উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ থেমে যাওয়ায় কক্সবাজার জেলাব্যাপী বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। আকাশে মেঘ থাকলেও খানিক রোদের দেখা মিলেছে বিকেলে। তবে, বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ এখনও কমেনি।
এদিকে গত ৫ দিনের অব্যাহত অতিভারী বর্ষণ ও বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহেশখালীতে ১ জন, সদরের ইসলামাবাদে ১ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ৫ জন এবং সীমান্তের ঘুমধুমে ১ জন মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় রামু উপজেলার উত্তর ফতেখাঁরকুল চালইন্নাপাড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই সহোদর মো. শাহিন (১০) ও মো. ফাহিম (৮) প্রাণ হারায়। তারা ওই এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। দুই সহোদর বাড়িতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নানার বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। পরে মরদেহ উদ্ধার করে দাফন করা হয়।
উখিয়ার সোনাইছড়িতে বন্যার স্রোতে নিখোঁজ সামিরা আক্তার (১৪) নামে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। সে সোনাইছড়ি জাফর আলমের কন্যা এবং সোনাইছড়ি আয়েশা সিদ্দিকা বালিকা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার ভারি বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় ঢলের পানিতে সামিরা আকতার ভেসে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তার মরদেহ উদ্ধার করে দাফন করা হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, মধ্যম রত্নাপালং গ্রামের মৃত অমূল্য বড়ুয়ার ছেলে ইতুন বড়ুয়া (১৫) ও রত্নাপালং সাদৃকাটা গ্রামের কামাল উদ্দিন (৬০) নামের একজনের মরদেহ বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়েছে। বুধবার ভারি বর্ষণে ঢলের পানিতে রাব্বি নিখোঁজ হয়। উখিয়ার হলদিয়া পালং চৌধুরীপাড়া গ্রামে বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর ডুবে থাকা নিজ খালাকে দেখতে গিয়ে পানিতে ভেসে যায় ইতুন বড়ুয়া।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হলদিয়া পালং ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের বাড়ির পেছনের খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে বুধবার উখিয়ার পালংখালী আনজুমানপাড়ায় দেয়ালচাপায় সরওয়ার আলমের ৭ বছরের শিশু শাহরিয়ার হোসেন রাব্বি ও উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুমে পাহাড় ধসে চেমন খাতুন (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। একই দিন সন্ধ্যায় রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃকাটা নামক এলাকায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বন্যার পানি দেখে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মো. ইসলাম সাওদাগর (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
হিমছড়ি বড় ঝর্ণা সংলগ্ন সমুদ্র সৈকত থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়। পাহাড় ধসে মারা যায় মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মহুরাঘাটা এলাকার মনোয়ার আলম নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। এদিন ঢলের পানিতে খেলতে নেমে উম্মে সালমা (৭) নামে কন্যা শিশু মারা গেছে। সালমা ওই এলাকার আব্বাস মিস্ত্রীর মেয়ে। সবমিলিয়ে গত ৫ দিনে ১১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বন্যায় নিহতদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হয়েছে।
সূত্র-জাগো নিউজ।
পাঠকের মতামত