
বাংলাদেশ, ইউক্রেন ও সুইডেন সরকার এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) যৌথভাবে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে, যেখানে ‘গ্রেইন ফ্রম ইউক্রেইন’ উদ্যোগের আওতায় আনা ৩,০০০ মেট্রিক টন সানফ্লাওয়ার তেল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এই তেল পৌঁছে দেওয়া হবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যেকের কাছে।
২০২২ সালে চালু হওয়া ‘গ্রেইন ফ্রম ইউক্রেইন’ ইউক্রেন সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি, যার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া। রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠানো সব সানফ্লাওয়ার তেল উৎপাদিত হয়েছে ইউক্রেনে, আর এর ক্রয় ও পরিবহনসহ সব ব্যয় বহন করেছে সুইডেন সরকার। এই অনুদানের পরিমাণ প্রায় ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার নয় বছর পূর্ণ হলেও বর্তমানে মানবিক সহায়তা ইতিহাসের অন্যতম কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ধারাবাহিকভাবে তহবিল কমে যাওয়ায় ২০২৬ সালে প্রায় ১২ লাখ মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে এখনো প্রায় ১৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে শুধু জীবনরক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার জন্য প্রয়োজন ১৭২ মিলিয়ন ডলার। নতুন তহবিল না পেলে ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে খাদ্য সরবরাহ বড় ধরনের সংকটে পড়বে।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় কক্সবাজারের উখিয়ার ডব্লিউএফপি মধুছড়া লজিস্টিক হাবে। উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফিজুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) এ.কে.এম. মহিউদ্দিন কায়েস, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সুইডিশ রাষ্ট্রদূত এইচ.ই নিকোলাস উইকস, ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই ড. ওলেক্সান্দার পলিশচুক এবং WFP বাংলাদেশ–এর অস্থায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর সিমোন পার্চমেন্ট।
গ্রেইন ফ্রম ইউক্রেইন উদ্যোগে ফ্রান্সও অর্থায়ন করছে। ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাষ্ট্রদূত জাঁ-মার্ক সেরে-চারলে।
ইউক্রেন, সুইডেন ও ফ্রান্সের সরকার ও জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্ব ও সহানুভূতির প্রশংসা করেন উপস্থিত অতিথিরা।


পাঠকের মতামত