৫০টি গরিব অসহায় নিরিহ পরিবারের লোকজনকে ফাঁদে ফেলে মিথ্যা জাল দলিল সৃজন করে আলিমুদ্দিন ওয়াকফ এস্টেটের মালিকানাধীন জমি বিক্রি করে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে এলাকা থেকে লাপাত্তা হয়েছে প্রতারক চক্রের প্রধান হোতা নুরুল কবির। সে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের মেদাকচ্ছপিয়া মসজিদ পাড়া পূর্ব পাহাড় গ্রামের মৃত শহর মুল্লুকের পুত্র বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট দারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতারক নুরুল কবিরকে চকরিয়া থানা পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রহস্থরা চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দা মৃত হাকিম আলীর পুত্র আজিজুল ইসলাম, মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র নুরুল আলম, মৃত আবু তালেবের পুত্র জিয়াবুল, আশরাফুজ্জামানের পুত্র বদি আলম, মৃত ইয়াছিন আলীর পুত্র আবু বকরের অভিযোগে জানা যায়, বিগত ১৯৯৮ সাল থেকে নুরুল কবির প্রকাশ-ডাকাত নুর কবির (৫৩) ইউনিয়নের মেদাকচ্ছপিয়া মসজিদ পাড়া-পুর্ব পাহাড় গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধীক অসহায় লোকজনকে ভিটে জমি সাফ বিক্রির কথা বলে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ভূয়া জাল দলিল সৃজন করে ইতিমধ্যে তাদেরকে দখল সত্বও বুঝিয়ে দেন। ঘটনাটি এলাকায় জানা-জানি হলে প্রতারক ডাকাত সর্দার নুর কবির ধামা-চাপা দিতে নানা চলচাতুরি শুরু করেন।
তাদের অভিযোগে আরো জানা যায়, বসত বাড়ীর জমিগুলো মূলত খুটাখালী আলীমুদ্দিন ওয়াকফ এস্টেটের। দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার নিরিহ লোকজন এসব জায়গা দখল করে ভোগ করে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় একই এলাকার ডাকাত নুর কবির স্থানীয়দের ভূলবাল বুঝিয়ে দখলকৃত জমি বিক্রির কথা বলে ৫০টি পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি ওয়াকফ এস্টেটের লোকজন জানতে পেরে সম্প্রতি উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও থানা পুলিশের মধ্যস্থাতায় দু’দফে সালিশী বৈঠক হয় গত ১৭ অক্টোবর তারিখে। বৈঠকে আলীমুদ্দিন ওয়াকফ এস্টেটের জমি বিক্রির দায়ে নুর কবিরকে দোষি সাব্যস্ত করে অসহায় লোকজনের টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ প্রদান করেন সালিশকারগণ। তা অমান্য করে নুর কবির প্রকাশ্যে লোকজনকে হাকাবকা শুরু করেন। সম্প্রতি স্থানীয়দের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে নিজের গায়ে ব্ল্যাড দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে থানা পুলিশের দারস্থ হন। এমনকি নিজ স্ত্রীর গলা কেটে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হবে বলেও হুমকি দমকি দিয়ে আসছে। তার প্রকাশ্য হুমকিতে এলাকার লোকজন স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড মেম্বার তারেকুল ইসলামের নিকট শরানাপ্ন হন। এসময় তিনি এলাকার লোকজনের সাথে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে তাদেরকে আইনগত সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, মূলত আলীমুদ্দিন এস্টেটের জমি হলেও মসজিদ পাড়া পূর্ব পাহাড় গ্রামের লোকজন দীর্ঘ এক যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। তাদেরকে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে জাল দলিল করে জমি বিক্রির নামে নুর কবির নিরিহ লোকজনকে ঠকিয়েছেন। বর্তমানে তার কাছে এ পাড়ার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার জিম্মি হয়ে পড়েছে। অপর দিকে উচ্চেদ আতংকে দিনাতিপাত করছে ১ হাজার নারী-পুরুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ডাকাত নুর কবির দীর্ঘ দিন ধরে ডাকাতি অপহরণসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে। তার কাছে রয়েছে অবৈধ অস্ত্রের ভান্ডার। গত মঙ্গলবার গভির রাতে স্থানীয় ছৈয়দুল হকের বসত বাড়ী লুটপাটের ঘটনায় সে সরাসরি জড়িত রয়েছে। এছাড়া এলাকায় নারী নিয়ে নানা অপকর্ম করে নিরিহ লোকজনকে ফাঁদেফেলে বিচারের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক পরিবারকে করেছেন নি:শ্ব। তার এসবের পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন স্থানীয় পাতি নেতারা। তারা ডাকাত নুর কবিরের জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে চকরিয়া থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পাঠকের মতামত