
মুসলিম উদ্দিন::
কক্সবাজারের উখিয়ায় কর্মরত বেসরকারি এনজিও সংস্থা কারিতাস গত ২০১৭ সাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স গাড়ীর নাম্বার ব্যবহার করে আসছে। উখিয়ার রাজা পালংস্থ অফিসে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারিতাস এনজিও অ্যাম্বুলেন্স গাড়ীর নাম্বার ব্যবহার করে প্রায় দেড় ডজনেরও বেশি গাড়ি ব্যবহার করছে তাদের অফিস স্টাফ বহনের কাজে। বিআরটিএর তথ্য মতে ৭১- সিরিয়াল নাম্বারের গাড়ী রোগী আনা নেওয়ার কাজে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু তার বিপরীতে এখন কারিতাসে ব্যবহার হচ্ছে তাদের অফিসের স্টাফ আনা নেওয়ার কাজে।
বিদেশ থেকে বাণিজ্যিকভাবে আমদানিকৃত মাইক্রোবাস সিসি ভেদে প্রযোজ্য শুল্কের হার গড়ে সর্বনিম্ন ১৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫৪ শতাংশ। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স আমদানিতে শুল্কের পরিমাণ মাত্র ৩২ শতাংশের মতো। বর্তমানে আমদানিকৃত ১৮০০ থেকে ২০০০ সিসি মাইক্রোবাসের ওপর উল্লিখিত হারে শুল্ক আরোপের ফলে মোট মূল্য দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকা। আর একই সিসির অ্যাম্বুলেন্সে প্রযোজ্য হারে শুল্ক আদায় করলে এর মোট মূল্য দাঁড়ায় ১২ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ মাইক্রোবাস অপেক্ষা অ্যাম্বুলেন্সের মূল্য প্রায় অর্ধেক। কারণ অ্যাম্বুলেন্স যেহেতু মানব সেবায় ব্যবহৃত হয়, তাই সরকার তাতে রেয়াতি সুবিধা দিয়ে শুল্ক হ্রাস করেছে। আর এই সুযোগে অসাধু গাড়ী ব্যবসায়ীরা অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে গাড়ি আমদানি করে মাইক্রোবাস হিসেবে এনজিও কারিতাসের কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করে কোটি টাকা সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবহার করছেন। অভিযোগ আছে এভাবে দীর্ঘ ২০১৭সাল থেকে অনিয়মের রাজত্ব চলছে কারিতাস এনজিও সংস্থায়। গত ৬ বছরে সরকার’কে শুধু গাড়ি খ্যাতে কোটি কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে বলে ধারণা করছেন এখই এনজিওর একাধিক কর্মকর্তা। অনুসন্ধানে জানা যায়, এনজিও সংস্থা কারিতাসের উখিয়ার রাজা পালংস্থ অফিসের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্স গাড়ীর নাম্বার ব্যবহার করে যে হাইস গাড়ী গুলো ব্যবহার হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে,
চট্টমেট্রো- ছ – ৭১- ০৬৫২, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৪৫৫, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৫২১, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৪৩৮, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৬৭৮, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৪৩৩, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৫৫৬, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৬৯৮, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৬৬৭, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৫১৪, চট্টমেট্রো- ছ – ৭১ – ০৪২৬, ঢাকা মেট্রো- ছ – ৭১ – ২৮৫৯, ঢাকা মেট্রো – ছ – ৩৮৯১, ঢাকা মেট্রো- ছ – ৭১ – ৩৯৫৬। এছাড়াও আরো একাধিক অ্যাম্বুলেন্স গাড়ীর নাম্বার ব্যবহার করে চলছে এই এনজিওতে । এসব অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন কারিতাসের “ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্রোগ্রাম” (ERP) প্রজেক্টের লজিস্টিক অফিসার জন লিউনার্ড গোমস আর গাড়ীর ভেন্ডর/মালিক। তাদের এমন দুর্নীতির মাধ্যমে চলমান গাড়ীর কাগজ পত্র ইত্যাদি চেক না করার জন্য ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের কাছেসহ বিভিন্ন দিকে তারা মাসিক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এম্বুলেন্সের নাম্বার ব্যবহার করে যাত্রীবাহী গাড়ী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী আশিকুর রহমান বলেন, কারিতাস এনজিওতে দুর্নীতি, অনিয়মের রাজত্ব চলছে। যে অনিয়মের কথা তাদের সবাই অবগত, তারা সবাই মিলে সেবার নামে লুটপাট করে চলছে। তিনি আরো বলেন, মানবিক কাজের নামে গাড়ী ব্যবসা করছে এনজিও কারিতাস।
এ বিষয়ে গাড়ীর ভেন্ডর মুন্না প্রতিবেদককে জানান, আমরা কিছু টাকা কামাচ্ছি তাঁতে আপনাদের সমস্যা হলে আপনি নিউজ করে দেন । এ বিষয়ে অভিযুক্ত এনজিও কর্মকর্তা, জন লিউনার্ড গোমস এর সাথে অফিসে গিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। এর পরেও একাধিক বার কল দিয়ে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কারিতাসে কর্মরত পিডি লিটন জানান, বিষয়টি আমাদের জানা নেই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুত্র: সীমান্ত বার্তা
পাঠকের মতামত