ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৬/০৭/২০২৫ ১১:০৯ এএম , আপডেট: ০৬/০৭/২০২৫ ১১:৩৭ এএম

আনছার হোসেন::
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা করেন সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। বদলি হয়ে তিনি এখন কক্সবাজারে।

তিনি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত। দাপ্তরিক সূত্রগুলোর দাবি, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আনুকূল্য পাওয়ার জন্য শেখ হাসিনার বিরাগভাজন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী হয়েছিলেন।

গুলশান আনোয়ার প্রধান দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) থাকাকালে ড. ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শুধু মামলাই করেননি, তিনি এ প্রতিষ্ঠানের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছিলেন। মামলায় তিনি প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন। ২০২৩ সালের ৩০ মে উপপরিচালক হিসেবে মামলাটি করেছিলেন তিনি।

যদিও চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের এক রায়ে ওই মামলা বাতিল হয়ে যায়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে মামলাটি বাতিলের রায় দেন।

সূত্রমতে, চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি গুলশান আনোয়ার প্রধানকে কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। যদিও দাপ্তরিক সূত্রগুলো বলছে, তাকে এখানে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা হিসেবে বদলি করা হয়।

২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিক দুদকের এই কর্মকর্তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার কারিগর ছিলেন এই গুলশান আনোয়ার প্রধান।

২০২০ সালের ২৯ আগস্ট আরেকটি দৈনিকে আনোয়ারের একটি নিবন্ধ প্রকাশ হয়েছিল। নিজের লেখা ওই নিবন্ধে তিনি শেখ মুজিব সম্পর্কে লেখেন, ‘তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুই নন, বাঙালির প্রথম রাষ্ট্রের স্রষ্টা!’

এদিকে বিদেশি গণমাধ্যম আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের গত ১ জুলাই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি টাস্কফোর্সে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের একটি ‘বিশেষ প্রতিবেদন’ ফাঁস করেন। ওই প্রতিবেদনের ৯ নম্বরে রয়েছেন আনোয়ার ।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মানি লন্ডারিং টাস্কফোর্সের দলনেতা আনোয়ার প্রধান ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রলীগের এই কর্মী ২০১১ সালে সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করেন। তিনি পি কে হালদারের নথির ঠিকাদার হিসেবে টাকা সংগ্রহ করেন। ওই টাকার ভাগ দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদও পেয়েছেন।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা গেছে, তার ভাগের ৪২ কোটি টাকা দিয়ে কানাডায় বাড়ি কিনেছেন। তার সঙ্গে দুর্বৃত্ত হিসেবে কাজ করেছেন সাবেক মহাপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। তিনি ওই টাকার ভাগের ৩২ কোটি টাকা পেয়েছেন। দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া তার ব্যবসায়ী স্বামীর মাধ্যমে ওই টাকা বিদেশে পাচার করেন।

ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, গুলশান আনোয়ার একটি অনলাইন কোচিং একাডেমির মালিক। তিনি ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা প্রযোজিত এবং দুদক পরিচালিত অনুসন্ধানকারী, এজাহার দায়েরকারী, তদন্তকারী ও চার্জশিট দাখিলকারী ছিলেন। তিনি বিদেশ ছাড়া দেশে কোনো চিকিৎসা নেন না। তিনি শেখ মুজিবকে জাতির পিতা মানেন এবং এ নিয়ে পত্রিকায় উপসম্পাদকীয় লিখেছেন। তার মতো ঠান্ডা মাথার দুর্বৃত্ত কমিশনে আর একজনও নেই।
সূত্র, দৈনিক আমার দেশ

পাঠকের মতামত

টেকনাফের পাহাড়ে ডাকাতদলের সঙ্গে পুলিশ-কোস্টগার্ডের গোলাগুলি

কক্সবাজারের টেকনাফে সশস্ত্র ডাকাতদলের সঙ্গে কোস্টগার্ড ও পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছে। উপজেলার জাদিমুরা পাহাড়ে এ ...

চাঁদাবাজির অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে রামু যুবদল নেতার এলোপাতাড়ি গুলি

রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়িতে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত ...