
কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবা ও অস্ত্র পাচারে সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকটের নাম প্রকাশ্যে আসছে শুরু করেছে। ‘ইসলাম গ্যাং’ নামের এই সিন্ডিকেটটি দীর্ঘ সময় আওয়ামীলীগের নেতাদের আশ্রয়ে অপকর্ম করে বেড়ালেও এখন বন্ধ হয়নি তা। ৬ জুলাই এই সিন্ডিকেটের দুই সদস্য এক লাখ ইয়াবা সহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১০ গ্রামজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।
এলাকাবাসি জানিয়েছেন, ইয়াবা ও অস্ত্র পাচারে জড়িত ইসলাম গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। প্রতি রাতে কোন না কোন এলাকায় এই গ্যাং লিডারের নেতৃত্বে ফাঁকা গুলি বর্ষণ সহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তারা।
কক্সবাজারস্থ র্যাব ১৫ এর সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) সহকারি পুলিশ সুপার আ ম ফারুক প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির তথ্য মতে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৬ জুলা্জই সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবনিয়া এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। এসময় ১ লাখ ইয়াবা সহ দুইজন মাদক কারবারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের দেয়া তথ্য মতে তাদের একজন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. মনির (৩২) এবং অপর জন মাদারবনিয়া এলাকার রশিদ আহমদের ছেলে মঞ্জুর আলম (২৮)।
গ্রেপ্তার দুই জন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বহুল আলোচিত ‘ইসলাম গ্যাং’ এর সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
ছোট হাবির পাড়ার প্রবীণ ব্যক্তি আবদুল গফুর জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের আগের রাতে দুই জনকে সাথে নিয়ে ইসলাম, রাসেল ও কালা রফিককে এলাকায় মহড়া দিতে দেখা গেছে। সংঘবদ্ধ গ্যাংটি দীর্ঘ সময় ধরে ইয়াবা ও অস্ত্র পাচারে জড়িত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে সাধারণ মানুষকে নানাভাবে নির্যাতন ও অত্যাচার করা হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসির দেয়া তথ্য মতে , ছোট হাবির পাড়ার ছৈয়দ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইসলামের নামেই এই গ্যাংটি পরিচালিত হয়ে আসছে। টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা শাকের আহমদের ছোট ভাই ইসলাম। এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিচালনা করে দীর্ঘ সময় ধরে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ভারী দেশী-বিদেশী অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে দখল, ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসা করে যাচ্ছে তারা।
এলাকাবাসির অভিযোগ, গত ১৫ বছর ধরে এই গ্যাংটি এলাকায় তাণ্ডব করে যাচ্ছে। অস্ত্রধারি হওয়ায় কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজী নন। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছোট হাবির পাড়া, নাজিরপাড়া, মৌলভী পাড়া, কচুবনিয়া পাড়া, খোনকার পাড়া, গোদার বিল, মহেশখালীয়াপাড়া, ডেইল পাড়া ঘিরে গ্যাংটি তাদের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, মোহাম্মদ ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে ইতিমধ্যে ৬ টির বেশি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে একটি জায়গা দখলে ঘটনায় একটি বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে পরিবারের সদস্যদের হত্যার চেষ্টা, পুলিশের উপর হামলা-গুলি বর্ষণ, চাঁদা দাবি, হত্যার চেষ্টা সহ ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামীলীগের আমলে ভাইকে ব্যবহার করে এমন অপকর্ম করে বেড়ালেও বর্তমানেও অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়নি গ্যাংটি অত্যাচার। বরং ৬ জুলাই ইয়াবা সহ র্যাবের হাতে দুই সদস্য গ্রেপ্তারের পর তথ্য পাচারের অভিযোগে এলাকায় তিন বাড়ির সামনে রাতে গুলি বর্ষণ করে ওই পরিবারের সদস্যদের হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে থানায়ও লিখিত অভিযোগ করার তথ্য মিলেছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, আমি ওই ধরণের লোক না। এলাকা এসে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখতে পারেন। যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ধরণের কোন অভিযোগ হাতে আসেনি। ইসলাম সম্পর্কে পুলিশ খোঁজ খবর নিচ্ছে। সৌজন্যের দৈনিক যুগের চিন্তা
পাঠকের মতামত