
শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি::
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রয়রত রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক। উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি-সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পরিষদ রোহিঙ্গাদের মাঝে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিং করছেন বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাতে জেলা প্রশাসক কর্মরত বিভিন্ন ইলেক্সট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক বৈঠকে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ এবং সীমান্ত পরিস্থিতি সংক্রান্ত’ সর্বশেষ পরিস্থিতি কথাও জানান তিনি।
বৈঠকে নাইক্ষ্যংড়ি জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল আনোয়ারুল আযীম, উপজেলা নিবার্হী অফিসার এস,এম সরওয়ার কামাল, সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী মুঠোফোনের লাউড স্পিকারে ত্রাণ মজুদের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ শফিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মুফিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
২০ অক্টোবর জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রেরিত এক প্রতিবেদন সূত্রে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে বান্দরবান সীমান্তে তিনটি ক্যাম্পে ১৬ হাজার ১৬০ জন নিবন্ধিত রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এসব রোহিঙ্গাদের বিতরণের জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কেজি চাল, ৬২৮ কেজি ডাল, ১ হাজার ৫০২ কেজি লবণ, ৫শ কেজি চিড়া, ৭২৪কেজি চিনি, ১হাজার ২০০লিটার তেল, ৩২ কেজি পেয়াজ-রসুন, ২১ কেজি শুটকিসহ কোরআন শরীফ, বিস্কুট, কাপড়, ঔষুধ, কম্বল, সাবান, প্লেট, থামী, বালতি, জগ, গ্লাসসহ গৃহস্থলীর ৩৮ কার্টুন জিনিসপত্র মজুদ রয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের জন্য ৬টি মেডিকেল টিম সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
যেকোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস,এম সরওয়ার কামাল দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়া মিয়ানমারের পানিরছড়ার বাসিন্দা জুহুরুল আলম, জামাল হোছন এ প্রতিবেদককে জানান, অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক পরিবারে ১৫ জন পর্যন্ত সদস্য সংখ্যা রয়েছে। যার কারনে এ ধরনের বড় পরিবার গুলোতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা দেওয়া হচ্ছে তাতে পুরো পরিবার চলে না। পূর্বের মত তারা ত্রাণ পাচ্ছেনা বলে দাবী করেছেন অনেকে।
এছাড়াও ঘুমধুম সীমান্তে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের উখিয়া ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার কারনে পর্যাপ্ত ত্রাণ সেখানে পৌঁছেনা বলে মনে করছেন ঘুমধুম সীমান্তের জনপ্রতিনিধিরা। তাদের মতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ সহজ যোগাযোগ মাধ্যম খুজে ত্রাণ বিতরণ করতে চান।
সীমান্তে ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, সরকারের নির্দেশে রোহিঙ্গাদের মানবিকতা দেখানো হচ্ছে। ত্রাণ নিয়ে আসা মানুষদের সহযোগিতার পাশাপাশি উদ্ভূদ্ধ করছেন তারা। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বেশি ত্রাণ দেয়া হলে স্থানান্তর করা কালীন রোহিঙ্গারা ভোগান্তিতে পড়বে।
পাঠকের মতামত