প্রকাশিত: ১০/০৯/২০১৭ ২:১০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৪৬ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দাদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। প্রায় চারদশক ধরে নির্যাতনে শিকার হয়ে মিয়ানমারের নিজ ভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। এতে নিজ দেশে সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন উখিয়া-টেকনাফের বাসিন্দারা।

কক্সবাজার পরিসখ্যান অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান জানান, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী উখিয়া ও টেকনাফের মোট জনসংখ্যা ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৬৮ জন। শুমারির নিয়ম অনুযায়ী শতকরা ৫ থেকে ৬ ভাগ এই সংখ্যার সঙ্গে যোগ করলেও উখিয়া-টেকনাফের মোট জনসংখ্যা ৫ লাখের বেশি হবে না।

ইউএনএইচসিআর এর সূত্রমতে, ১৯৭৮, ১৯৯১, ১৯৯২, ১৯৯৪ ও ২০১৬ সালে পাঁচদফায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের চলমান পরিস্থিতিতে গত ১৬ দিনে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৩ লাখ (জাতিসংঘের তথ্যমতে) রোহিঙ্গা। যদিও স্থানীয়দের মতে, এ পর্যন্ত এসেছে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা ঢুকে টেকনাফ ও উখিয়ায়। সে হিসেবে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার ভারে মুহ্যমান উখিয়া-টেকনাফ উপজেলা। উখিয়া-টেকনাফের বাইরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।

ফলে নিজ উপজেলা ও সংসদীয় আসনে এখন সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে উখিয়া-টেকনাফের মানুষ। আর ভিনদেশি রোহিঙ্গারা সংখ্যার হিসেবে এখন উখিয়া-টেকনাফে সংখ্যাগরিষ্ট।

পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল আলীম নোবেল জানান, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা আগে থেকেই ছিল। এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। উখিয়া-টেকনাফের ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৬ একর আয়তনে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। রোহিঙ্গা পরিস্থিতির এই সংকট দ্রুত নিরসন না হলে নিজ দেশে স্থানীয়রা হয়ে যাবে পরবাসী।

মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাশূন্য করতে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতা এখন বাংলাদেশের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের কারণে টেকনাফ-উখিয়ার অবস্থা এখন ভয়াবহ। দ্বিগুণ রোহিঙ্গার কারণে স্থানীয়দের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে। বনজ সম্পদ, ক্ষেত-খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয়দের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট সব জায়গার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। দুর্গন্ধে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে স্থানীয়দের তাদের বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, মানবতার চাদরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও স্থানীয়রা এখন কঠিন সময় পার করছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শুধু উখিয়া-টেকনাফের নয়, সারাদেশের অবস্থাও ভয়াবহ হবে। সুত্র: বাংলানিউজ

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা সংকটে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করবে আইওএম ও এইচসিআই

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং কানাডার প্রাচীনতম মুসলিম ত্রাণ সংস্থা হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (এইচসিআই) ও ...

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ সম্পন্ন

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ...

রোহিঙ্গা নারীকে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরখাস্ত

এক রোহিঙ্গা নারীকে অবৈধভাবে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ...

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নির্বাচন :সভাপতি জসিম, সম্পাদক তানভীর

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৫-এর ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার (৬ ...