প্রকাশিত: ১৭/০৩/২০১৮ ৮:১১ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:২১ এএম
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা

নিউজ ডেস্ক::
সহায় সম্বল সব হারিয়ে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে রাজি নয় মিয়ানমার। নানা অজুহাত, শর্ত আর কৌশলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চায় দেশটির সরকার। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বাড়াতে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে প্রথম ধাপে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফেরত নেয়ার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব মিন্ট থু এ তথ্য জানান। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের দেয়া ৮ হাজার ৩২ জনের প্রথম তালিকা থেকে ৩৭৪ জনকে ফেরত নেবে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে মিন্ট থু জানান, বাংলাদেশের দেয়া ৮ হাজার ৩২ জনের তালিকা থেকে যাচাই বাছাই করে ৩৭৪ জনের তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন তারা। প্রত্যাবাসনের প্রথম ধাপে শুধু তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। এ ৩৭৪ জন সুবিধামতো সময়ে ফিরে আসতে পারে। আর বাকিরা আগে মিয়ানমারে বসবাস করতো কি-না, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারেননি। বাংলাদেশের দেয়া রোহিঙ্গাদের তথ্য ও প্রমাণপত্র অসম্পূর্ণ বলে দাবি করেন তিনি। বাংলাদেশের দেয়া তালিকায় তিনজন সন্ত্রাসী পাওয়ার কথাও জানান মিন্ট থু।

এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতিসংঘসহ দেশি বিদেশি কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিতেই নানা প্রশ্ন ও অজুহাত তুলছেন তারা। এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, এখন জ্বলছে রাখাইন। আর মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তের পাশাপাশি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মাইন পুঁতছে। নির্যাতন করছে সাধারণ মানুষদের।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. আমেনা মহসিন বলেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, চুক্তি করা থেকে শুরু করে মিয়ানমার যেসব শর্ত দিয়েছে, তা পূরন করা কঠিন। তাদের উদ্দেশ্যই হলো, রোহিঙ্গা জাতিকে রাখাইন থেকে নির্মূল বা বিতাড়িত করা। তাই তাদের ফেরত নিতে চাইবে না, নানা ধরনের টালবাহানা করবে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। যাতে করে তারা সক্রিয় হয় এবং নাগরিক অধিকার দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে গত বছরের নভেম্বরে দেশ দু’টির মধ্যে সমঝোতা হয়। এ অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যেই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শুরু হয়নি। উল্টো মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশে আসা অব্যাহত রয়েছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। যাকে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে অভিহিত করেছে; যা আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ। এরপর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...