

গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারের উখিয়ায় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে জনজীবন। প্রচণ্ড রোদের মাঝে হঠাৎ আকাশে মেঘের আনাগোনা স্বস্তি এনে দিলেও সেই মেঘ থেকে ঝরেনি একফোঁটা বৃষ্টিও। দীর্ঘ ২০ বছরের মধ্যে এমন গরম উখিয়াবাসী দেখেনি বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা। শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট যেন সীমা ছাড়িয়ে গেছে। রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণ শ্রমিকসহ দিনমজুর শ্রেণির মানুষ কাজ করতে গিয়ে বারবার আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের ছায়ায়।
এসএসসি পরীক্ষার্থী তামজিদ কবির বলেন, এমনিতেই গরম, তার উপর হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে কষ্ট আরও বেড়ে যায়। পড়ালেখা করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউনুস জানান, তার বন্ধু শাহ হোসেন চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে বেড়াতে এসেছেন। তাঁরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন একটু প্রশান্তির আশায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন সৈকতও ফাঁকা—চারপাশে শুধু গরম আর গরম। শাহ হোসেন বলেন,নানার বাড়ি উখিয়ায়। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বেড়াতে এসেছিলাম, কিন্তু কক্সবাজারেও একই অবস্থা। সৈকতে মানুষ নেই বললেই চলে। আসলে এই তীব্র গরমে কেউ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। দেশের অন্যান্য স্থানে বৃষ্টিপাত হলেও উখিয়ায় বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে কৃষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বৃষ্টির অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও অনেক কৃষক বলছেন, ধান কাটা-মাড়াইয়ের জন্য এখনই বৃষ্টি না হওয়াই ভালো। স্থানীয় কৃষক নুরুল আমিন বলেন, এখন ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। বৃষ্টি হলে ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে যেত। আরেকটু সময় পেলেই কেটে ঘরে তুলতে পারবো। তিনি আরও জানান, আম আর কাঁঠাল ভালোই পেকে যাচ্ছে। তবে বেশি গরমে ফলের স্বাদ ও গুণমান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাপমাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা থাকলেও তাৎক্ষণিক বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। ফলে সাধারণ মানুষকে এ অবস্থায় আরও কিছুদিন সহ্য করেই চলতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ সময় হিট স্ট্রোক ও পানিশূন্যতার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে বেশি করে পানি পান, হালকা খাবার গ্রহণ ও দুপুরের সময় ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
পাঠকের মতামত