ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১২/১০/২০২৫ ১১:৪৪ এএম

বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামে মোঘল ঐতিহ্যের স্মারক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদকে পবিত্র মসজিদে নববীর আদলে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৬৬৬ সালে নির্মিত মূল স্থাপনা অক্ষুণ্ন রেখে পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে এই অঞ্চলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখা মসজিদটি। এই কাজে ব্যয় হবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

আজ রবিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ পুনঃনির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর কয়েকটি ধাপে দুই তলা বিশিষ্ট বেসমেন্ট ফ্লোর, ছয় তলা বিশিষ্ট মূল ভবন এবং ২০ তলা বিশিষ্ট টাওয়ার নির্মাণ শুরু হবে। কাজ শেষ করতে তিন বছরের বেশি সময় লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আন্দরকিল্লা জামে মসজিদে এখন প্রায় ৩ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। নতুন নকশায় মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করার পর ১৪ হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এরমধ্যে ৫০০ নারী মুসল্লির জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। তাদের সঙ্গে আসা শিশুদের জন্য থাকবে কিডস জোন। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি আলাদা প্রবেশপথ রাখা হবে। এছাড়া মসজিদের এক পাশে মোঘল আমলের ইসলামী ঐতিহ্য নিয়ে একটি জাদুঘর করা হবে। থাকবে ইসলামী রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জন্য অফিস কক্ষ, কনফারেন্স রুম, মাল্টিপারপাস হলরুম, লাইব্রেরি, ফুড কোর্ট, গ্রিন কোর্ট, সুউচ্চ মিনার, মসজিদের কর্মীদের আবাসন। সেমি বেসমেন্ট, নিচতলা এবং দ্বিতীয় তলায় থাকবে ২৯৩টি দোকান।

সংশ্লিষ্টরা জানান- সাড়ে তিনশ বছর আগে নির্মিত আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ কয়েক ধাপে পুনঃনির্মাণ ও আধুনিকায়ন করা হয়। স্বাধীনতার পর বড় কলেবরে মসজিদটি সংস্কার করা হয় ১৯৮৬ সালে। এরপর নানা সময়ে সংস্কার করে পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।

এরমধ্যে মসজিদের অনেক জায়গায় পলেস্তরা খসে পড়তে শুরু করে। কিছু অংশ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ইবাদত-বন্দেগি করতে প্রায় সময় অসুবিধায় পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এছাড়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকায় জায়গার সংকুলান নিয়েও সমস্যার সৃষ্টি হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ধর্ম উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন চট্টগ্রামের সন্তান ও খ্যাতিমান ইসলামি ব্যক্তিত্ব ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তার সঙ্গে দেখা করে এসব সমস্যার কথা জানান মসজিদের মুসল্লি পরিষদের নেতারা। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মসজিদটি পুনঃনির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ পুনঃনির্মাণের নকশা প্রণয়ন শুরু হয়। ঢাকার প্রতিষ্ঠান এইজ এন্ড এজ আর্কিটেকচার স্টুডিও এই নকশা প্রণয়ন করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান স্থপতি সাদিকুল বাশার এবং সাবরিনা আফতাব পূর্বকোণকে জানান, মদিনা শরীফের মসজিদে নববীর আদলে নতুন নকশা করা হয়েছে।

দুই স্থপতি আরও জানান- নতুন নকশায় মোঘল ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। কংক্রিটের স্থাপনার সঙ্গে সবুজের সমারোহ রাখা হয়েছে। সড়কে চলা গাড়ির শব্দ যেন মসজিদের ইবাদত বন্দেগিতে ব্যাঘাত না ঘটায় সেই চেষ্টা করা হয়েছে। মূল স্থাপনার সামনে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারার পাশাপাশি মসজিদে নববীর মতো খোলা জায়গা রাখা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

মক্কায় আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন বাংলাদেশের বশির

মক্কার মসজিদুল হারামে শুরু হয়েছে ৪৫তম কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ থেকে প্রতিযোগিতায় ...