পঞ্চগড়ে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া এক মাস বয়সী কন্যাশিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের কামাতপাড়া মহল্লার একটি গলি থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটি। জানা গেছে, শিশুটির মা রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। তবে শিশুটির মাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদিকে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ শিশুটিকে কোলে করে রাখেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন বিডি২৪লাইভকে বলেন, পরিতাক্ত অবস্থায় একটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে এমন খবর পেয়ে আমি হাসপাতালেয যায়। বাচ্চাটিকে কিছুক্ষণ কোলে রাখি। সেই সময় মনে হয়েছিল এত সুন্দর একটি শিশুকে কি করে তার মা ফেলে গেলো। শিশুটির মাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। যদি শিশুটির মা বা পরিবারের কেউ নিতে চায় আমরা তাদের হেফাজতে দিয়ে দিবো।
তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের বিশেষ শিশু পরিচর্চাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। শিশুটি শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পঞ্চগড় উপজেলা সদরের অমরখানার ভিতরগড় এলাকার গৃহবধূ রিমু আক্তার দুই বছর আগে পরকীয়ার জেরে দিনাজপুরের পার্বতীপুর এলাকার এক ট্রাকচালকের হাত ধরে উধাও হন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ তার নানাবাড়ি জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকায় এসে পেয়ারা বেগম নামে আরেক গৃহবধূকে তার এক মাস বয়সী কন্যাশিশুটিকে দত্তক নিতে বলেন।
কিন্তু পেয়ারা বেগম অস্বীকৃতি জানালে পেয়ারা বেগমের প্রতিবেশী অশোক চন্দ্র মদকের বাড়ির একটি গলিতে শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যান মা রিমু আক্তার। রাতে পরিত্যক্ত অবস্থায় শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন।
রাতেই জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। পরে তারা কামাতপাড়া মহল্লার পেয়ারা বেগমসহ শিশুটির নানাবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শিশুটির মায়ের খোঁজ করেন। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত শিশুটির মায়ের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ। পরিত্যক্ত অবস্থায় শিশু উদ্ধারের খবরে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নিতে ভিড় করেছেন হাসপাতালে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সিরাজউদ্দোলা পলিন বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের বিশেষ শিশু পরিচর্চাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। শিশুটি শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে।