প্রকাশিত: ২৯/০৫/২০১৭ ৮:৫৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:২৬ পিএম

সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
পবিত্র রমজান মাসে ক্রেতা সাধারণের বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে উখিয়ায় একাধিক পাইকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী গুদামজাত করছে সংশি¬ষ্ট ব্যবসায়ীরা। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত ফায়দা লুঠার অপচেষ্টায় লিপ্ত এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বৃহত্তর ক্রেতা সাধারণ এসব ব্যবসায়ীদের নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রোজার মাসে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করে পাইকারী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পালংখালী, উখিয়া সদর, কোটবাজার ও মরিচ্যা বাজারের প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে শতাধিক গুদামে ভোজ্য তেল, ছোলা, চিনি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মজুদ করা হচ্ছে। গুদামে মালামাল উঠানামা করার দায়িত্বরত শ্রমিকেরা জানান, রমজান উপলক্ষে মালামাল গুদামজাত করার জন্য তাদের দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এ মাসের জন্য তাদের অতিরিক্ত মজুরীও দেওয়া হয় বলে শ্রমিক মাঝি নুর আলম (৪৫) জানান। কোটবাজারের একজন নৈশ প্রহরী জানান, গুদামে জায়গা না হওয়ার কারণে বিভিন্ন মার্কেটের ও ভাড়া বাসার বারান্দায় মালামাল মজুদ করা হচ্ছে। এসব মালামাল রাতভর পাহারা দিতে হয়। উখিয়া সদর ষ্টেশনের ব্যবসায়ী বিশ্বজিত ষ্টোরের মালিক রতন জানান, রোজায় বাড়তি চাহিদার জন্য বেশি করে মালামাল মজুদ রাখা হচ্ছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাজার কমিটির সভাপতি একরামুল হক জানান, রোজার মাসে নিত্য পণ্যের মূল্য যাতে বাড়িয়ে নিতে না পারে সেজন্য ব্যবসায়ীদের ইতিপূর্বে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন, রোজার মাস ছাড়াও প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার ভোজ্য তেল, চিনি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা না থাকায় উখিয়ার কতিপয় ব্যবসায়ী চোরাচালান হাতে প্রতি মাসে কোটি কোটি কালো টাকা আয় করছে। তিনি বলেন, রোজার মাসে এসে মালামাল পাচার নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারিত মূল্যে মালামাল বিক্রির চেষ্টা করলেও তা জনগণের কোন উপকারে আসবে না।
স্থানীয় ও সীমান্তের বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত সংলগ্ন উপজেলা শহর উখিয়া থেকে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার ব্যারেল ভোজ্য তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় ব্যবসায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি পত্র দেখিয়ে সড়ক পথে ভোজ্য তেল সরবরাহ নিয়ে খুচরা বিক্রির অজুহাত দেখিয়ে চোরাচালানির হাতে তুলে দিচ্ছে। সীমান্তরক্ষী বিজিবি’র সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভোজ্য তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী আটক করছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকা সমূহে ফলাও করে প্রকাশ করা হলেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। রমজান মাসে খুচরা বিক্রির অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মজুদ করছে। এ ব্যাপারে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা ক্যাম্পের বিজিবি’র সুবেদার নজরুল ইসলাম জানান, ভোজ্য তেল পাচারের বিষয় নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, ইউএনও’র অনুমতি থাকলে আমাদের করার কিছু নেই। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, খুচরা বিক্রির চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্য তেল সরবরাহের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তাছাড়া ইতিমধ্যে মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিটি দোকোনে পন্য মুল্য তালিকা টাঙ্গানো বাস্ততামুলক করা হবে।

পাঠকের মতামত

রামু সহিংসতার ১২ বছর আজ

মামলায় আসামী করা হয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের, প্রত্যাহারের দাবি রামু সহিংসতার ১২ বছর আজ। ঘটনার পর ...

ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে মিয়ানমারের ১২০ সেনা ও সীমান্তরক্ষী সদস্যকে

দুই দেশের দূতাবাসের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত ...