ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০২/১১/২০২৩ ১১:১০ এএম

সরকারের মেগা প্রকল্প দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের নির্মাণকাজ সমাপ্তির পথে। আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। এর বদৌলতে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। বাণিজ্যিকভাবে ১ ডিসেম্বর থেকে এ রুটে ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে যা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। সূত্রের খবর, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে নন-এসি আসন ৫১৫ টাকা এবং এসি আসন ৯৮৪ টাকা ভাড়া উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হলে মাসে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবির আমাদের সময়কে জানান, ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চালু হচ্ছে। আগামী ১৩ নভেম্বর এর উদ্বোধন হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বর ট্রায়াল রান হবে। ট্রেনের নাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকেও নাম দিতে পারেন। ভাড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ড. হুমায়ুন কবির বলেন, আশা করি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর ডিসেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে এ রুটের ট্রেন। তিনি জানান, ঢাকা-কক্সবাজার রুটের জন্য ‘ট্যুরিস্ট কোচ’ আমদানি করা হবে। এসব কোচের জানালাগুলো আকারে বড় হবে যেন যাত্রীরা বাইরের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার ৫৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে নন-এসি আসনের জন্য ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ৫১৫ টাকা, এসি আসন ৯৮৪ টাকা, এসি কেবিন ১১৮৫ টাকা এবং এসি স্লিপিং বার্থ ১৭৭১ টাকা। এ ট্রেনে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যাবে। ঢাকা থেকে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে, কক্সবাজারে পৌঁছবে ভোর সাড়ে ৬টায়। দুপুর একটায় ফের ঢাকার পথে রওনা হবে।

ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন, চট্টগ্রামের দুটি স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে এ ট্রেনের। এই আন্তঃনগর ট্রেনে ৭৩৭ থেকে ৭৯৭টি আসন থাকবে। ২টি খাবার কোচ, পাওয়ার কার ১টি, এসি কেবিন ৩টি, এসি চেয়ার কোচ ৫টি, শোভন চেয়ার কোচ ৬টি ও ১ম শ্রেণির ১টি কোচ থাকবে।

রেল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে চালু হতে যাওয়া ট্রেনের জন্য বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে- প্রবাল এক্সপ্রেস, হিমছড়ি এক্সপ্রেস, ইনানী এক্সপ্রেস, লাবনি এক্সপ্রেস ও সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস প্রভৃতি। এগুলো থেকে একটি বাছাই হতে পারে আবার এর বাইরেও কোনো নাম দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলরুট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে পর্যটননগরী কক্সবাজারের সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে পর্যটকরা সহজেই সমুদ্রসৈকতে যেতে পারবেন। এ ছাড়া ওই অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য, সামুদ্রিক মাছ ও বনজ সম্পদ দ্রুত, সহজে ও সুলভে দেশের অন্যান্য এলাকায় পরিবহন করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। বিশে^র সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকতকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি পর্যটক ভিড় করেন সেখানে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চলবে এমন স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এ রেলপথের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। প্রকল্পের আওতায় রেললাইন ছাড়াও ৯টি স্টেশন করা হয়েছে। ৬তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ঝিনুক আকৃতির কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে সব ধরনের অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলে। এরপর সড়ক পথে যেতে হয় কক্সবাজার। এজন্য চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার অন্তত চার ঘণ্টা সময় লাগে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে সুবর্ণ এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, তূর্ণা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী/গোধূলি এক্সপ্রেস চলাচল করে। এর মধ্যে সুবর্ণ এক্সপ্রেসে মাসে গড়ে ৪৭ হাজার ৬৩৯ জন, সোনার বাংলায় ৩৬ হাজার ৮৩৯ জন, তূর্ণা এক্সপ্রেসে ৫৫ হাজার ১৮৫ জন এবং মহানগর প্রভাতী/গোধূলিতে ৮৩ হাজার ৬২১ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয় সুবর্ণ এক্সপ্রেসে; মাসিক পরিমাণ ২ কোটি ৮১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৫ টাকা। আমাদের সময়

পাঠকের মতামত

এমএসএফের প্রতিবেদন৮৪% রোহিঙ্গার আশঙ্কা—মিয়ানমারে ফেরা নিরাপদ নয়

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস/মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ারস (এমএসএফ)-এর নতুন একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, মিয়ানমারে চরম সহিংসতার ...