প্রকাশিত: ০৫/১১/২০১৯ ১০:২০ এএম

এম, গফুর উদ্দিন চৌধুরী:
মনের দুঃখে অবশ্যই বলতে হচ্ছে সিমান্ত এলাকা উখিয়া টেকনাফে জন্মগ্রহণ করে হয়তো আমরা পাপ করেছি।

কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক পুননির্মান হচ্ছে এতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। এই রাস্তা পুননির্মান ও প্রশস্তের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগ মন্ত্রী সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। কিন্তু সরকারের নিয়োগকৃত কিছু কর্মচারী ও নিয়োগকৃত টিকাদারকে ঘৃনা করতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ কতিপয় কিছু কর্মচারীর অবহেলা ও টিকাদারের অদক্ষতা এবং অতি লোভের কারণে আজ কোর্টবাজার হতে পালংখালী পর্যন্ত প্রতিদিন চলাচল কারীদের দুর্ভোগের অন্ত নাই। যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে তাদেরকে ঘৃনা না করে পারছিনা বলে দুঃখিত। কেননা জনবহুল সড়ক মেরামত করা কালীন সময় যাতে গাড়ি চলাচলে ধুলাবালী মানুষের ক্ষতি না করে তার জন্য অল্প পানি চিটাইতে হয়। বর্তমানে টেকনাফ থেকে অনেকের প্রতিদিন প্রতিনিয়ত উখিয়া/কক্সবাজার যেতে হয়। যাওয়া-আসার সময় পুননির্মানাধীন সড়কে(রাস্তা) যে পরিমাণ ধুলাবালী মানুষের ফুসফুসে ঢুকে ক্ষতি করছে তার পরিমাণ নির্ণয় করার মত ডাক্তার হয়তো বাংলার জমিনে জন্ম নেয় নাই। যারা ভুক্তভোগী তারাই এক মাত্র কিছুটা অনুমান করতে পারবে। আর যারা এসি গাড়িতে গাড়ির দরজা বন্ধ করে চোখ বোঝে চলাচল করে তারা তো কোন সময় তা বুঝতে পারার কথা নয়। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারব একবার যদি পালংখালী হতে কোটকাজার অথবা কোটবাজার হতে পালংখালী আসলে গোসল না করলে ও মাথা এবং হাত পা না ধোয়ার উপায় নাই। যদি নির্মানাধীন জনবহুল রাস্তায় পানি ছিটানোর বিধান না থাকলে ও সড়ক বিভাগের উদ্যোগে পানি ছিঠানো প্রয়োজন নয় কি ?

ফুসফুসের ক্ষতির পাশাপাশী কাপড়ের অবস্থাতো আরো মারাত্নক। তাছাড়াও টিকাদারের অদক্ষতার কারণে মাইলের পর মাইল রাস্তার কার্পেটিং উপড়ে ফেলার কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় শরীরের হাঁড় নড়বড় হয়ে ব্যাথায় রাত্রের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আমরাতো গরীব মানুষ আমাদের তো আর বিলাস বহুল গাড়ীতে চড়ার সুযোগ নাই।যাতায়াত করতে হলে ব্যাটারী চালিত টমটম ও সি এন জি চালিত বেবী টেক্সী যোগে অথবা বাইক নিয়ে চলাচল করত হয়। গাড়ি থেকে নামার পর উপস্থিত লোকজন ঠাট্টা করে তাই আমাদের দুর্ভোগ অতি চরমে। তাছাড়া ও যে রাস্তায় হাজার হাজার বিলাস বহুল গাড়ীর দূরত্ব বেগে যাতায়াত করে জ্যাম সৃষ্টি হয় সে সড়কে দিনের বেলায় ভারী মাল বহনকৃত গাড়ী গুলো রাতে চলা চলের নির্দেশ দিলে ক্ষতি কি ? বিশেষ করে আজ ০৪/১১/২০১৯ ইংরেজী তারিখ সকালে জেএসসি ও জেডিসি পরিক্ষার্থীদের পরিক্ষা দেওয়ার জন্য কুতুপালং ও রাজাপালং এমাদাদুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় থাইংখালী বাজারের উত্তর পাশে সড়কে দুইটি গাড়ী আটকে গেলে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীরা রাস্থায় ছুটে এসে অনেক বিলম্বে পরিক্ষার্থীদেরকে পরিক্ষা দেওয়ার জন্য জ্যাম নিরসন করে দেয়। এসময় অনেক পরিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়ে। এমন সময়ে স্থানিয় কিছু স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা সড়কে নেমে জ্যাম নিরসন করতে সক্ষম হয়। এরুপ পরিস্তিতি বেড়ে গেলে ঢাকার নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো পরিস্তিতির সৃস্টি হবে। আজ ঐ ভারী মাল বহন গাড়ীর জন্য যদি পাংখালী ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা পরিক্ষা দিতে না পারতো তার দায় দায়ত্বকে বহন করত ? একে তো পালংখালীতে নয় লক্ষের মত রোহিঙ্গার চাপ তার উপরে কর্তব্যরত কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা অনিশ্চিত। রাস্তা পুননির্মানে প্রায় ১০কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং উপড়ে ফেলার কারন কি ?

১ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং তুলে সেটাতে কাজ করে আর এক কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং তুললে সমস্যা কি ছিল ? পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী কাস্টম বাজারের উত্তর পাশের ভাঙাগুলো মেরামত করে দিলে সমস্যা কোথায়?

আমার কাছে প্রতিনিয়ত নিরহ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ তাদের সমস্যা নিয়ে আসে। তাদের দাবী যদি আমার উপরস্থ প্রতিনিধিদের নিকট প্রার্থনা করে কোন সমাধান না পেলে একটু আধটু বলে জাতীয় সরকারের এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজরে দেওয়া উত্তম বলে মনে করি। এমতাবস্তায় পরিক্ষা চলাকালীন সময় বিলাসবহুল এনজিওর গাড়ি ও মাল বোঝাই ট্রাক চলাচলের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট বিনীত প্রার্থনা করি।

লেখক:

এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী,চেয়ারম্যান,৫নং পালংখালী
ইউনিয়ন পরিষদ,উখিয়া।

লেখাটি লেখকের ফেইসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া

পাঠকের মতামত