
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র গত বছর অনুদান দিয়েছিল ৩০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু চলতি বছর ৭২ শতাংশ কমিয়ে অনুদান দিয়েছে ৮৫ মিলিয়ন। একইভাবে আগের বছরের তুলনায় যুক্তরাজ্যের অনুদান কমেছে ৪৮ শতাংশ।
এই ঘাটতি পূরণে রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিনিউটিকে (বাংলাদেশ) বিশ্বব্যাংক থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে। কোস্ট ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশন ও কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় জানানো হয়, এক বছরের ব্যবধানে যুক্তরাজ্যের অনুদান ৪৬ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে হয়েছে ২৪ মিলিয়ন।
এই ঘাটতি সামলাতে এক বছরে রোহিঙ্গা খাতে বাংলাদেশের ব্যয় বেড়েছে ২৬৩ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশ ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দিলেও এ বছর দিয়েছে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার।
সংবাদ সম্মেলনে কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক শাহিনুর ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরে মোট ৬৩টি প্রকল্প অনুমোদিত ও শুরু হয়েছে।
এ সময় কোস্ট ফাউন্ডশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার শহর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়া-আসা করতে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় লাগে। সুতরাং কক্সবাজার শহরে বসে রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করার কোনো প্রয়োজন নেই। বড় এনজিও এবং আইএনজিওগুলো প্রকল্প পরিচালনা করলে খরচ অনেক বেশি হয়। অন্যদিকে, স্থানীয় এনজিওগুলো মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ তহবিল পায়। অথচ তারা বড় ধরনের প্রকল্প খুব কম খরচে চালাতে পারে। সুতরাং রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে স্থানীয় এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
রোহিঙ্গাদের মানবসম্পদে রূপান্তরের আহ্বানও জানান বক্তারা। ফাউন্ডেশনের যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক ইকবাল উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের শুধু মুখে তুলে খাওয়ানোর জন্য রাখা উচিত নয়। তাদের মানবসম্পদে রূপান্তর করা দরকার।’ আর ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, ‘উখিয়া, টেকনাফে রোহিঙ্গারা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিপরীতে স্থানীয়রা হচ্ছে সংখ্যালঘু। ফলে শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উত্তেজনা বাড়ছে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
‘রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তার স্থানীয়করণ’ শিরোনামের গবেষণার জন্য চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পগুলোতে জরিপ চালানো হয়। এ ছাড়া, প্রয়োজনীয় তথ্য নেওয়া হয়েছে ২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নথি ও প্রতিবেদন থেকে।
পাঠকের মতামত