প্রকাশিত: ০৯/০৯/২০১৯ ১১:৫২ এএম

বিশেষ প্রতিনিধি::
উখিয়ার কুতুপালং-৪ নম্বর ক্যাম্পের মাঠে আয়োজিত রোহিঙ্গাদের সমাবেশ ঘিরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ওই সমাবেশ আয়োজনের পেছনে কারা জড়িত, কাদের ইন্ধন ও সহায়তা রয়েছে, এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। প্রাথমিকভাবে সমাবেশে এনজিও, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কয়েকজন আইনজীবীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানা যায়।

গত ১ সেপ্টেম্বর উখিয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের সমাবেশের আগে ‘এডিআরএ’ (আদ্রা) নামক একটি এনজিও সংস্থা গত ১৯ ও ২১ আগস্ট কক্সবাজার কলাতলির শালিক রেস্তোরাঁয় বৈঠক করে। বৈঠকে আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে আড়াই লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। আল মারকাজুল ইসলামী সংস্থা সমাবেশে রোহিঙ্গাদের জন্য টি-শার্ট তৈরিতে সহযোগিতা করে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা দুই বছর পূরণ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করে, যা ক্যাম্প-৪-এর ‘ই’ ব্লক এলাকায় সবচেয়ে বড় সমাবেশটি হয়। তা ছাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে ফুটবল খেলার মাঠ, ডি-৫ ব্লক মাঠে ভিন্ন ভিন্ন সংগঠনের পক্ষে সমাবেশ ও র‌্যালি করা হয়। সমাবেশ সফল করতে ডি-৫ ব্লক ‘রোহিঙ্গা রিফিউজি কমিটি’ (আরআরসি) সংগঠনের চেয়ারম্যান সিরাজুল মোস্তফার নেতৃত্বে ২৫ হাজার টাকা করে চাঁদা সরবরাহ করা হয়। সংগঠনের সেক্রেটারি সাইফুল হকের নিকটাত্মীয়স্বজন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করায় তাদের কাছ থেকেও চাঁদা সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ করে লন্ডনের নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাদের প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগে সংগঠনের অফিস নির্মাণের জন্য দুই লাখ টাকা অনুদান দেয়। এই সংগঠনের মূল কমিটি ২৫ জনের। সমাবেশের টি-শার্ট তৈরি করতে ক্যাম্পে কর্মরত এক এএসআইয়ের মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আরো তদন্ত চলছে বলে জানা যায়।

সরকারের যথাযথ অনুমতি ছাড়া রোহিঙ্গাদের একাধিক সংগঠন কুতুপালং ক্যাম্পের গত ২৫ আগস্ট সমাবেশ করে। একদিকে প্রত্যাবাসনে কৌশলী আগ্রহ, অন্যদিকে আশ্রিত জীবনে লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সরকার। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ নিয়ে তদন্তে নামে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ছাড়াও যেসব এনজিও সংস্থা এবং সমাবেশে সহায়তাকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে কাজ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ের নামে গঠিত বেশ কয়েকটি সংগঠন এবং কয়েকটি এনজিও এবং ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী এসব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন থেকে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কাছে লিখিত অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে গঠিত ‘রোহিঙ্গা রিফিউজি কমিটি (আরআরসি), ভয়েস অব রোহিঙ্গা, আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এবং এনজিও সংস্থা ‘এডিআরএ’ ও ‘আল মারকাজুল ইসলামী সংস্থা’ নামে দুটি এনজিও রোহিঙ্গা সমাবেশে টি-শার্ট ও ব্যানার সরবরাহ করেছে। রোহিঙ্গা সংগঠন ‘এআরএসপিএইচ’-এর উপদেষ্টা পরিষদে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীসহ কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতের একজন পিপি, কক্সবাজার দুর্নীতি দমন কমিশনের পিপি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক এবং ক্যাম্পে কর্মরত পুলিশের এক এএসআইয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানানো হয়।

পাঠকের মতামত

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...

জামিন বাতিল, মহেশখালীর তোফায়েল হত্যা মামলায় ৭ জন কারাগারে

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার মোহাম্মদ শাহ ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা জুলাই অভ্যুথানে নিহত শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর ...

ফেসবুক পোস্ট দিয়ে ছাত্রশক্তি নেত্রীর পদত্যাগ‘জুলাইয়ে থানার বাইক চোরের কাছে অনেক সময় হেরে যাই’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তি কক্সবাজার জেলা শাখার সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটি’র ...