প্রকাশিত: ১৩/০৮/২০১৭ ৭:৫৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:১৫ পিএম

শামসুল আলম শারেক,টেকনাফ::
টেকনাফের লেদা কেন্দ্রীক ৬ জইন্যা “ইয়াবা সিন্ডিকেট” পুরো হ্নীলা এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রশাসনিক নজরদারীর অভাবে এই সিন্ডিকেটটি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। ইয়াবা বিরোধী অভিযান জোরদারের কারণে যখন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঠিক তখনই এই ৬ জইন্যা “ইয়াবা সিন্ডিকেট” দিবারাত্রি প্রকাশ্যে ইয়াবা আমদানী-রপ্তানী করছেন। এই সিন্ডিকেটকে হ্নীলা-টেকনাফে ভাই সিন্ডিকেট হিসেবে চিনেন। এদের দৌরত্মে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। উক্ত “ইয়াবা সিন্ডিকেট”র চালান ঢাকা-চট্টগ্রামে পাচার করতে গিয়েই স্থানীয় অনেকে এখনো কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এলাকাবাসী জানায়, লেদার জালাল আহমদের পুত্র আবু তাহের, হাসান মুরাদ, ভাতিজা ও মেয়ে জামাই রংগীখালী এলাকার মৃত ছিদ্দিক আহমদের পুত্র সরওয়ার, অপর মেয়ে জামাই লেদার মৃত আবুল মঞ্জুরের পুত্র মো: সেলিম, শ্যালিকার ছেলে পুর্ব লেদা এলাকার কামাল হোসনের পুত্র তোফাইল আহমদ এবং অপর ভাতিজা রংগীখালী এলাকার নুর আহমদ প্রকাশ আই মেম্বারের পুত্র হেলাল উদ্দিন সিন্ডিকেটের সদস্য। এলাকাবাসী আরো জানায়, সরওয়ার-হাসান-হেলাল-হাসান মুরাদ পরস্পর চাচাত ভাই। আর তোফাইল হলেন হাসান মুরাদ এবং হাসানের আপন খালাত ভাই। অন্যদিকে মো: সেলিম হলেন হাসানের ভায়রা ভাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ইয়াবা তালিকাতে লেদা এলাকায় হাসান মুরাদ এবং হাসানের নাম রয়েছে। একই তালিকায় রংগীখালী এলাকায় সরওয়ার এবং হেলালের নাম আছে। সর্বশেষ ইয়াবা তালিকায় সিন্ডিকেটের সব সদস্যের নাম রয়েছে। অনুসন্ধানে জানাগেছে, সেলিম এবং তোফাইল লেদা সীমান্ত দিয়ে আমাদানীকৃত ইয়াবার চালান গাড়ীতে করে কক্সবাজার পৌঁছিয়ে দেয়। সেখানে সরওয়ার এবং হাসান মুরাদ ইয়াবাগুলি রিসিভ করে আবার গাড়ী পাল্টিয়ে ঢাকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন। আর হেলাল ও হাসান ঢাকায় বসে সেই ইয়াবা ঢাকা শহর এবং উত্তর বংগের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করেন। এদিকে গত মাসে উখিয়ার বালুখালীতে শাহপরীরদ্বীপ হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে পুলিশের ইতিহাসে আটক সর্ব বৃহত ইয়াবার চালানটি এই সিন্ডিকেটের বলে জানা গেছে। হাইওয়ে পুলিশের হাতে ট্রাকসহ ইয়াবার চালান আটকের পর সিন্ডিকেট সদস্যদের ভূল বুঝাবুঝিতে হেলালকে অপহরণের মত ঘটনাও ঘটে। সে সময় ঘটনা ধামাচাপা দিতে উখিয়া কেন্দ্রীক শক্তিশালী তদবীরকারীর তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। এদিকে ৬ জইন্যা এই ইয়াবা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিভাবক এবং স্থানীয় সচেতন মহল ইউএনও, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদন সুত্র জনায়, পূর্ব লেদা সীমান্ত, লেদা ছুরি খাল এবং জাদীমুরা ওমর খাল দিয়ে রাতে, সুযোগ বুঝে দিনের বেলায় বস্তা বস্তা ইয়াবা আমদানী করছে। উল্লেখিত পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা তুলে অস্ত্র শস্ত্র সজ্জ্বিত হয়ে মোটর সাইকেল-সিনএজিতে করে তোফাইল এবং সেলিমের বাসায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাদের নিজস্ব গাড়ীর যোগানে করে ইয়াবার চালান ঢাকা-চট্টগ্রামে পাচার করে। এলাকাবাসী জানায়, ভাই সিন্ডিকেটের মালিকানাধীন দেড় ডজন ট্রাক-মিনি ট্রাক, নোহা গাড়ী, মাস অন্তর রং পরিবর্তন করে কৌশলে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করছেন। হ্নীলা সীমান্তে ইয়াবা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে “ভাই সিন্ডিকেট”র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী ২বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল আরিফুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার ড: একেএম ইকবালের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (টেকনাফ অস্থায়ী সার্কেল) পরিদর্শক লুকাশীষ চাকমা জানান, খোঁজ নিয়ে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শেখ মো: আশরাফুজ্জামান জানান, মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আমরা সব সময় জিরো টলারেন্স। অভিযুক্ত ইয়াবা সিন্ডিকেটের তৎপরতার বিষয়ে আমরা আগে থেকেই অবগত এবং তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।#

 

পাঠকের মতামত

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেলপথে ওভারপাস ফাঁকা, হাতিরা আসে না

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেলপথে বন্যপ্রাণী রক্ষায় গড়ে তোলা হয়েছিল এশিয়ায় সর্বপ্রথম ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’। উদ্দেশ্য ছিল– বন্যহাতির জীবন ...