প্রকাশিত: ১২/০২/২০২০ ৯:৪৫ এএম

শফিক আজাদ, উখিয়া::
সীমান্তের ওপারে হঠাৎ অতিরিক্ত সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিজিপি মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। তাছাড়া তুমব্রু-বাইশফাঁড়ি সীমান্ত এলাকা জুড়ে স্থাপন করেছে বাঙ্কার ও নিরাপত্তার নামে অসংখ্য চৌকি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। তবে বিজিবি বললেন আতঙ্কের কিছু নেই, সার্বক্ষণিক পরিস্থিতর উপর নজর রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।
সরজমিন (মঙ্গলবার) সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু-ভাজাবনিয়া,মগপাড়া, বাইশফাড়ি সীমান্তের ওপারে বিশাল এলাকা জুড়ে অসংখ্য বাঙ্কার এবং নিরাপত্তার নামে চৌকি স্থাপন করেছে মিয়ানমার। সীমান্তের দেড় শথ গজের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির ভারী অস্ত্র বাংলাদেশের দিকে তাক করে বসানো হয়েছে। রাতে মাঝে মাঝে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সীমান্তের ঘুমধুম ভাজাবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা, কৃষক আলী হোসেন(৪৫) জানান, সে বোরো এবং মরিচ চাষ করেছে সীমান্তের একদম কাছাকাছি স্থানে। তার মাত্র কয়েক ‘শ গজ অদুরে বাঙ্কার এবং চৌকি স্থাপন করেছে মিয়ানমারের বিজিপির সদস্যরা। তিনি বলেন, রাতে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে থাকে। এতে তারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। একই কথা আকতার উদ্দিন(৪০) ও হোসন আহমদ (৪৪) সহ অসংখ্য স্থানীয়দের। তারাও জানায়, আইসিজের রায়ের পরে হঠাৎ অভাবে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমার। তারা আরো জানায়, সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা,বিজিপি টহল লক্ষ করা যাচ্ছে গত সপ্তাহ থেকে। ভারী যান নিয়ে প্রতিনিয়ত সীমান্তে যাতায়াত করছে মিয়ানমার বিজিপি ও সেনা সদস্যরা।

শূন্যরেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গারা জানান, সকাল থেকে ৭টি ট্রাকে করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তুমব্রু সীমান্তের ওপারে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তের বেড়া বরাবর বাঙ্কার গুলোতেও অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমার সেনারা। সেনাদের সঙ্গে তাদের সীমান্ত রক্ষী পুলিশ (বিজিপি) সদস্যরাও রয়েছে বলে তারা জানান।
তুমব্রু শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, আইসিজে রায়ে পর থেকে মিয়ানমার সেনারা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় মর্টারসহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। তাদের সঙ্গে বিজিপির সদস্যদেরও দেখা যাচ্ছে। এতে করে শূণ্য রেখার রোহিঙ্গারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।”

সীমান্তের এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, তুমব্রু সীমান্তে ৩৪ নং পিলার থেকে ৩৯নং পিলার পর্যন্ত বিশাল সীমান্ত এলাকা জুড়ে মিয়ানমারের বিজিপির সদস্যরা বাঙ্কার খনন এবং চৌকি স্থাপন করেছে। তিনি আরো বলেন, গত ২৩ জানুয়ারী নেদারল্যাডন্সের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত (আইসিজে)র রায়ের পর থেকে মিয়ানমার বর্ডার গাড অব পুলিশ (বিজিপি) বাঙ্কার এবং চৌকি স্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২৩ জানুয়ারী আইসিজে রায়ে বলেছে রাখাইনে এখন যে রোহিঙ্গারা আছেন, তাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য মিয়ানমারকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সেইসঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কিংবা অন্য যেকোন নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেন কোন গণহত্যায় না জড়ায়, উষ্কানি না দেয়, কিংবা নির্যাতনের চেষ্টা না করে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়ার জন মিয়ানমারের গৃহীত ব্যবস্থাগুলো আগামি চার মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট আদালতের সামনে উপস্থাপন করতে হবে।
এরপর এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পর পর আদালতকে জানাতে।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...