মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী
প্রকাশিত: ১৪/০৩/২০২৫ ৪:৪৯ এএম

এক লক্ষ ২০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধারের মামলায় এক রোহিঙ্গা নারী আসামীকে যাবজ্জীবন অর্থাৎ ৩০ বছর সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এ রায় প্রদান করেন। একই আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামী হলেন-কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ডি ব্লকের নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুন (৩৪)। রায়ে মামলার অপর আসামী একই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আবু সিদ্দিকের পুত্র জানে আলম (৫২) কে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এবং দন্ডিত আসামী ফাতেমা খাতুনের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহাব উদ্দিন সাহীব ও খালাস প্রাপ্ত আসামী জানে আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন আজাদ মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০২১ সালের ১১ আগস্ট রাত ১ টা ১৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ডি ব্লকের নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুনের বসত ঘরে র‍্যাব-১৫ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে ফাতেমা খাতুন ও জানে আলমকে আটক করে। পরে রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুনের স্বীকারোক্তি মতে, তার বসত ঘর থেকে প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি এক লক্ষ ২০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় র‍্যাব-১৫ এর হাবিলদার মোঃ খায়রুল আলম বাদী হয়ে আটক রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুন ও রোহিঙ্গা জানে আলমকে আসামী করে উখিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার উখিয়া থানা মামলা নম্বর : ৩৭, তারিখ : ১১/০৮/২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৬০৮/২০২১ ইংরেজি (উখিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৮৮৮/২০২২ ইংরেজি।

বিচার ও রায় :
২০২২ সালের ৩০ মে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কাজ শুরু হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের জন্য গত মঙ্গলবার দিন ধার্য্য করা হয়।
ধার্য্য দিনে কক্সবাজারের বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় আসামী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুনকে দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন অর্থাৎ ৩০ বছর করে কারাদন্ড, একইসাথে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদন্ড প্রদান করেন। রায়ে মামলার অপর আসামী আবু সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা মূলে দন্ডিত আসামী রোহিঙ্গা ফাতেমা খাতুনকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...