প্রকাশিত: ২৭/১২/২০১৬ ৭:৩১ এএম

এ.এম হোবাইব সজীব::

আগামীকাল ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদকে ঘিরে মহেশখালী উপজেলার প্রত্যান্ত জনপদে এখন চলছে জমজমাট উৎসবের আমেজ। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের সাথে ভোটের উৎসবে প্রতিদিন সামিল হচ্ছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। উপজেলার ২টি ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচনে লড়ছেন মোট ৮ জন প্রার্থী। এ নির্বাচনকে ঘিরে সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শংকা রয়েছে অনেক প্রার্থী ও ভোটাররা। নির্বাচনী প্রচারণা উঠান বেঠকে সরকার দলের লোকজনের হুমকি-ধুমকিতে ভোগছে সাধারণ ভোটাররা। আসন্ন এ নির্বাচনে ভোটারদের নিকট প্রর্তীকের চেয়ে ব্যক্তির মূল্যয়ন পাচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের প্রতাপের কারণে সঠিকভাবে সাধারণ ভোটাররা ভোটাধিকার কতটুকু প্রয়োগ করতে পারে কিনা তা নিয়ে মাঠে-ঘাটে চলছে নানা কল্পনা-জল্পনা। এ নির্বাচন আদৌও সুষ্ট হবে কিনা গোলক ধাঁধায় পড়েছে প্রার্থী ও ভোটাররা। তবে গেল পৌর সভা ও ইউপি নির্বাচনের মত বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ,ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে কেন্দ্রের বাইরে ও ভিতরে কোন পেশী শক্তি প্রয়োগ করতে না পারে সে জন্য প্রশাসনকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকার রাখতে হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

নির্বাচনী এলাকার শেষ মুহুর্তের খবরা-খবরা বর্তমান অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, অনুষ্ঠিব্য নির্বাচনে ২ ওয়ার্ডে সদস্য পদে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আওয়ামীলীগ বনাম আওয়ামীলীগ। নির্বাচনের দিন আরোক দিন বাকি থাকায় বাড়ছে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা। প্রতিদিন শীতের কনকনে সকালে বাড়ি বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রচারণা চালাচ্ছেন গভীর রাত অবদি। কিছু প্রার্থী যোগ্যতা বলে ভোটারদের মন জয় করেছেন। তবে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে অনেক ইউনিয়নে ভোটার ইউপি সদস্যরা প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আবার টাকা পেয়ে ও অনেক ভোটার ভোট দিবেন এমন ও কথার উদয় হচ্ছে সচেতন মহলের কাছে। এতে নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্গন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বেশিরভাগ প্রার্থীরা। কে কাকে ভোট দেবেন তা বুঝার উপায় খুঁজে না পাওয়ায় প্রার্থীরা দু-চিন্তায় পড়েছেন। তবে জানা গেছে টাকা ছাড়া চেয়ারম্যানরা ভোট দিলে ও মেম্বারদের ভোট পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে দল থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে মনোনয়ন দেওয়া হলেও দল সমর্থিত চেয়ারম্যান মেম্বাররাও দলের মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে মূখ খুলছেনা।

জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বানে ৮ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভা এবং কুতুবদিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়নে ঘিরে ৩টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। তারমধ্যে মহেশখালী পৌর সভা, কুতুবজোম, বড় মহেশখালী, ছোট মহেশখালী ইউনিয়কে সমন্বয় করে ৩ নং ওয়ার্ড করা হয়েছে। একইভাবে হোয়ানক, কালারমারছড়া, শাপলাপুর, মাতারবাড়ী ও ধলঘাট ইউনিয়নকে নিয়ে করা হয়েছে ২ নং ওয়ার্ড। মহেশখালী আসনে কুতুবদিয়া-মহেশখালীকে নিয়ে করা হয়েছে ১নং ওয়ার্ড। অনুষ্ঠিব্য নির্বাচনে সরাসরি ভোট যুদ্ধে নেমেছেন সংরক্ষিত আসন ১ থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মাশরফা জান্নাত, প্রতিদ্বন্ধদ্বী জামায়াতের নেত্রী শিরীন ফারজানা।

সাধারণ সদস্য পদে ১ নং আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মিজানুর রহমান এর প্রতিদ্বন্দ্বী কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাষ্টার আহমদ উল্লাহ, ২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহাম্মদ রুহুল আমিন (পাকা )এর প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন (তালা), মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী (টিউবওয়েল) ও লুৎফুর রহমান (উট পাখি)। ৩ নং আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ার পাশা চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থক মোহাম্মদ আয়ুবর রহমান ও সিরাজ মিয়া, মোঃ আজিজুর রহমান।

উত্তর মহেশখালীর ২নং ওয়ার্ডের ভোটার ও সচেতন মহলের অভিমত, এখানে সদস্য পদে ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে থাকলেও মূলথ ভোট যুদ্ধে হবে দুই প্রার্থীর মধ্যে। মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা মাষ্টার রুহুল আমিন ও কামাল উদ্দিন। দুই প্রার্থীর কব্জায় কয়েকটি ইউনিয়নে রিজার্ভ ভোট ব্যাংক থাকার কারণে বর্তমানে জনপ্রিয়তা বিচারে দুইজনই এগিয়ে রয়েছেন। তবে যোগ্যতার বিবেচনায় উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা মাষ্টার রুহুল আমিনের জয়ের পাল্লা ভারী বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তবে শেষ মূহুর্তে এসে তরুন নেতা হোয়ানক ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান সাহেব মিয়া চৌধুরীর নাতী ইকবাল চৌধুরী জয়ের লক্ষে এগাচ্ছে বলে ও জানা গেছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ভোটের হিসাবে অন্য তিন প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এ কারণে তিনিই এখন মূল আলোচনায়। সম্ভাবনমায়, ভদ্র ও ন¤্র নেতা হিসাবে ইকবাল চৌধুরীকে নিয়েই ভাবছেন ভোটাররা।

জানা গেছে, ভোটারদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটানো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন ইকবাল চৌধুরী। যে কোনে এলাকার উন্নয়নসহ যাবতীয় কর্মকান্ডে নিজের একনিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কথ্য দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন তিনি।

ভোটারা জানান, তার সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাই ইকবাল চৌধুরী ভোটের যোগ্য প্রার্থী। তবে প্রচার প্রচারণায় পিছিয়ে নেই লুৎফুর রহমানও। কারণ তিনি ভোটারদের বাড়ি তার ছবি মার্কা সম্বলিত ব্যানার টাঙ্গিয়ে দিয়ে এসেছেন। সচেতন মহলের অভিমত, অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে টাকা একটি বড় ফ্যাক্টর। যিনি টাকার বিনিময়ে ভোটারদের মন জয় করতে পারবেন তারই জয়ের পাল্লা ভারী হবে। এসব ওয়ার্ডে অনেক ভোটার চেয়ে রয়েছেন টাকার দিকে। সেই হিসাবে ফলাফল নিশ্চিত করতে হলে সকলকে আগামীকাল ২৮ ডিসেম্বর বুধবার নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে এমন ধারনা করছেন অভিজ্ঞ মহল।

টিউবওয়েল প্রর্তীকের প্রার্থী ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন নির্বাচনে দাপটু এক প্রার্থীর পেশী শক্তির কারনে কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির সংশয়তো সব প্রার্থীর মত আমারও রয়েছেই। তবে, আমি আশাবাদী ভোটাররাই তাদের ভোটের পাহারা দেবে। ভোট ডাকাতির মত কালো শক্তিকে গণমানুষ তাদের শক্ত হাতে প্রতিরোধ করে টিউবওয়েল প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করবে।

পাঠকের মতামত

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চাচি শাশুড়িকে মা বানিয়ে বাংলাদেশি হতে চান রোহিঙ্গা যুবক!

রোহিঙ্গা যুবক সাহাব উদ্দিন (২৪) বিয়ে করেছেন বাংলাদেশি নারী খুরশিদা আক্তারকে। তাদের ঘরে জন্ম নিয়েছে ...

সেন্ট মার্টিনে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ ...