প্রকাশিত: ২১/১০/২০১৭ ৯:৪৯ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:৫৭ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের সাথে মিশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। যদিও রোহিঙ্গাদের একটি নির্ধারিত স্থানে রাখতে এবং উখিয়া-টেকনাফের বাইরে ছড়িয়ে পড়া রুখতে কক্সবাজার জেলাসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-উপসড়কে ১৩৮টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এসব তল্লাশি চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অধিকাংশই বৃহত্তর চট্টগ্রামের বাসিন্দা না হওয়ায় তারা স্থানীয়দের সাথে রোহিঙ্গাদের আলাদা করতে খুবই হিমশিম খাচ্ছে। এই সুযোগে পরিচয় গোপন করে রোহিঙ্গারা উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পের বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে।
গতকাল কক্সবাজার শহরতলীর বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন আসা কয়েকশত রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে স্থানীয়দের সাথে মিশে গেছে। এখানে আগে থেকে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা পরিবারেই ঠাঁই নিয়েছে তারা। একই অবস্থা কক্সবাজার শহরের নূনিয়াছড়া, নাজিরারটেক ও পাহাড়তলী এলাকায়। এছাড়া শহরের কলাতলীতেও ঠাঁই নিয়েছে অনেকে। এ বিষয়ে তাদের প্রশ্ন করা হলে উল্টো স্থানীয়রা ধমকের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর টিমে কক্সবাজার অঞ্চলের বাসিন্দাদের অর্ন্তভূক্ত করুন

শুধু কক্সবাজার শহর ও শহরতলী নয়, সদরের খুরুশকুল, ভারুয়াখালী, রশিদনগর, ঈদগাঁও, রামুর জোয়ারিয়ানালা, গর্জনীয়া, রাজারকুল, কাউয়ারখোপ, ঈদগড়, চকরিয়ার খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, বরইতলী, হারবাং, পেকুয়া, লামার আজিজনগরসহ দেশের অন্যান্য স্থানে ইতোমধ্যে অর্ধলক্ষ রোহিঙ্গা পরিচয় গোপন করে লুকিয়ে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর সহিংসতা শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। তাদের একটি নির্ধারিত স্থানে রাখতে এবং উখিয়া-টেকনাফের বাইরে ছড়িয়ে পড়া রুখতে ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৫টি তল্লাশি চেকপোস্টসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-উপসড়কে ১৩৮টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হলেও এসব চেকপোস্টে দায়িত্বরত সদস্যদের অধিকাংশই বৃহত্তর চট্টগ্রামের বাসিন্দা না হওয়ায় তারা স্থানীয়দের সাথে রোহিঙ্গাদের আলাদা করতে খুবই হিমশিম খাচ্ছে। যদিও অধিকাংশ রোহিঙ্গাকেই তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে চতুর রোহিঙ্গারা ঠিকই তল্লাশি চেকপোস্টের ফাঁক গলে কক্সবাজার শহরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।
রোহিঙ্গারা চাটগাঁইয়া আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললেও তাদের নিজস্ব একান্ত কিছু শব্দ রয়েছে। যে কারণে কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষ রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে সহজেই তাদের চিহ্নিত করতে পারে। কিন্তু এ সুক্ষè পার্থক্যগুলো অন্য এলাকার মানুষের পক্ষে চিহ্নিত করা সহজ নয়। ফলে তল্লাশি চেকপোস্টের দায়িত্বে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর কক্সবাজার অঞ্চলের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া উচিৎ।
এবিষয়ে গতকাল কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-৭ ক্যাম্পের ইনচার্জ মেজর রুহুল আমিনের সাথে কথা বললে তিনি আমার সাথে একমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন- কক্সবাজার অঞ্চলে বেশ কিছুদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছি। তবু ভাষা জটিলতার কারণে স্থানীয়দের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের আলাদা করা অনেকটা কঠিনই।
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের ওসি রনজিত কুমার বড়–য়াও মনে করেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ রোহিঙ্গাদের সহজে চিনতে পারলেও অন্য এলাকার মানুষের পক্ষে তা অনেক কঠিন।
গতকাল কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সাথে কথা বললে এবিষয়ে তিনিও একমত হন। তিনি বলেন- রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করা স্থানীয়দের পক্ষে অনেক সহজ। তাই চেকপোস্টের দায়িত্বে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে স্থানীয়দের নিয়োগ দিলে রোহিঙ্গা চিহ্নিতকরণ সহজ হবে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...