দেশে একাধিক হিজড়া তৈরির কারখানার (বিশেষ ক্লিনিক) সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব ক্লিনিকে বিশেষ অঙ্গে ছোট্ট একটি অপারেশন আর প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে পুরুষ কিংবা মেয়েকে হিজড়ায় পরিণত করা হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে হিজড়া তৈরির কারিগররা। যে কোনো বয়সী পুরুষের চালচলনে মেয়েলি ভাব, কিংবা কোনো মেয়ের মধ্যে ছেলেদের চালচলন দেখলে তাকেই টার্গেট করছে চক্রের সদস্যরা। নানা প্রলোভন দিয়ে দলে টেনে অপারেশনের মাধ্যমে হিজড়ায় পরিণত করছে। অপারেশনের পর বিভিন্ন হরমোনজাতীয় ওষুধ শরীরে পুশ করে একজন নারী কিংবা পুরুষ হয়ে যাচ্ছে বিশেষ এ সম্প্রদায়ের সদস্য। আর সংঘবদ্ধ চক্রটি হিজড়া তৈরির পর তাদের ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার জগতে। বিনিময়ে প্রতি মাসে এসব হিজড়ার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা মাসোহারা নিচ্ছে। রাজধানীর শ্যামলী, ঢাকার ধামরাই, খুলনার ফুলতলা ও সিলেটে গড়ে ওঠা বিশেষ এসব ক্লিনিকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচে পুরুষের বিশেষ অঙ্গে অপারেশনের মাধ্যমে হিজড়ায় পরিণত করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অপরাধে পুলিশের হাতে আটক কয়েকজন হিজড়ার কাছ থেকে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। যুগান্তরের অনুসন্ধানেও এর সত্যতা মিলেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নকল হিজড়া বানানোর পর তাদের দিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করাচ্ছে সিনিয়র হিজড়াচক্র। আর তাদের উপার্জনের টাকা দিয়েই আয়েশি জীবনযাপন করছে চক্রের হিজড়া তৈরির এসব কারিগররা। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে বাড়ি, প্লট এবং মোটা অংকের ব্যাংক-ব্যালেন্স। এসব চক্রের কারণে দেশে জ্যামেতিক হারে হিজড়াদের সংখ্যাও বাড়ছে। আর নকল এসব হিজড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের দাপটে দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে জন্মগত যৌন প্রতিবন্ধী বা প্রকৃত হিজড়া সম্প্রদায়। অন্যদিকে আধিপত্য বিস্তার ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এ চক্রের মধ্যে খুন-খারাবির ঘটনাও ঘটছে।
পুরুষ থেকে হিজড়া : সূত্র বলছে, শুধু রাজধানীতেই এমন হাজারখানেক নকল হিজড়া রয়েছে। এমনই একজনের নাম সুমন ওরফে ঝুমা হিজরা। সুমন বা ঝুমার মতো অসংখ্য হিজড়া আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। কারওয়ান বাজারে একসময় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন সুমন। নওগাঁর ছেলে সুমনের নাম এখন ঝুমা হিজড়া। তার স্ত্রী সাবিনা দুই সন্তান নিয়ে গ্রামে থাকেন। বুধবার দুপুরে মগবাজার এলাকায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সুমন ওরফে ঝুমার। গল্পের ছলে ঝুমা জানান, ছোটবেলা থেকেই তার চালচলনে কিছুটা মেয়েলি ভাব ছিল। বছরদুয়েক আগে তার ওপর নজড় পড়ে খায়রুল ইসলাম ওরফে স্বপ্না নামে এক হিজড়ার। পরিচয়ের পর প্রথমে নানা প্রলোভন এবং পরে একপ্রকার জোর করেই তাকে হিজড়া বানানো হয়। ধামরাইয়ের রোম আমেরিকান হাসপাতালে বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে তার পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া বানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে তাকে কিছু টাকা হাতে তুলে দেয় স্বপ্না হিজড়া। অপারেশনের পর সুমন যখন হিজড়ায় পরিণত হন, তখন লজ্জায় আর গ্রামে যান না। তবে হিজড়াদের সঙ্গে থেকে বিভিন্নভাবে যে আয়-রুজি হয়, তার একটা অংশ স্ত্রী-সন্তানদের জন্য গ্রামে পাঠান বলে জানান তিনি।
সুমন ওরফে ঝুমা আরও বলেন, খায়রুল ইসলাম ওরফে স্বপ্না হিজড়াও একসময় পুরুষ ছিলেন। তারও দুটি যমজ সন্তান ও স্ত্রী আছে। আধিপত্য ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আরেক হিজড়া নেতা হায়দার খুন হওয়ার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। ঝুমার কাছ থেকে জানা গেছে আরও ভয়ানক তথ্য। তিনি জানান, রাজধানীতে হিজড়া তৈরির আরও কমপক্ষে ১০টি চক্র রয়েছে। যারা উঠতি বয়সের ছেলেদেরই বেশি টার্গেট করে। তবে লোভে পড়ে গরিব ঘরে অনেক বিবাহিত পুরুষও এ পথে পা বাড়াচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হিজড়াদের সংগঠন বাঁধনের সভাপতি পিংকি নিজেই একজন নকল হিজড়া। তার আসল নাম জহির আহম্মেদ সুজন। বাবার নাম লাল মিয়া। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকে রাজধানীর কদমতলি এলাকায়। তার আছে ব্যক্তিগত গাড়ি, ঢাকায় রয়েছে নিজের বাড়ি। তবে সভাপতি বাঁধন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি জন্মগতভাবেই হিজড়া। এ সম্প্রদায়ের সঙ্গেই আছি।’
হিজড়া তৈরির কারিগর : নকল হিজড়ার কথা এলেই প্রথম যে নামটি আসে সেটি ধামরাই বাসস্ট্যান্ডের রোম আমেরিকান হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এ পতিষ্ঠানটির মালিক ওই এলাকারই বাসিন্দা ডা. মো. শাজাহান মিয়া। ২০০৮ সালে তিনি ধামরাই থানা রোডের দক্ষিণপাড়ায় ওই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই হাসপাতাল ঘিরেই গড়ে উঠেছে একটি হিজড়া পল্লী। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, একসময় প্রায় দেড়শ’ ঘর হিজরা এখানে বসবাস করত। তবে এখন মাত্র ৩০ থেকে ৩৫টি হিজড়া পরিবার রয়েছে। অনেকে হিজড়া তৈরি করে বিপুল অর্থবৈভবের মালিক হয়ে এলাকা ছেড়ে সাভারের আশুলিয়া ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করছেন বলে জানালেন স্থানীয় মুদি দোকানি হাসমত আলী। হাসপাতালে হিজড়া বানানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. মো. শাজাহান মিয়া এটি ‘ভালো কাজ’ উল্লেখ করে যুগান্তরকে বলেন, ‘ভালো কাজ করতে গিয়ে তিনি বদনামের ভাগি হয়েছেন।’ তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, একজন হিজড়া যদি নারীতে রূপান্তরিত হয়ে স্বামীর ঘর-সংসার করতে পারে তাহলে দোষের কী? তবে এ নিয়ে লেখালেখি হওয়ার পর থেকে তিনি ওই অপারেশন ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান। তবে স্থানীয়রা জানান, এখনও ওই হাসপাতালে মাঝে-মধ্যেই কিছু অচেনা লোককে ভর্তি হতে দেখা যায়।
কোটিপতি নকল হিজড়া : হিজড়াদের মধ্যে কারও কারও রয়েছে অঢেল সম্পদ। তারা কীভাবে এসব সম্পদ গড়েছে সংশ্লিষ্টরা তার কোনো জবাব দিতে পারেনি। তবে নানা মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছে অনেক হিজড়া। খিলক্ষেত এলাকায় দলনেতা নাজমার অধীনে রয়েছে ৪০ জন হিজড়া। ৩০ বছর আগে পুরষাঙ্গ কেটে হিজড়া হয়েছেন নাজমা। ঢাকায় তার তিনটি বাড়ি ছাড়াও একাধিক প্লট রয়েছে। তার এসব বাড়ি ফায়দাবাদ, খিলক্ষেত ও গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকায়। খিলক্ষেত বটতলা এলাকার আলম জানান, বটতলা ক-১৮৩/৫নং ‘মায়ের দোয়া নাজমা ভিলায়’ থাকতেন নাজমা। এটি তার নিজের বাড়ি। খিলক্ষেতে দুটি প্লটও রয়েছে নাজমার। নাজমা শুধু লাভের আশায় নিজের তিন সন্তানকেও ভারত, খুলনার ফুলতলা ও ধামরাইয়ের রোম আমেরিকান হাসপাতাল থেকে হিজড়া বানিয়েছেন বলে জানা গেছে। হিজড়াদের কাছ থেকে পাওয়া এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাজমার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবিদুর রহমান যুগান্তরকে জানান, নজমা হিজড়ার বিরুদ্ধে মাদকের বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক।
ধলপুর এলাকার আবুল হিজড়াও দুটি বাড়ি ও কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে। গোলাপবাগ এলাকার ১৩/বি/১ নম্বরে ৫ তলা ও ধলপুর লিচুবাগানে একটি ৪ তলা ভবনের মালিক আবুল। দক্ষিণখান থানার মধ্য ফায়দাবাদ এলাকার দলনেতা রাহেলা হিজড়ার নিজের বাড়ি রয়েছে।
অপরাধে জড়াচ্ছে হিজড়ারা : খুন, গুম, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারণাসহ ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে হিজড়ারা। সমাজের ‘অবহেলিত’ অংশ হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হিজড়াদের কয়েকটি চক্র অপরাধ করছে। বাড়ি নির্মাণ করতে গেলেও ইদানীং তাদের দিতে হয় চাঁদা। চাঁদা না দিলে হামলা চালিয়ে আতংক সৃষ্টি করে তারা। কখনও আবার নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদার ভাগবাটোয়ারা নিয়েও খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে। মেয়ে সেজে রাতে পথচারীদের আটকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা, মোবাইল সেট, স্বর্ণালংকার ও ঘড়ি ছিনিয়ে নিচ্ছে। এমনকি গণপরিবহনে যাত্রীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা তুলতে দেখা গেছে এক দল হিজড়াকে। হিজড়াদের বিরুদ্ধে ঘরে ঢুকে শিশুদের জিম্মি করে টাকা আদায়, মাদক, অস্ত্র ব্যবসা এবং তাদের ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করানোর অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগে গ্রেফতারও হচ্ছে কেউ কেউ। তবে অপরাধের সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ ও ঠিকানা যাচাইয়ের ভিত্তিতে পুলিশ কোনো হিজড়াকে গ্রেফতার করলেও শুধু নাম বিভ্রান্তির কারণে সে মুক্তি পেয়ে যায়। অনেক সময় বাড়তি ঝামেলা এড়াতে হিজড়াদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চায় না পুলিশ। এমনকি পুলিশ রাস্তাঘাটে হিজড়াদের তল্লাশিও করে না। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নমনীয়তার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, শ্যামপুর, ডেমরা এলাকায় লায়লা হিজড়া, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে হামিদা, ধামরাই, সাভারে মনু, সায়েদাবাদ ও মতিঝিলে আবুল, পুরান ঢাকায় দীপালি, উত্তরায় নাজমা এবং ফার্মগেট, চন্দ্রিমা উদ্যান, গুলশান, বাড্ডাসহ আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে হায়দার ও রতœা হিজড়া। অন্যদিকে মগবাজার ও রমনা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে স্বপ্না হিজড়া।
খুনাখনির অভিযোগ : হিজড়াদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মারামারি এমনকি খুন-খারাবির ঘটনাও ঘটে। ২০০৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে ধানমণ্ডির কলাবাগান এলাকার এক শিক্ষক সোহাগী নামে এক হিজড়ার হাতে খুন হন। ওই ঘটনায় সোহগীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। চলতি বছরের ২১ ফেব্র“য়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবী থানার ইস্টার্ন হাউজিংয়ের বকুলতলার আনোয়ার ওরফে আলাউদ্দিন (২৭) নামে এক হিজড়া প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন। আধিপত্য নিয়ে বিরোধে চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জামালপুরে নিজ বাড়িতে খুন হন হায়দার হিজড়া। ওই ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে রতœা হিজড়া।
হিজড়ারা সংঘবদ্ধ : ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত হিজড়ারা পাঁচ থেকে পঞ্চাশজন একজন সরদারের নিয়ন্ত্রণে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে থাকে। হিজড়া সরদারদের নিজস্ব এলাকা ভাগ করা আছে। একেকজন হিজড়া সরদারের অধীনে অন্তত অর্ধশতাধিক হিজড়া রয়েছে। সরদারদের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার চাঁদাবাজিসহ কোনো ধরনের অপরাধই অন্য হিজড়া করতে পারে না। প্রতিদিন সকালে সরদারের সঙ্গে দেখা করে দিকনির্দেশনা শুনে প্রতিটি গ্র“প টাকা তোলার জন্য বের হয়ে যায়। প্রতিটি গ্র“প তাদের ওঠানো টাকা রাতে সরদারের সামনে নিয়ে রাখে। সরদার তার ভাগ নেয়ার পর গ্র“পের সদস্যরা বাকি টাকা ভাগ করে নেয়।
কত হিজড়া আছে : দেশে প্রকৃত হিজড়ার সংখ্যা কত, তা নিয়ে তথ্যগত বিভ্রান্তি রয়েছে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে হিজড়াদের কোনো পরিসংখ্যান নেই। আদমশুমারির সময় তৃতীয় লিঙ্গের অপশন না থাকায় হিজড়াদের গণনা করা হয়নি। তবে চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর প্রথম সরকারিভাবে হিজড়াদের পরিসংখ্যান হয়। সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে হিজড়ার সংখ্যা ৯ হাজার ৮৯২ জন বলে জানানো হয়। রাজধানীতে প্রকৃত হিজড়ার সংখ্যা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশন (এইচআরএইচএফ) নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সারা দেশে অর্ধ লক্ষাধিক হিজড়া থাকলেও রাজধানীতে প্রকৃত হিজড়ার সংখ্যা দুই হাজারের বেশি হবে না। বাকি সবাই নকল হিজড়া।
হিজড়া সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি : তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ২০১৩ সালে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় হিজড়া সম্প্রদায়। ওই বছরের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করে এ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। ফল হিসেবে অনগ্রসর ও অবহেলিত এ সম্প্রদায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান, মতপ্রকাশ, ভোটাধিকার ও পাসপোর্টে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে নিজেদের পরিচয় লেখার সুযোগ পাবে এবং মসজিদে, মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এরপরও হিজড়াদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। হিজড়ারাও পাননি নীতিমালা অনুযায়ী সত্যিকারের তৃতীয় লিঙ্গের মর্যাদা।
পাঠকের মতামত