প্রকাশিত: ১০/০৯/২০১৭ ৭:৪২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৪৭ পিএম

কক্সবাজার প্রতিনিধি

অবশেষে কক্সবাজার বঙ্গোপসাগর উপকূলে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। গত দুইদিন ধরে কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটে ইলিশের ঝাঁপি নিয়ে ফিরছে ট্রলারগুলো। এর ফলে শহর ও শহরের বাইরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলো হয়ে ওঠেছে প্রাণচঞ্চল। মৎস্য ব্যবসায়ীরা ঘাটে আর জেলেরা সাগরে যাওয়া–আসা নিয়ে পার করছেন ব্যস্ত সময়।

গতকাল শনিবার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাট এবং শহরতলীর কলাতলী ও দরিয়ানগর ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, সাগর থেকে ইলিশ ধরে ফিরছেন জেলেরা। ঘাটে বা অবতরণ কেন্দ্রে পৌঁছার পরই ব্যবসায়ীরা ইলিশ কিনতে হামলে পড়ছেন ট্রলারে। ট্রলার থেকে পাইকারি দরে কিনে তারা বিক্রি করছেন খুচরা দরে। আবার কোন কোন ব্যবসায়ী ট্রাকে বোঝাই করে সেই ইলিশ সরবরাহ করছেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। আর জেলেরা ট্রলার থেকে মাছ বিক্রি করেই খাদ্য ও জ্বালানীসহ অন্যান্য রসদ নিয়ে ফের রওয়ানা দিচ্ছেন সাগরে। সাগর মোহনা ও বাঁকখালী নদীতে এখন ট্রলার আসা যাওয়ার সারি। আবার উপকূলবর্তী সাগরেও সারি বেঁধে মাছ ধরছে ট্রলারগুলো। আর এ দৃশ্য কক্সবাজার–টেকনাফ সমুদ্র সৈকত থেকে খালি চোখেই অবলোকন করা যাচ্ছে। এতে উপকূল ও ডাঙ্গায় মাছধরা উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজারের অধিকাংশ ট্রলারই রয়েছে সাগরে।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে এমন খবরে অধিকাংশ ট্রলারই এখন সাগরে রয়েছে। বাকী ট্রলারগুলোও সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি জানান, কক্সবাজারে প্রায় ৫ হাজার ফিশিংবোট রয়েছে। যার মধ্যে আশি ভাগের বেশি ট্রলার এখন সাগরে রয়েছে।

ফিশারীঘাটের ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী জানান, শুক্রবার থেকে ইলিশের ঝাঁপি নিয়ে ফিশারীঘাটে আসছে ট্রলারগুলো। এরমধ্যে কাইয়ূম সওদাগরের একটি ট্রলারেই এসেছে প্রায় ১৩ হাজার পিস ইলিশ। যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। তিনি জানান, গতকাল শনিবার একদিনের ফিশারীঘাট থেকে অন্তত পঞ্চাশ মেট্রিক টন ইলিশ রাজধানীর উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। আগেরদিনও প্রায় একই পরিমাণ ইলিশ ঢাকা ও উত্তর বঙ্গে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকী ইলিশগুলো স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করা হয়েছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরা বাজারে ইলিশের দামে আকার ভেদে রয়েছে ভিন্নতা। ৭শ থেকে ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম প্রতি কেজি ৭শ থেকে ৮শ টাকা। আর কেজিতে ৩টা ধরে এমন ইলিশের দাম প্রতিকেজি সাড়ে ৩শ টাকা। আবার কলাতলী ও দরিয়ানগরঘাটে আসা ইলিশের দাম একটু বেশি। এখানকার বোটগুলো উপকূলের অগভীর পানিতে মাছ ধরে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তাজা মাছ নিয়ে কূলে ফিরে। এ কারণে দাম বেশি হলেও এখানকার মাছের চাহিদা বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জুলফিকার আলী গত মৌসুমের মতো এ মৌসুমেও ব্যাপকহারে ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ব্লু–ইকোনমি তথা সমুদ্র সম্পর্কিত অর্থনীতি জোরদারে সরকারের গুরুত্বারোপ ও বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় বঙ্গোপসাগরে ইলিশের প্রাচুর্য বাড়ছে। গত বছর দেশে ইলিশ উৎপাদনে বিগত ১৮ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

পাঠকের মতামত

রামুর ফতেখাঁরকুলে উপ-নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে প্রচারনায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি ৩ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া ...

টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ দুদকের মামলা

টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ স্পেশাল ...