
বর্তমানে অনলাইনে কাপড় থেকে শুরু করে নিত্যদিনের বাজার সবকিছুই কেনা যাচ্ছে। তেমনি ঘরে বসেই শখের মোবাইল ফোনটিও কিনতে পারা যাচ্ছে। তবে, অনলাইনে মোবাইল কেনার জন্য কিছু বিষয় অবশ্যই জানা উচিত। অনলাইনে মোবাইল কেনার পূর্বে করণীয় যেসব বিষয় আছে সেগুলো যদি আপনার জানা না থাকে, তাহলে আপনার অর্ডার করা ফোনটি নাও পেতে পারেন অথবা ভুল মডেলের ফোন পেতে পারেন। এছাড়া, প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি তো থাকছেই।
অনলাইনে স্মার্টফোন কেনাকাটা করার পূর্বে যেসব বিষয় জানতে হবে সেগুলো এখানে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন, জেনে নেয়া যাক।
কোথায় থেকে কিনবেন?
অনলাইনে মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম রয়েছে। আপনি যদি অনলাইনে একটি স্মার্টফোন কিনতে চান, তাহলে অবশ্যই বাজার যাচাই করার মাধ্যমে কোন ই-কমার্স প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সহিত কিনতে পারবেন তা যাচাই করতে হবে। এজন্য, পূর্বে অনলাইন থেকে স্মার্টফোন কেনাকাটা করেছে এমন মানুষদের থেকে রিভিউ নিতে পারেন।
যেসব ই-কমার্স প্লাটফর্ম বিশ্বস্ত, অনলাইনে সেগুলোর রিভিউ দেখতে পারবেন। রিভিউ দেখার মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম সিলেক্ট করে এরপর বাকি ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
দাম ও ফিচার তুলনা
কোন ফোনটি কিনবেন তা ঠিক করার পর বিভিন্ন মোবাইল স্পেসিফিকেশন ওয়েবসাইট MobileDokan থেকে স্মার্টফোনের দাম চেক করে নিন। শুধু দাম দেখলেই হবে না, ফোনটির ফিচার, স্পেসিফিকেশন (যেমন RAM, স্টোরেজ, প্রসেসর, ক্যামেরা, ব্যাটারি ইত্যাদি আপনার মনমতো আছে কিনা দেখে নিন।
মোবাইল স্পেসিফিকেশন ওয়েবসাইট ছাড়াও বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক গ্রুপে ফোনটির রিভিউ এবং স্পেসিফিকেশন দেখতে পারবেন। দামের সাথে ফিচারের সামঞ্জস্যতা আছে কিনা যাচাই করুন।
অরিজিনাল নাকি কপি
অনলাইনে কেনাকাটার সময় সবচেয়ে বড় ভয় থাকে ফোনটি আসল হবে কিনা। বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম থেকে কিনলে এই ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশনে ‘অরিজিনাল’, ‘গ্লোবাল ভার্সন’, ‘অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি’ ইত্যাদি লেখা আছে কিনা দেখুন। যদি দাম অস্বাভাবিক কম মনে হয়, তবে সতর্ক হতে হবে এবং বিস্তর যাচাই করতে হবে।
কারণ, স্পেসিফিকেশন ওয়েবসাইটগুলোতে অফিসিয়াল দাম দেয়া থাকে। এসব দামের তুলনায় যদি ই-কমার্স সাইটে তুলনামূলক সন্দেহজনক দাম দেয়া থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটি যাচাই করতে হবে। কারণ, অনেক সময় এভাবে পেমেন্ট নেয়ার পর ফোন ডেলিভারি না দিয়ে স্ক্যাম করা হয়।
ওয়ারেন্টি ও রিটার্ন পলিসি
মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই ওয়ারেন্টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। মোবাইল ফোনটির ব্র্যান্ড ওয়ারেন্টি আছে কিনা, থাকলে কত দিনের জন্য এবং ওয়ারেন্টি ক্লেইম করার জন্য কাস্টমার কেয়ার আছে কিনা যাচাই করে নিন।
এছাড়াও, যদি ফোনটি আপনার মনমতো না হয় বা কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে সেটি ফেরত দেওয়া বা পরিবর্তন করার সুযোগ আছে কিনা এবং সেটার নিয়মাবলী কী, তা রিটার্ন পলিসি অংশে মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিন। নয়তো, ফোন কেনার পর যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে ফোনটি রিটার্ন করতে পারবেন না।
পেমেন্ট সিস্টেম
অনলাইন পেমেন্ট করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে ওয়েবসাইটটির পেমেন্ট গেটওয়ে সুরক্ষিত। ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস বারে ‘https’ এবং একটি তালা চিহ্ন (padlock icon) আছে কিনা, তা দেখে নিন। যদি সম্ভব হয়, ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD) অপশন ব্যবহার করে মোবাইলটি ডেলিভারি নিন। তবে সব ক্ষেত্রে COD অপশন নাও থাকতে পারে। তাই, অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে আপনার কার্ড বা অ্যাকাউন্টের তথ্য যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ডেলিভারি পেলে যা করবেন
ফোন হাতে পাওয়ার পর তাড়াহুড়ো করবেন না। প্যাকেজটি ভালো করে দেখুন, সেটি টেম্পার (খোঁলা বা নষ্ট) করা হয়েছে কিনা। যদি প্যাকেজিংয়ে কোনো সমস্যা থাকে, ডেলিভারি ম্যানের সামনেই সেটি খুলে প্রডাক্টের অবস্থা দেখে নিন। ফোন ঠিক আছে কিনা, আপনি যে মডেল অর্ডার করেছেন সেটাই পেয়েছেন কিনা, দেখে তারপর ডেলিভারি বুঝে নিন। কোনো সমস্যা থাকলে তাৎক্ষণিক কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনে রিটার্ন পলিসি অনুসরণ করে ফোনটি রিটার্ন করুন।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলো মেনে চললে অনলাইনে মোবাইল কিনতে পারবেন নিশ্চিন্তে এবং সুরক্ষিতভাবে। এসব বিষয় অজানা থাকলে ফোন ক্রয় করার সময় প্রতারণার শিকার হতে পারেন
পাঠকের মতামত