উখিয়া – টেকনাফ রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির ও মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জাতিগত সন্ত্রাসী সংগঠন আল-ইয়াকিন কর্তৃক অপহৃত কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা নেতা আইয়ুব মাঝির লাশ অপহরণের ১২দিনের মাথায় উদ্ধার হয়েছে। তাকে বালুখালীর তেলীপাড়া খালের ঝোপঝাড় থেকে উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশ। দুই রোহিঙ্গা মধ্য থেকে মোঃসলিমের লাশ গত ১৮জুন উদ্ধার করা হয়। আজ (২৫জুন) অপহৃত অপর রোহিঙ্গা নেতা আয়ুব মাঝির লাশ রবিবার স্থানীয় লোকজনের সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া থানা পুলিশের এস আই আনোয়ারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উদ্ধার করে উখিয়া থানায় নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার প্রেরণ করা হয়েছে বলে উখিয়া নিউজ ডটকমকে জানান, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের। কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির সংলগ্ন বালুখালী তেলিপাড়া খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য গত ১৩ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ১৮/২০ জনের আল-ইয়াকিনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুতুপালং নিবন্ধিত শরনার্থী শিবিরের জি-ব্লকের আলী আহমদের ছেলে মোঃ সলিম ও টালের আয়ুব মাঝিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি পূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ওইরাতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তির ই-১ ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা আইয়ুব মাঝিকে স্বশস্ত্র ঐ গ্রুপের সদস্যরা ঘর থেকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। মিয়ানমারের আরাকানের কথিত জিহাদে যুদ্ধরত আল ইয়াকিনের সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলেই চলছে একের পর এক জুলুম, নির্যাতন ও অপহরণের মত ঘটনা। ১৩জুন রাত দেড়টার দিকে উখিয়া কুতুপালং শরনার্থী শিবির থেকে অপহরণের ঘটনায় কথিত আল ইয়াকিনের সদস্যরা জড়িত রয়েছে বলে অপহৃতদের আত্মীয় স্বজন ও রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন। আল ইয়াকিন সমপ্রতি সময়ে তাদের মিলিট্যান্ট গ্রুপের নাম পরিবর্তন করে আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মি বা এআরএসএ নাম ধারণ করেছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে।
কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক বুধবার জানিয়েছেন, গত রাতের প্রায় দেড়টার দিকে প্রচুর বৃষ্টির সময় কুতুপালং বস্তির সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা মোঃ জাবের (৩২), মোঃ নুর (২৮), মনির আহামদ (২৮), খুইল্যা মিয়া মুন্না (৩২), সলিম (২৬), কলিমুল্লাহ (২৮) ও বালুখালীর নতুন রোহিঙ্গা বস্তির মোঃ কালু (৩৫) ও মো ইসলাম (৩৩) এর নেতৃত্বে ১৮/২০ জনের স্বশস্ত্র একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আয়ুব মাঝির ঘরে হানা দিয়ে তাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। অপহৃত রোাহিঙ্গা নেতা আইয়ুব মাঝির স্ত্রী দুই সন্তানের জননী নুর আনকিছ জানিয়েছেন, ১৮/২০ জন সন্ত্রাসীর মধ্যে উল্লেখিতদের চিহ্নিত করা গেছে। অপহরণের পর থেকে রোহিঙ্গারা ও উখিয়া থানার পুলিশ বিভিন্ন ভাবে অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু অপহরনের শিকার দুই রোহিঙ্গার মধ্যে ১৮জুন সেলিমের লাশ ও ২৫জুন সন্ধ্যায় আয়ুব মাঝির লাশ উদ্ধার করা হয়।
মূলত বার্মায় কথিত জিহাদীদের নাম ভাঙ্গিয়ে রোহিঙ্গা শিবির গুলোতে একাধিক গ্রুপ নিজেদের আল ইয়াকিনের সদস্য পরিচয়ে ঘরপিছু চাদাঁবাজি করে আসছে। আইয়ুব ও মোঃ সলিমের কাছ থেকে ও অনুরুপ চাদাঁ দাবী করে না পাওয়ায় ও তাদের আটক করতে পুলিশকে সহযোগিতা করায় তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে রোহিঙ্গা নেতা আবু ছিদ্দিক জানায়। উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের বলেন, স্থানীয় লোকজনের সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সন্ধ্যার দিকে কুতুপালং সংলগ্ন বালুখালী তেলিপাড়া খালে ভাসমান অবস্থায় আয়ুব মাঝির লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে বলে ওসি জানান।
পাঠকের মতামত