিকুল ইসলামের গাফিলতি ও হেলিকপ্টারটির যান্ত্রিক ক্রুটি দায়ী। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন্স) উইং কমান্ডার চৌধুরী মোহাম্মদ জিয়া-উল-কবির  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত শাহ আলম কোনো সেলফি বা ভিডিও করছিলেন না বলে জানিয়েছেন হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহত ৪ জনের একজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এ কথা জানান।

কক্সবাজারের উখিয়ার রেজু খালের মোহনায় আমেরিকান রবিনসন কোম্পানির আর সিক্স সিক্স টারবাইন মডেলের হেলিকপ্টারটি শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ইনানি নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত হয়। তখন মেঘনা এভিয়েশনের মালিকপক্ষের লোকজন দাবি করেছিল, নিহত শাহ আলম দরজা খুলে সেলফি তুলতে ও ভিডিও করতে গেলে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

দুর্ঘটনায় বিজ্ঞাপনী সংস্থা অগিলভি অ্যান্ড ম্যাথার এর কর্মকর্তা শাহ আলম (৩২) নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন হেলিকপ্টারের পাইলটসহ আরও ৪ জন।

বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন্স) উইং কমান্ডার চৌধুরী মোহাম্মদ জিয়া-উল-কবির আরো বলেন, যে কোনও ফ্লাইটের নির্ধারিত যাত্রী তালিকা সিভিল অ্যাভিয়েশনকে জানাতে হয়। যাত্রী তালিকা যদি শেষ মুহূর্তেও পরিবর্তন হয় তাহলেও সেটি ফ্লাইট পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ আমাদের জানাতে বাধ্য।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি জানানোর নিয়ম হলেও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মেঘনা এভিয়েশন আমাদেরকে দুর্ঘটনার পরে সাকিবের বিষয়টি জানিয়েছে, কিন্তু তাদের উচিত ছিল সাকিবকে নিয়ে উড্ডয়নের আগে অবশ্যই আমাদের জানানো। এই নিয়ম ভাঙার কারণে মেঘনা এভিয়েশনের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হবে।

sak-2মেঘনা এভিয়েশনের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গঠিত সরকারের ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল  মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে। প্রতিবেদনে পাইলটের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কারণে তার সনদ বাতিল করা, নিহত শাহ আলমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং হেলিকপ্টারটির যান্ত্রিক ক্রুটির বিষয়গুলোও উল্লেখ থাকবে।

মেঘনা এভিয়েশনের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ধানক্ষেতে বিধ্বস্ত হয় আরো একটি হেলিকপ্টার। ওই ঘটনায় মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার মেয়ে এবং কোম্পানির পরিচালক তাহমিনা মোস্তফাসহ ৬ জন আহত হন। যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়েই সেদিন হেলিকপ্টারটি উড্ডয়ন করেছিল বলে পরবর্তী তদন্তে প্রকাশ হয়।

এ বিষয়ে মেঘনা এভিয়েশন লিমিটেডের সমন্বয়ক সাইফুল আলম  টেলিফোনে বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সবচেয়ে দক্ষ লোকজনদের দিয়ে তদন্ত করানো হচ্ছে। যদি পাইলট দোষী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তবে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে মেঘনা গ্রুপ চিন্তাভাবনা করছে।

পাঠকের মতামত

ইসলামী মহাসম্মেলন, রোদ ওঠার আগেই লোকে লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী

দাওয়াত ও তাবলীগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দ্বীনের হেফজতের লক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলন করছেন ...

রোহিঙ্গা আনাস ওয়ানএক্স’ বিট’র মাধ্যমে ধব্বংস করছে হাজারো জীবন

উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পসহ সর্বত্র এক ভয়াবহ নেট ওয়ার্কের (অনলাইন জোয়া) ওয়ানএক্স বিটের ছায়াতলে হাজারও ...