প্রকাশিত: ৩০/০৪/২০১৭ ৫:২০ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পূর্ব পাড়ের পালংকি হোটেলের কক্ষ থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি ওই হোটেলে ওঠেন।

নিহতের নাম ডা. ইসমাইল (৪৮)। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের মসজিদঘোনা এলাকার মৃত গোলাম রসুল মোল্লার ছেলে।

ইসমাইল নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় একটি সূত্র। সম্প্রতি দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তার পারিবারিক কলহ চলছিল বলে সূত্রটি দাবি করেছে।

কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, হোটেল কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে বেলা ২টার দিকে এসআই দীপক কুমার সিংহ ও এএসআই আবু ছৈয়দ পুলিশ টিম নিয়ে পালংকি হোটেলে যান। হোটেলের দ্বিতীয় তলার ১০৭ নম্বর কক্ষে ফ্যানে ঝুলন্ত ইসমাইলের মরদেহ পাওয়া যায়। দরজা ভেঙে কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, রুমের ইন্টারকম টেলিফোনের তার খুলে তা দিয়েই ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগান তিনি। রুমের সিঙ্গেল সোপার উপর বসার চেয়ার দিয়ে উপরে উঠে ফাঁস লাগিয়েছেন বলে পজিশন দেখে মনে হয়েছে। এসময় রুমের টেলিভিশন ও তার মুঠোফোন চালু অবস্থায় ছিল।

হোটেলের ম্যানেজার মীর কাশেম জানান, হোটেলের নিয়মিত বর্ডার ডা. ইসমাইল গত শুক্রবার বেলা ২টার দিকে হোটেলের ১০৭ নম্বর কক্ষে ওঠেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে অভ্যর্থনা কক্ষে এসে রাতের রুম ভাড়াও পরিশোধ করেন তিনি। এরপর রুমে চলে যাওয়ার পর আর তাকে দেখা যায়নি। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফ্লোর পরিষ্কারে আসা হোটেল বয় ইসমাইলের কক্ষের ভেতরে অনবরত মোবাইলে রিং আসার শব্দ শুনতে পান। ফোনও ধরছেন না বা কক্ষের ভেতর কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ম্যানেজারকে অবহিত করেন ওয়ার্ড বয়। তারা এসে দরজায় নক করে তাকে অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের উপস্থিতিতে লক ভেঙে দরজা খুলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সদর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে তার নেতা ডা. ইসমাইল তাকে কল করে ২৩ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেন। আমাকে নিয়ে তার আকাঙ্ক্ষা অনেক জানিয়ে বলেন, আমার (ডা. ইসমাইল) সমর্থন সব সময় তোমার সঙ্গে আছে, এটি বলে লাইন কেটে দেন তিনি।

এদিকে খবর পেয়ে হোটেলে আসেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল কুদ্দুস। তার উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এসময় তার ব্যবহৃত ওয়ালেট, মোবাইলসহ অন্যান্য পণ্য জব্দ করে পুলিশ।

খবর পেয়ে পরিবার ও স্বজন এবং দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে দেখতে বিকেলে সদর হাসপাতাল এলাকায় আসেন। সেখানে এক হৃদয়বিধারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

পাঠকের মতামত