প্রকাশিত: ০৫/০৯/২০১৬ ১২:৩৯ পিএম , আপডেট: ০৫/০৯/২০১৬ ১২:৩৯ পিএম

আমাদের সম্পর্কের প্রায় দুবছর হলো। আমরা দুজনই সমবয়সী এবং সম্পর্কটা হয়েছিল বেশিরভাগই ওর আগ্রহে। আমার সমবয়সী সম্পর্কের প্রতি বিশ্বাস না থাকার কারণে আমি প্রথমদিকে এতটা সিরিয়াস না থাকলেও, ওর ভালোবাসা আর সততার কাছে হার মেনে সিরিয়াস হওয়ার চেষ্টা করি। জানি না আসলে আমি আদৌ সিরিয়াস হতে পেরেছি কি না। কিন্তু আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে ও আমার প্রতি অনেক সিরিয়াস। কী রকম সিরিয়াস সেটার বর্ণনা না করলেও চলবে, কারণ আমার পর্যাপ্ত বয়স হয়েছে কারো সত্য বা মিথ্যা অনুভূতি যাচাই করার।

যাহোক, আমাদের সম্পর্কটা প্রথম দিকে অনেক ভালো চললেও দিন যত যাচ্ছে ততই মনে হচ্ছে যেন মধুরতা কমে যাচ্ছে। এর কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে ঝগড়া লাগা। আর এজন্য আমি ওকে পুরোপুরি দোষ দেবো না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দোষটা আমারই থাকে কারণ আমি অসম্ভব রকমের রগচটা একজন মানুষ। কোনোকিছুতে সহজে ছাড় দিতে চাই না, সেখানে দোষ আমার থাকলেও কখনোই সহজে মেনে নেওয়ার পাত্রি আমি নই। শেষমেষ ওকেই এসে সরি বলতে হয়। আর না হয় আমি ঝগড়া তুমুল পর্যায়ে চলে গেলে কথায় কথায় ব্রেকআপ করে ফেলার ভয় দেখাই। কারণ আমি বুঝে গিয়েছি যে এটাই ওর দুর্বল জায়গা তাই একটু সুযোগ পেলেই ওই জায়গাটাতে আঘাত করতাম। আর এজন্য আমার সন্দেহ লাগে মাঝে মধ্যে যে আমি কি আসলেই ওকে ভালোবাসি কি না। কেন না ওর প্রতি যদি এতই মায়া থাকতো তবে কি আমি এত সহজে ওকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলতে পারতাম!

ও মাঝেমধ্যে প্রশ্ন করে যে আমি ওকে আসলেই ভালোবাসি কি না? আসলেই ওর প্রতি সিরিয়াস কি না? আমার হাবভাব দেখে নাকি ওর মনে হয় যে আমি সিরিয়াস না ওর প্রতি। ও আমাকে অন্য মেয়েদের মেজাজ বা ধৈর্যের সঙ্গে তুলনা করে, তাদেরকে ফলো করতে বলে যেটা আমার মোটেও ভালোলাগে না। তবে হ্যাঁ, এটা সত্য যে আর যাহোক- ও আমাকে কখনো যেতে দেবে না, আর বিয়ে করলে আমাকেই করবে। কিন্তু আমি কেন যেন মাঝে মধ্যে দ্বিধায় পড়ে যাই ওকে বিয়ে করার ব্যাপারে। ওকে বিয়ে করলে আমি সুখী হতে পারব তো? ও যদি বিয়ের পর কোনোভাবে আমাকে কষ্ট দেয়! ও যদি পরিবর্তিত হয়ে যায়! ও আমার ভরণ পোষণ করতে পারবে তো আমার চাহিদা মতো? এসব নানা রকম চিন্তা-ভাবনা এসে আমাকে ঘিরে ধরে; তখন আমি এর কোনো উত্তর খুঁজে না পেয়ে নিজে নিজেকে দোষ দিতে থাকি। কিন্তু আবার এটাও সত্য যে আমি ওকে নিয়েই আমার ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি। ওর প্রতি আমার কেমন যেন একটা উদাসীন ভাব চলে এসেছে। তবে ওর কিন্তু সে তুলনায় আমার প্রতি মায়া আরও বেড়েছে। ঝগড়া লাগলে আমি অনেক খারাপ ব্যবহার করি, ওর বাপ মা তুলেও গালি দিই! যেটা মাথা গরম থাকার কারণে প্রথমে বুঝতে না পারলেও মাথা ঠাণ্ডা হওয়ার পর বুঝি এবং নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকি।

মাঝে মধ্যে আমার কি মনে হয় জানেন? আপু, ওকে যদি আমি ছেড়েই দিই তাহলে ও নিশ্চয়ই আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে পাবে, যে মেয়ে ওকে আমার মতো কষ্ট দেবে না, অন্তত ও শান্তিতে থাকতে পারবে। আপু, এইসব আজেবাজে চিন্তা-ভাবনা যখন মাথায় আসে, তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়, অসহ্য লাগতে শুরু হয় সবকিছু। আমি এসব থেকে কীভাবে বের হয়ে আসতে পারি একটু জানালে উপকৃত হব। আমার কি আলাদা করে কাউন্সেলিং এর প্রয়োজন আছে?

ANS

হ্যাঁ আপু, আমারও মনে হচ্ছে তুমি ওকে খুব মন থেকে ভালোবাসো না। মাঝে মাঝেই তোমার অবচেতন মন সম্পর্কটিকে বোঝা মনে করে আর তুমি সম্পর্ক ভাঙতে চাও। তোমার অতি অবশ্যই একজন মনোরোগ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। কথায় কথায় রেগে যাওয়া, মা বাবা তুলে গালাগাল করা এইসব আসলে মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ। এমনও হতে পারে যে অন্য কোন বিষয়ের হতাশা তুমি প্রেমিকের ওপরে ঝাড়ো।

তাই দেরি না করে একজন চিকিৎসকের কাছে যাও। এতে লাভ বৈ ক্ষতি হবে না!

পরামর্শ দিয়েছেন-
রুমানা বৈশাখী
লেখক ও রন্ধনশিল্পী
এডিটর ইন চার্জ (প্রিয় লাইফ-সায়েন্স ও প্রিয় আনসার)
প্রিয়.কম

বিশেষ দ্রষ্টব্য
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কাউন্সিলিং-এর ওপরে যখনই কোন শর্ট কোর্স হয়েছে বা কর্মশালা হয়েছে, আমি সেখানে যোগ দিয়েছি। আমার বিদ্যা বলতে এটুকুই। সবমিলিয়ে কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাউকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থকতা।

পাঠকের মতামত

পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা কক্সবাজারের ন্যাশনাল পার্ক

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে যে প্রাকৃতিক বনভূমিগুলোকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান ...

একটি পেঁয়াজের ওজন ৯ কেজি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ ফলাতে সক্ষম হয়েছেন ব্রিটিশ এক কৃষক। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ...