প্রকাশিত: ২৮/০৭/২০২২ ৭:১০ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক::
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আজ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর কর্তৃক নির্মিত ও সজ্জিত নতুন উখিয়া বিশেষায়িত হাসপাতালে দুইটি অপারেশন থিয়েটার ও সেকেন্ডারি কেয়ার সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন। হাসপাতালটি রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ উখিয়া এলাকায় বসবাসকারী রোগীদের জীবন রক্ষাকারী সুবিধা ও বিশেষজ্ঞ সেকেন্ডারি চিকিৎসা প্রদান করবে।

অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালে শল্য চিকিৎসা শুরু করতে পেরে আমি আনন্দিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রান্তিক জনগণকে বিশেষায়িত হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। সেই পথ ধরে দেশের সকল বিষয়ের বিশেষজ্ঞ নিয়ে আজ সেবা দেয়ার শুভ সূচনা করতে পেরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে গর্ববোধ করছে”। এ সময়, জনস্বাস্থ্য ও শল্য চিকিৎসার শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন।

নিজ হাতে চারটি অপারেশন সম্পন্ন করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাম্প্রতিক নির্মিত উখিয়া বিশেষায়িত হাসপাতালে এই সেবার সূচনা করেন। কক্সবাজারের সিনিয়র সার্জনরা আরও পাঁচটি অস্ত্রোপচার করেন। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চাহিদামত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও সার্জারি এখন থেকে এই হাসপাতালে সম্ভব হবে। উন্নত বিভিন্ন সুবিধার মাঝে থাকবে গাইনী, শিশু, চক্ষু, হৃদরোগ, অর্থোপেডিক, চর্ম, দন্ত, মানসিক ও প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মত সেবা। এর মাধ্যমে এখানের স্থানীয় জনগণের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার বা চট্টগ্রামে যাওয়ার প্রয়োজন অনেকাংশে কমে যাবে; এর পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে। এই হাসপাতালে আরও আছে ল্যাবরেটরি, এক্স-রে, আল্ট্রাসাউন্ড ও ইকোগ্রাফির মত মেডিক্যাল ইমেজিং সুবিধা। তদুপরি, অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ পাওয়া যাবে টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে।

অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এবং তাঁর বিশেষজ্ঞ দল হাসপাতালে কর্মরত ইউএনএইচসিআর-এর অংশীদার সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ও রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের স্টাফদের সাথে দেখা করেন। আগামী তিন বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পর্যায়ক্রমে এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ও সকল সম্পদের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর-এর প্রধান ইটা শুয়েট বলেন, “এই হাসপাতালের যাবতীয় কাজে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সবাই মিলে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা উন্নত করা ও কক্সবাজারে বসবাসকারী সকল মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব। এখানে ইতিমধ্যেই প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন রোগী সেবা পাচ্ছেন”।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, মাইকোব্যাকটেরিয়াল ডিজিজ কন্ট্রোল পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ শাকিল আহমেদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডাঃ ফাতেমা বেগম, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মাতৃ, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ শামসুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবির, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ খালিদ হোসেন, এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

উখিয়া বিশেষায়িত হাসপাতালের ইন-পেশেন্ট ব্যবস্থাপনা নির্মাণ, চিকিৎসার সরঞ্জাম স্থাপন এবং চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের জন্য ইউএনএইচসিআর জাপান সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

পাঠকের মতামত