প্রকাশিত: ২২/১১/২০১৬ ৩:৩১ পিএম
সন্তান হারিয়ে এক রোহিঙ্গা দম্পতির আহাজারি

বিবিসি::

 সন্তান হারিয়ে এক রোহিঙ্গা দম্পতির আহাজারি
সন্তান হারিয়ে এক রোহিঙ্গা দম্পতির আহাজারি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা বলেছেন, মিয়ানমারে থাকা মানে নিশ্চিত মৃত্যু, তাই তাঁরা বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান।
বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালালেও বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় এসে আশ্রয় নিচ্ছেন রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমরা।
রোববার রাতেও নৌকায় করে টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এসেছেন অন্তত ১৩ জন রোহিঙ্গা। এদের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেন।
জানা গেছে, রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে রোববার রাতে একটি নৌকায় করে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেন অন্তত ২০ জন রোহিঙ্গা মুসলমান।
কিন্তু নাফ নদীর মাঝপথে তাদের নৌকা ডুবে যায়। তখন অন্য একটি নৌকা এসে তাদের বাঁচালেও ৭ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
প্রাণভয়ে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আসার সময় তিন সন্তানকে হারিয়েছেন হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া বেগম।
হুমায়ুন কবির বলেছেন, তিনি আর মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না, যেভাবেই হোক বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান তারা।
“ওইখানে খারাপ ছিলাম না। কিন্তু এখন সেখানে যে পরিস্থিতি থাকার মতো অবস্থা আর নাই। ওইখানে ফিরে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু” – বলছিলেন হুমায়ুন কবির।
মি: কবির বলছেন তাদের সাথে আরও অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কয়েকটি নৌকায় তারা রওনাও দিয়েছিল। কিন্তু তাদের এখন কী অবস্থা, জানেন না তিনি।

হুমায়ুন কবির ও তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম, নাফ নদী দিয়ে টেকনাফে আসার পথে নৌকাডুবির ঘটনায় তিন সন্তানকে হারিয়েছেন।
হুমায়ুন কবিরের ভাষ্য অনুযায়ী – মংডুতে তাদের গ্রামে আর কোনও রোহিঙ্গা মুসলিম খুঁজে পাওয়া যাবে না। সবাই প্রাণভয়ে পালিয়ে আছেন কোথাও। নয়তো বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছে।
টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন হুমায়ুন কবির, তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ ১৩জন।
তাদের সাথে আসা মোতায়রা বেগমও নাফ নদীতে তাঁর সন্তানকে হারিয়েছেন, নৌকায় আসার সময় মোতায়রার একমাত্র সন্তানও ডুবে গেছে।
হ্নীলায় এক দু:সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছেন মোতায়রা ও তাঁর স্বামী।
মোতায়রা বেগম অভিযোগ করে বলেছেন রাখাইনে যে অত্যাচার-নির্যাতন চলছে তা বলে বুঝানো যাবে না।
“সেনাবাহিনীর মানুষ এসে ঘরের দরজা আটকায়ে আগুন দেয় আর বলে এরা রোহিঙ্গা মুসলিম। কোনভাবে যদি কেউ বাড়ি থেকে পালাতে চায় তাহলে তারা গুলি করে”।
রাখাইনের মেয়েদের ওপর ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ করছেন এ রোহিঙ্গা মুসলিমরা।

রোহিঙ্গাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব সত্ত্বেও সীমান্তের ওপারে চরম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়া মানুষদের প্রতি বাংলাদেশিদের সহানুভূতি বাড়ছে বলে বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন।

তবে মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের দাবি বরাবরই ‘অতিরঞ্জিত’ বলে বর্ণনা করে থাকে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বর্মী সরকারের একজন মুখপাত্র য থে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “রাখাইনে যা ঘটছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা”।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...