শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৫ ঘণ্টা রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বসিয়ে রাখা হয়েছিল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে। সেই ১৫ ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, কারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কোনো আসামিকে এ সময় হাজির করা হয়েছিল কি না, এ সময় বাবুল আক্তারই-বা কী বলেছেন—এসব নিয়ে রহস্যের যেমন অন্ত নেই তেমনি নানা কথাও ছড়াচ্ছে চারদিকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ ঘণ্টা ‘জিজ্ঞাসাবাদের’ জন্য বসিয়ে রাখা হলেও মূলত বাবুল আক্তারকে শুক্রবার রাতে ১৫ মিনিট ও শনিবার বিকেলে ১৫ মিনিটের মতো ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করেছেন। এ সময় মামলাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলার চেয়ে বাবুল আক্তারকে পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে বেশি। তাঁকে জানানো হয়, ‘ওপরের সিদ্ধান্ত’ অনুযায়ী তাঁকে চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। তা না হলে বিপদে পড়তে হবে। বাবুল আক্তারকে দ্রুত তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলে সেখান থেকে চলে যান ওই কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের এসব তথ্য পুলিশ সদর দপ্তরসহ ঢাকায় থাকা পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারাও জেনে গেছেন। তাঁদের মাধ্যমে এসব খবর প্রকাশ হচ্ছে সংবাদমাধ্যমেও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, বাবুল আক্তারকে চাকরি ছাড়ার কথা বলা হয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু কী কারণে তাঁকে চাকরি ছাড়তে বলা হয়েছে সে বিষয়টি পরিষ্কার করেননি তিনি। ‘ওপরের সিদ্ধান্ত‘ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরও দেননি তিনি। কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছিল, বাবুল আক্তারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হয়েছে। এ সময় তিনি চট্টগ্রামে পোস্টিং নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা দেন পরবর্তী সময়ে বদলির সময় হলে তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে চট্টগ্রামে দেওয়া হবে। কিন্তু এর আগেই বদলে যায় দৃশ্যপট। অন্যদিকে খুন হওয়ার পর মিতুর চরিত্র হননসহ বিভিন্ন বিষয় গণমাধ্যমে আসায় বিষণ্ন হয়ে পড়েছেন বাবুল আক্তার। আত্মীয়দের জানাচ্ছেন তিনি নিজেই কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁর স্বজনরা জানান, বাবুল অক্তারকে সুকৌশলে মিতু হত্যা মামলার আসামি করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বাবুল চুপ আছেন, নাকি তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে—এরও কোনো সদুত্তর মিলছে না। নিরাপত্তা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে : বাবুল আক্তার ঢাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ওঠার পর থেকেই সেখানে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যেদিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সেদিনও বাড়ির সামনে ছিল পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মেরাদিয়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে কোনো পুলিশ পাহারা নেই। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানান, সোমবার রাতে বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ চলে গেছে। কী কারণে পুলিশ চলে গেছে এ বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারেননি। গতকাল দুপুর ১টার দিকে খিলগাঁও থানার সাব-ইন্সপেক্টর মনিরকে এ বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলাম।’ ১৫ ঘণ্টায় জিজ্ঞাসাবাদ ৩০ মিনিট : পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১টার সময় বাবুল আক্তারকে তাঁর শ্বশুরের বাড়ি থেকে পুলিশ নিয়ে যায় মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে। সেখানে তাঁকে পরদিন শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাখা হয়। এই ১৫ ঘণ্টায় বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দুই দফায় ৩০ মিনিটের মতো। তদন্তসংক্রান্ত বিষয়ে কথা হয় মাত্র এক বাক্যে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় মুছা নামের কাউকে তিনি চেনেন কি না। জবাবে বাবুল বলেন, ‘মুছাকে চিনি। মুছা পুলিশসহ আরো কয়েকটি সংস্থায় সোর্স হিসেবে কাজ করে। আমিও তাকে সোর্স হিসেবে কাজে লাগিয়েছি।’ জিজ্ঞাসাবাদকারী পুলিশ কর্মকর্তারা এ সময় বাবুল আক্তারকে চাকরি ছাড়ার চাপ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নিয়েছেন—এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাবুল আক্তার কথা না বলার কারণে এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জানার জন্য বাবুল আক্তারের মোবাইল ফোনে গতকাল মঙ্গলবার একাধিকবার ফোন দিলেও তা তিনি ধরেননি। এমনিক তাঁর শ্বশুরের বাসায় গিয়ে কথা বলতে চাইলেও তিনি দেখা করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল কেউ কথা বলতে রাজি হননি। কথা বলার জন্য গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। বাবুল আক্তার নজরদারিতে নেই : গত শুক্রবার বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর শনিবার বিকেলে মেরাদিয়ার বাসায় তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে আসে পুলিশই। এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়, বাবুল আক্তারকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানতে গতকাল মঙ্গলবার ওসমানী মিলনায়তনে মাদকবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আলোচনা সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘না, সে নজরদারিতে নেই। সে আমাদের নজরদারিতে আছে বলে আমরা কখনো বলিনি।’ বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও বলেন, ‘যারা বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে হত্যা করেছে, বাবুলকে তাদের মুখোমুখি করা হয়েছিল। তিনি এদের চেনেন কি না বা হত্যার রহস্য কী, তা উদ্ঘাটনেই এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খুনিদের শনাক্ত করা হয়েছে। যারা হত্যা করেছে, তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরার প্রক্রিয়া চলছে।’ চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিলেও কী কারণে মিতুকে খুন করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু স্পষ্ট করেনি পুলিশ। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ধৈর্য ধরেন। গোয়েন্দারা প্রতিবেদন দিক, তারপর আমরা সব বলতে পারব। আপনাদের কাছ থেকে একটু সময় নিচ্ছি আমরা।’ এসপি হওয়ার পর বাবুলকে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ চাইছিল বলে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আপনি (সাংবাদিক) কিভাবে জানলেন?’ প্রচণ্ড মানসিক চাপে বাবুল : মিতু হত্যার পর থেকেই বাবুল তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকছেন মেরাদিয়া এলাকায় শ্বশুরের বাসায়। স্বজনরা জানায়, একদিকে তাঁর সামনেই দুই সন্তান মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। স্ত্রী হারানোর বেদনার সঙ্গে সন্তানদের এমন পরিস্থিতি। এর ওপর তিনি নিজেই স্ত্রী হত্যার সঙ্গে জড়িত—এমন সংবাদ আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। স্ত্রী ও তাঁর নিজের চরিত্র হনন করা সংবাদও দেখতে হচ্ছে তাঁকে। এ ছাড়া রয়েছে পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার চাপ। সব মিলিয়ে বাবুল মুষড়ে পড়েছেন বলে জানায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গতকাল বাবুল আক্তারের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন সাংবাদিক তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য বাড়ির লোকজনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন। তবে স্বজনরা জানাচ্ছে, বাবুল আক্তার কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। তাঁকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলতে পুলিশের তরফ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। যে কারণে তিনি কারো মোবাইল ফোনও ধরছেন না, আবার সরাসরি দেখাও করছেন না। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, বাবুল আক্তারের শ্যালিকা বোনের দুই সন্তানকে যত্ন করছেন। তাদের হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি একটি মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। তাঁর স্বামীও একজন ডাক্তার। পরিবারের সবাই মিলে বাবুল আক্তার ও তাঁর দুই সন্তানকে মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করছে। স্বজনদের একজন জানান, গত সোমবার বিকেলে বাবুল আক্তার দুই সন্তানকে নিয়ে বাসার বাইরে বের হয়েছিলেন। বাবুল আক্তারও চান দুই সন্তান মাকে ভুলতে পারার মতো অবস্থায় ফিরে আসুক। পরিবার বিশ্বাস করে না মিতু হত্যার সঙ্গে বাবুল জড়িত : বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি নিজেই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তদন্তসংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন কথা প্রচার করেছে। স্ত্রীকে সরিয়ে দিলে বাবুলের কী লাভ হবে সে বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। তদন্তের কোন পর্যায় থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে—এ প্রশ্নের উত্তরও মিলছে না। মিতুর মা-বাবাসহ তাঁদের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা হয় কালের কণ্ঠ’র। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না বাবুল আমার মেয়ে হত্যায় জড়িত। ১২ বছর আমার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঘরসংসার। বাবুলকে ছাড়া মিতু ১২ দিনও আমার বাসায় একা থাকেনি। তাদের মাঝে কোনো বিষয় নিয়ে সমস্যা হলে সেটা আমরা অবশ্যই জানতাম।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুলের শ্যালিকা বলেন, ‘আমরা কী করে বিশ্বাস করি আপার সঙ্গে দুলাভাইয়ের সম্পর্ক খারাপ ছিল। কোনো দিনও শুনিনি। আর যদি আমরা বিশ্বাসই করতাম যে দুলাভাই আমার আপাকে খুন করেছে তাহলে কি আমরা তাকে এখানে আশ্রয় দিতাম? রেঁধে-বেড়ে খাওয়াতাম?’ এই যখন পরিস্থিতি তখন বাবুল আক্তারের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এর পেছনে বিশাল কোনো খেলা চলছে। যে খেলার বিষয়ে বাবুলও হয়তো অন্ধকারে।’ ষড়যন্ত্রের গন্ধ : বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যদি বাবুল তার স্ত্রীকে হত্যাই করে তাহলে এত পরিকল্পনা করে করতে হতো? চট্টগ্রামের পুলিশ অফিসার হিসেবে তার জানার কথা ঘটনাস্থলে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা আছে। তাহলে কেন আসামিদের দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে যে বাবুলই এর সঙ্গে জড়িত?’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি তাকে চাকরি থেকে পদত্যাগের চাপ দেওয়া হচ্ছে। এটাই নানা রহস্যের জন্ম দিচ্ছে। সে যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার চাকরি তো এমনিতেই চলে যাবে। তাকে চাকরি ছাড়ার চাপ দিতে হবে কেন? আর যদি সে দোষী না হয় তাহলে কেন এত কথা হচ্ছে? কেন তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো বড় ধরনের ষড়যন্ত্র কাজ করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, বাবুল আক্তারের কোনো অভিযানের কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাখোশ হয়েছেন। এ কারণে বাবুলকে শায়েস্তা করতে এত বড় প্ল্যান।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাবুল আক্তারের রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়েও মিডিয়াতে আলোচনা দেখছি। আমার প্রশ্ন হলো, সে ১১ বছর আগে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাড়ে সাত বছর চাকরি করছে। এই সময়ের মধ্যে তার ভূমিকা কী ছিল? এই সময়ের মধ্যেই সে এএসপি থেকে অতিরিক্ত এসপি ও এসপি পদে পদোন্নতি পেয়েছে। সে তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত তিন বছরে বিপিএম, পিপিএম পদক পেয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, একের পর এক পুরস্কার পাওয়া, অভিযানে কাউকে ছাড় না দেওয়া—এসব কারণেই বউকে মেরে বাবুলকে শিক্ষা দিতে চাইছে কোনো মহল।’ সূত্র কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত