আল্লাহ যেন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখেন। আর সরকার যেন কোনো দিন না বদলায়। এজন্য শেখের বেটির নামে ১০১ বার কুরআন খতম দিছি। শেখের বেটি যেন এ খবরটা জানে। তার কাছে আমার চাওয়ার কিছু্ই নাই। শুধু মৃত্যুর আগে তাকে এ খবরটি জানিয়ে যেতে চাই।
এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ভালোবাসার কথাগুলো বললেন তিস্তার চরের শতর্বষী বৃদ্ধা খইমুন বিবি। তিনি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৯নং টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের পশ্চিম টাপুর চর এলাকার মৃত আব্দুল গফুরে স্ত্রী খইমুন বিবি।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ‘আপনাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করুন’ বেতারে শুনে শিহরিত হয়ে উঠেছিলেন খইমুন বিবি। সেদিন হাতে দা তুলে নিয়েছিলেন তিনি। প্রতিবাদী এই নারী রণাঙ্গনে যেতে না পারলেও স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার স্বপ্ন পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা বুকে ধারণ করে বেঁচে আছেন আজও।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড খইমুন বিবির বুকে বিঁধে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি অগাধ ভালোবাসা তিনি পুষে রাখেন হৃদয়ে। সেই ভালবাসার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য একশত একবার কুরআন খতম করার মাধ্যমে।
বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি তার এই ভালোবাসার কথা মৃত্যুর আগে তিনি যেন তাকে জানিয়ে যেতে পারেন। তাহলে তিনি মরেও শান্তি পাবেন। এটিই এখন খইমুন বিবির শেষ ইচ্ছা।
এর আগে ২০০৯ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় শেখ হাসিনার সরকার যেন আসে এজন্য তিনি একশত একবার কুরআন খতম দেওয়ার নিয়ত করেন।
ইতোমধ্যে স্থানীয় হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের নামে ২০ বার ও ডিমলা-ডোমার সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিনের নামে ২০ বার কুরআন খতম দিয়েছেন খইমুন বিবি।
তিস্তার গাইডবান থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে বাম তীরে ঘেঁষে জীর্ণ একটি কুঠির। যেখানে রাস্তাঘাট বলতে কিছুই নেই। বড় ছেলে আব্দুল হামিদের সঙ্গে থাকেন বৃদ্ধা খইমুন বিবি। ২ ছেলে ৩ মেয়ে তার। ৭১ এর পর থেকে তিস্তা নদীতে পাঁচবার বাড়ি ভেঙেছে খইমুন বিবির। এবার বন্যায় রক্ষা পেয়েছে শুধু ভিটেটুকু।
খইমুন বিবি এলাকায় পরহেজগার নারী হিসেবে পরিচিত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন তিনি। নিয়মিত কুনআন তেলায়াত করেন। সেই সঙ্গে এলাকার মানুষকে কুরআন পড়ার উৎসাহ যোগান।
ইতোমধ্যে তিনি নিজের অর্থ দিয়ে ২৫টি কুনআন শরীফ মানুষের মাঝে দান করেছেন।
বড় ছেলের স্ত্রী ছালেহা খাতুন (৪০) জানান, আমার শাশুড়ি একশত একবার কুরআন খতম দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান ও তার মেয়ে শেখ হাসিনার কথা সব সময় বলেন তিনি।
সানিয়াজান ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন জানান, খইমুন বিবি একজন পরহেজগার নারী। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের ভক্ত।
ডিমলা উপজেলার ৯নং টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম শাহীন জানান, বৃদ্ধা খইমুন বিবির পরিবারকে আমি চিনি ও জানি। কুরআন খতমের বিষয়টি আমার জানা নেই। জাগো নিউজ
পাঠকের মতামত