![](https://www.ukhiyanews.com/wp-content/uploads/2016/07/map2.jpg)
নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি ::
সীতাকুণ্ডে জেএমবির জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী বোমায় নিহত ও পৃথক আস্তানা থেকে আটককৃতদের গ্রামের বাড়ি বাইশারীতে করা ৩ দিনের নিখোঁজের তালিকার কাজ গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। গত ২০ মার্চ শুরু হওয়া এ তালিকার কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় দু’একদিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদ কবির। এসময়ের মধ্যে এ তালিকার কাজ শেষ হবে। তখন বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেন তিনি।
তিনি আরো জানান, জঙ্গি কামাল হোসেন সস্ত্রীক আত্মঘাতী বোমাতে নিহত ও পৃথক ঘটনায় জসিম ওরফে জহিরুল হক স্ত্রীসহ আটকের পর পরিচয় মেলে বাইশারী তাদের গ্রামের বাড়ি। ১২ দিনের রিমান্ডে থাকা সস্ত্রীক জহিরুল হক জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত বিষয়টি স্বীকার করায় বাইশারীর বিষয়টি উঠে আসে বারবার। এর পর থেকে বাইশারী আসতে থাকে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা। আসেন বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ও। তিনি সবাইকে নিয়ে মিটিং-ও করেন ক’দিন আগে।
মির্টিং উপস্থিত ছিলেন এমন এক জনপ্রতিনিধি জানান, এর আগে জঙ্গি হাসান নামে যুবকের বাড়ি এ বাইশারী হওয়ায় সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। খোদ প্রশাসনের লোকজন নড়ে-চড়ে বসে পুরো চট্টগ্রামে। এরপর গত ১৯ মার্চ বান্দরবান পুলিশ সুপার নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে
এসে দিনব্যাপী নানা কার্যক্রম চালায় জঙ্গি চিহ্নিত করণের বিষয়ে। তিনি বাইশারীতে এসেই সর্বস্তরের লোকদের নিয়ে করেন এক বিশেষ আলোচনা সভা। এ সভায় ৩ দিনের মধ্যে এলাকার কোন মানুষ বিনা কারণে এলাকা ছেড়েছে এমন লোকদের তালিকা তৈরিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্দেশ পেয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা মাঠে নেমে পড়েন। এরই মধ্যে বান্দরবানের এসপির দেয়া আল্টিমেটাম গতকাল শেষ হয়ে যায়।
বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রে উপ-পরিদর্শক আবু মুসা জানান, তিন দিনের সময় শেষ হলেও নিখোঁজের সন্ধানে পুলিশের তৎপরতা থেমে নেই। পুলিশ এক দিকে নিখোঁজের সন্ধানে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে অপরদিকে অপরাধীদের আটকে ব্লক রেইটও অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে প্রায় ৮০ জন কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্য বাইশারীতে জঙ্গি খোঁজ বিষয়ে তৎপর। অপরদিকে বাইশারীর ইউনিয়নের ৪ এবং ৯ নম্বর ওর্য়াডে নিহত ও আটক জঙ্গিদের বাড়িতে শোনশান নীরবতা। এলাকার লোকজনের সাথেও যাওয়া-আসা বন্ধ করে দিয়েছে জঙ্গি কামাল, রাজিয়া ও জহিরুল হকের পরিবার।
উল্লেখ্য চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গত ১৫ মার্চ বুধবার চালানো অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিনে নিহত ৫ জঙ্গি ও এক শিশুর মধ্যে নিহত ২ জঙ্গি ও এক শিশুর বাড়িই বাইশারীতে। পাশাপাশি আগের দিন মঙ্গলবার আটক ৩ মাসের শিশু জুবাইরসহ জঙ্গি দম্পতি জহিরুল হক ওরফে জসিম ও রাজিয়া সুলতানা ওরফে তানজিনা আটকের পর জানা যায় তারাও একই এলাকার। এর ক’ দিন আগে কুমিল্লার চান্দিনায় পুলিশি অভিযানে আহত অবস্থায় আটক ছুরুত আলম ওরফে হাসানের দেয়া তথ্যে ভিত্তিতে চালানো সীতাকুণ্ড অভিযানের মূল তথ্যদাতা নায়ক হাসানের বাড়িও এই বাইশারীতে। তাদের বাড়ি বাইশারী হওয়াতে সাধারণ লোকজনের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
পাঠকের মতামত