![](https://www.ukhiyanews.com/wp-content/uploads/1-Dragoan-shipo.jpg)
চট্টগ্রামের ফল বাজারে যে সব ড্রাগন পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিষাক্ত টনিক আর হরমোন স্প্রে করার অভিযোগ উঠেছে। শীত মৌসুমে শহরের অলিগলি চেয়ে গেছে ড্রাগনে। টনিক ব্যবহারে লাল রঙের ড্রাগন এখন লাল সবুজে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন লোকজন জানিয়েছেন, নতুন ধরনের ড্রগনে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।
ফলটি বিদেশি হলেও এখন রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক চাষ শুরু হয়েছে। সময়ের সাথে বাড়তে থাকে এর ব্যাপকতা। সুন্দর লাল রং, অসাধারণ স্বাদ ও ঔষধি গুনসম্পন্ন হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ড্রাগন।
এ সুযোগে বাজারে চাহিদা থাকায় অসাধু চাষীরা অধিক লাভবান হওয়ার আশায় প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদ বাদ দিয়ে টনিকসহ বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগের দিকে নজর দিয়েছেন।
বাজারে শোনা যাচ্ছে, ড্রাগন ফলের আকার বড় করতে অধিকাংশ ড্রাগন চাষিরা ভারতের অনুমোদনহীন ড. ডন ড্রাগন টনিক ব্যবহার করছেন। যদিও তার উত্তরে সত্যতা পাওয়া যায়নি। বর্তমানে অনেকেই টনিকের পরিবর্তে প্লানোফিক্স ও পাওয়ার ট্যাবলেট পানির সাথে মিশিয়ে ফলন্ত ফলে স্প্রে করছেন।
ফলে ড্রাগন তার আসল লাল রং হারিয়ে লাল-সবুজে পরিণত হচ্ছে। রাসায়নিক এসব পদার্থ স্প্রে করার ফল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কি না, তা নিয়ে ক্রেতা সাধারণের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
ড্রাগন ফল ধীরে ধীরে যখন সাধারণ মানুষের কাছে পছন্দের একটি ফলের তালিকায় যোগ হতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে কতিপয় অসাধু কৃষক গাছে ফলটি থাকা অবস্থায় দ্রুত বড় করার জন্য হরমোন টনিক স্প্রে করছেন। স্প্রে করার ফলে একেকটি ফল ৪০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হচ্ছে।
নগরীর ফলমন্ডি, রেয়াজউদ্দিন বাজার, লালখান বাজার, কাজির দেউড়ি বাজার, চকবাজার কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতির লোকজন ও চট্টগ্রাম ফলমন্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ তৌহিদুল আলম জানান, ড্রাগন চাষে ক্ষতিকর এবং অনুমোদনহীন টনিক কিংবা হরমোনের ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে চাষি, এ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও কর্মকর্তার সাথে আমরা একাধিকবার কথা বলেছি। কিন্তু লাল বাদ দিয়ে সবুজ ড্রাগন আসতেছি বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, ড্রাগন চাষে গোপনে টনিক ব্যবহার হচ্ছে বলে নানা অভিযোগ পাচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে আমরা ড্রাগন চাষিদের প্রাকৃতিক ও জৈব সার ব্যবহারে উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকি। মাত্রাতিরিক্ত টনিক ব্যবহার শুধু ড্রাগন কেন, সব ফলের জন্যই ক্ষতিকর।
চট্টগ্রাম নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ড্রাগন ফলের বাজার মনিটরিং করছি। যেহেতু টনিক বা হরমোন স্প্রের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের ওজন বাড়ানো হচ্ছে বলে নানা অভিযোগ স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। সেহেতু ওই ড্রাগন ফল পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমরা ল্যাবে পাঠাবো।
প্রসঙ্গত, ড্রাগন ফল চীনা জাতীয় ফল। এটি এক প্রজাতির ফল, এক ধরনের ফণীমনসা (ক্যাক্টাস) প্রজাতির ফল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে এর মহাজাতি হায়লোসিরিয়াস (মিষ্টি পিতায়া)। এই ফল মূলত ড্রাগন ফল হিসেবে পরিচিত।
গণচীন-এর লোকেরা এটিকে আগুনে ড্রাগন ফল এবং ড্রাগন মুক্তার ফল বলে। ভিয়েতনামে মিষ্টি ড্রাগন বলে। ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ড্রাগন ফল বলে। থাইল্যান্ডে ড্রাগন স্ফটিক নামে পরিচিত। অন্যান্য স্বদেশীয় নাম হলো স্ট্রবেরি নাশপাতি বা নানেট্টিকাফল। এই ফলটি একাধিক রঙের হয়ে থাকে। তবে লাল রঙের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়।
পাঠকের মতামত