ফারুক আহমদ, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৩/১১/২০২২ ৯:০৯ এএম

উখিয়া ও টেকনাফে সুপারির হাট বেশ জমে উঠেছে। প্রথম দিকে হতাশ হলেও এখন বাজারে সুপারির ভালো দাম পেয়ে বেজায় খুশি চাষীরা।
এবারে মৌসুমে সুপারির বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সুপারি স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণ করে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার সুপারি ঢাকা চট্টগ্রাম সহ দেশের বহু স্হানে বাজারজাত হচ্ছে। শুধু তাই নই এখানকার সুপারি সৌদি আরব, দুবাই সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে উখিয়া ও টেকনাফে ১ হাজার ৮ শত হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫ শত ২০মেট্রিক টন।
উখিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা জানান, উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে ৯ শত ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৭ শত ৮০ মেট্রিক টন।
অপর দিকে টেকনাফ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান জানান উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ৮ শত ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭ শত ৪০ মেট্রিকটন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান উখিয়া-টেকনাফ সমুদ্র উপকূলীয় হওয়ায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি বাগানের উপযোগী। তাই অত্র এলাকায় প্রতিটি ঘরে ঘরে সুপারি বাগান রয়েছে। অনেকে জানান আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে শত শত একর জায়গায় সুপারি বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।

সরোজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া, ইনানী, নিদানিয়া, মাদার বুনিয়া, ছেপট খালী ও মন খালি এলাকায় গ্রামজুড়ে সুপারি বাগান। পুরো বাগান জুড়ে সুপারির বাম্পার ফলন। রত্নাপালং, রাজাপালং, পালংখালী হলদিয়া পালং ইউনিয়নে অসংখ্য সুপারির বাগান রয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ উপজেলার শাপলাপুর বাহারছড়া হোয়াইক্যং নীলা টেকনাফ সদর সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর পরিমাণ সুপারি বাগান রয়েছে। বর্তমানে সোনার পাড়া বাজার শাপলাপুর বাজার ও বাহারছড়ায় বিশাল সুপারি ক্রয়-বিক্রয় হাট বসেছে।
এদিকে আবহাওয়ার পরিবেশ অনুকূল থাকায় সুপারীর বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় বাগান মালিকরাও খুব খুশি। সোনার পাড়ার আব্দুস সালাম জানান অগ্রহায়ণ ও কার্তিক মাস হচ্ছে সুপারির ভরা মৌসুম। এবারে আশ্বিন মাসের শেষের দিকে বাজারে আসতে শুরু করে সুপারি।
ব্যবসায়ী শাকের উদ্দিন সাগর ও আবুল কালাম জানান এবছর সুপারির প্রতি পোন (৮০ টি) ৩শত থেকে ৪ শত টাকা এবং প্রতি কাউন (১২৮০টি) সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মানভেদে দাম আরও বেশি।
পান সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুলতান আহমদ জানান, প্রতি মওসুমে এ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে লক্ষ লক্ষ টাকার সুপারি বাজারজাত হচ্ছে। এসব সুপারি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন আড়তে চলে যাচ্ছে। এসব সুপারি প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থকরী ফসল সুপারি উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল স্থানীয়ভাবে ৭ হাজারেরও অধিক পরিবার। বাণিজ্যিকভাবে সুপারি উৎপাদনে সক্ষম হওয়ায় চলতি মৌসুমে সুপারির বাম্পার উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

সোনার পাড়া গ্রামের বাগান মালিক আব্দুর জব্বার ও শামসুল আলম জানান সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও অধিক সুপারি বাগান গড়ে তুলে ফলন উৎপাদন সম্ভব হত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন হয়েছে। সুপারি বাজারজাত করে কৃষকেরা লাভবান হওয়ার কারণে এলাকাভিত্তিক সুপারি চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।

পাঠকের মতামত

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে শেষ পর্যায়ে এসে ধরা পড়ছে নানা ত্রুটি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজারের রেললাইন প্রকল্পের কাজের শেষ পর্যায়ে এসে নানা ত্রুটি–বিচ্যুতি ধরা পড়ছে। দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার ...

মানা হচ্ছে না উপদেষ্টার নির্দেশনা সামাজিক বনায়নের গাছ অবৈধ করাতকলে পাঠান পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা!

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় ৮০ ঘনফুট গাছ বহন করে এগিয়ে যাচ্ছিলো নাম্বার বিহীন একটি মিনি ট্রাক ...

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে নির্মিত আন্ডারপাস ও ওভারপাস হাতি চলাচলের অনুপযুক্ত

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের মধ্যে অভয়ারণ্যের প্রায় ২২ কিলোমিটার এলাকাও পড়েছে। শুরুতে অভয়ারণ্যে রেলপথ নির্মাণে আপত্তি জানায় ...