
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত তীরবর্তী শহর কক্সবাজারকে নিয়ে ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, তার মধ্যে এ স্বপ্ন সৃষ্টি করেছিলেন তার বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শনিবার (৬ মে) দুপুরে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬২ এবং ১৯৬৪ সালে বাবা- মায়ের সঙ্গে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করতে এসেছিলাম। তখন আমার বাবা সৌর্ন্দযময় এ সমুদ্র সৈকতকে নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলতেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। তবে এরপরও সমুদ্র সৈকতকে আরও বেশি আর্কষণীয় করতে আমার ভেতরে স্বপ্ন তৈরি হয়। এ স্বপ্ন আমি বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর।’
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীকক্সবাজারকে একটি অবহেলিত এলাকা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছিলাম। তখন দেখেছি এই এলাকার জীবনমান কত খারাপ। যোগাযোগ ব্যবস্থার ভয়াবহতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম ১২০ কিলোমিটার বালুকাময় সৈকত এখানে। এর সৌর্ন্দয আরও আকর্ষণীয় করতে যা যা করার দরকার তাই করা হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রেজুখাল ব্রিজ নির্মাণে ও সৈকতের কলাতলী থেকে দুই কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কেবল পর্যটনের বিকাশ নয়, সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জীবনমানের ও আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন হবে।’
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপভোগ করেনসড়কটি নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে পাহাড় ধসে নিহত ছয় সেনা সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং পরিবারের প্রতি সমবদেনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার বিমান বন্দরে পৌঁছান। পরে মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে ইনানী আসেন। সেখানেই ২৮ কিলোমিটার পয়েন্টের ফলক উন্মোচনের মধ্যদিয়ে এই সড়কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গণপূর্তমন্ত্রী মোশারফ হোসেন, পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌ-বাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজাম উদ্দিন মোহাম্মদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরারসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভএর আগে কক্সবাজারে বাণিজ্যিকভাবে বোয়িং বিমান চলাচলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা থেকে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমান ‘মেঘদূত’ এ করে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার বিমান বন্দরে এসে পৌঁছান। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিমান চলাচলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন শহর কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানের চলাচল শুরু হল।
শনিবার বিকালে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি কক্সবাজারে আরও ৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৮ টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করবেন।
ছবি: ফোকাসবাংলা।

পাঠকের মতামত