প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৯ ৯:২৩ এএম

মাহাবুবুর রহমান :
কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচয় গোপন করে অধ্যায়নরত এক রোহিঙ্গা ছাত্রীর ছাত্রত্ব বাতিল করল পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে সেই ছাত্রী আলোচিত রোহিঙ্গা তরুণী রহিমা আক্তার খুশি প্রকাশ রাহী খুশির বোন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেই রোহিঙ্গা ছাত্রীর পক্ষ নিয়ে তদরিব করছে এক সাবেক চেয়ারম্যান এবং তাকে স্কুলে ভর্তিতে সহযোগিতা করেছেন এক কৃষকলীগ নেতা।এই খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার সচেতন মহল স্কুল কতৃপক্ষের পদক্ষেপের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন একই সাথে রোহিঙ্গা ছাত্রীর সাথে জড়িত বা সহায়তা কারী সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
জানা গেছে কক্সবাজার পৌরসভা পরিচালিত পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল সেলিনা আক্তার নামের সেই ছাত্রী বর্তমানে সে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। তবে বেশ কিছুদিন ধরে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী নিয়ে আলোচনা চলায় এবং তার গতিবিধি এবং কার্যকলাপ সন্দেহজনক মনে হলে খোঁজ খবর নিয়ে এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে দেখা যায় সেই ছাত্রী প্রকৃত পক্ষে একজন রোহিঙ্গা। স্কুলে জমা দেওয়া কাগজ পত্রতে দেখা গেছে সেলিনা আক্তারের পিতা নাম আবদুল আজিজ মাতা মিনারা বেগম। সে রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং ৯নং ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন দাখিল করেছে যেখানে তার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ১৯৯৪২২১৯৫৬৭৮০৩৫৭০ এবং বালুখালী দাখিল মাদ্রাসা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে পিএসসি পাস করে। এবং তাকে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী হিসাবে সনদ নিয়েছে বালুখালী মাদ্রাসা সুপার মৌলানা আবদুস সালাম। সে হিসাবে সে ২০১৭ সালে পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে সে সময় রোহিঙ্গা মেয়েটির পক্ষে ফরম সংগ্রহ করে এবং ভর্তি বিষয়ে যাবতীয় কাজ করে শহরের লিংক রোড়স্থ এক কৃষকলীগ নেতা। বর্তমানে সে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। আর তার বাবার নাম আছে আবদুল জলিল তার নামে দেওয়া ভোটার আইডি কার্ডটি চট্টগ্রাম শুলক বহর আলী মাঝির পাড়া থেকে ইস্যূকৃত। জানা গেছে তার বাবা পরিচয় দানকারীও একজন রোহিঙ্গা। এখানে মজার বিষয় হচ্ছে রোহিঙ্গা মেয়েটির একবার জন্ম নিবন্ধন রাজাপালং ইউনিয়নের থাকলেও আবার কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডি ইউনিয়নের জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দেয়। আর সেটা নিয়ে সরাসরি স্কুলে এসে রোহিঙ্গা মেয়েটির পক্ষে অবস্থান নিয়ে জোর তদবির করেন চৌফলদন্ডির একজন সাবেক চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন,রোহিঙ্গা হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে সেলিনা আক্তারের ছাত্রত্ব স্থগিত করে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এবং এ বিষয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর প্রাথমিক তদন্তে সে নিজেই স্বীকার করেছে সে রোহিঙ্গা এবং সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত রোহিঙ্গা তরুনী খুশি তার বোন। এবং তার আরেক বোন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গার বিষয়ে কোন ছাড় নেই। আমি নির্দেশ দিয়েছি এ ধরনের আরো কেউ আছে কিনা সেটাও খোঁজে বের করার জন্য। আর প্রয়োজন হলে সেলিনা আক্তারের সনদ বাতিল করার জন্য শিক্ষা বোর্ডে লিখব।
এদিকে পৌর প্রিপ্যার‌্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের এমন সাহসী পদক্ষেপে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সচেতন মহল একই সাথে কিভাবে সে রাজাপালং ইউনিয়ন থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ পেল,বালুখালী মাদ্রাসা থেকে কিভাবে পিএসসি পাস করল,তার ভর্তি এবং বিভিন্ন বিষয়ে যারা তদবির করেছে তাদের রোহিঙ্গাদের সহায়তাকারী হিসাবে আইনের আওতায় আনারও দাবী জানান।.সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত